জাতিগত বৈচিত্রের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মানুষকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়?
A
৬ ভাগে
B
৫ ভাগে
C
৪ ভাগে
D
৩ ভাগে
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশ একটি বহুজাতিক ও বহুসাংস্কৃতিক সমাজ, যেখানে বিভিন্ন জাতি ও উপজাতির মানুষ বসবাস করে। সমাজবিজ্ঞান ও নৃতত্ত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে এই জাতিগত বৈচিত্র্য দেশের সংস্কৃতি, ভাষা, জীবনধারা ও ঐতিহ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছে। জাতিগত বিভাজন মূলত বংশগত উৎস, ভাষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক গঠন অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
-
বাঙালি: বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯৮ শতাংশ বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এরা মূলত বাংলা ভাষাভাষী, এবং দেশের সমতলভূমি জুড়ে তাদের বিস্তৃতি। বাঙালিরা বাংলাদেশের প্রধান জাতি ও সাংস্কৃতিক মূলধারা গঠন করে।
-
পাহাড়ি জনগণ (উপজাতি): বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীগুলো এই শ্রেণিতে পড়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, বম, খুমি, মার্দি, কুকি প্রভৃতি। এদের নিজস্ব ভাষা, পোশাক, ধর্মবিশ্বাস ও সামাজিক প্রথা রয়েছে, যা বাঙালি সংস্কৃতি থেকে স্বতন্ত্র।
-
পাড়ী/আদিবাসী জনগোষ্ঠী: দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা সাঁওতাল, ওরাও, খাসিয়া, গারো, হাজং, মণিপুরী, রাজবংশী প্রভৃতি সম্প্রদায় এই শ্রেণিতে পড়ে। এরা মূলত সিলেট, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর ও খাগড়াছড়ি অঞ্চলে বসবাস করে।
-
বাংলাদেশের এই বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠীগুলো সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্ম ও ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে এক অনন্য মিশ্রণ সৃষ্টি করেছে।
-
জাতিগত বৈচিত্র্য দেশের লোকসংস্কৃতি, সংগীত, নৃত্য, খাদ্যাভ্যাস ও সামাজিক সম্পর্কের বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
-
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই জাতিগত বৈচিত্র্য সামাজিক সংহতি ও সাংস্কৃতিক সহাবস্থানের ভিত্তি তৈরি করেছে।
-
নৃতত্ত্বের দৃষ্টিতে, বাংলাদেশের জাতিগত বিন্যাস এশিয়ার প্রাচীন অস্ট্রিক, দ্রাবিড়, মঙ্গোলয়েড ও আর্য বংশোদ্ভূত গোষ্ঠীগুলোর একটি ঐতিহাসিক সংমিশ্রণ প্রতিফলিত করে।

0
Updated: 1 day ago