'প্রজাতন্ত্র' শব্দটি প্রথম কে ব্যবহার করেন?
A
সক্রেটিস
B
প্লেটো
C
এরিস্টটল
D
জন লক
উত্তরের বিবরণ
সক্রেটিস মূলত একজন দার্শনিক ছিলেন, যিনি নৈতিকতা, জ্ঞান ও মানবজীবনের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি রাষ্ট্র বা রাজনীতি নিয়ে সরাসরি কোনো গ্রন্থ লেখেননি এবং “প্রজাতন্ত্র” শব্দটির প্রবর্তনের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁর চিন্তাধারা পরবর্তী দার্শনিকদের, বিশেষত প্লেটোর, রাজনৈতিক দর্শনের ভিত্তি স্থাপন করে।
• প্লেটো প্রথম দার্শনিক যিনি রাষ্ট্র ও সমাজ নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তত্ত্ব প্রদান করেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “The Republic” (Politeia)-এ তিনি ন্যায়পরায়ণ সমাজ, আদর্শ রাষ্ট্র ও দার্শনিক রাজা সম্পর্কে ধারণা দেন। এখানে “Republic” শব্দটি রাষ্ট্রব্যবস্থার এমন এক রূপ নির্দেশ করে যেখানে ন্যায়, জ্ঞান ও নৈতিকতার সমন্বয়ে সমাজ পরিচালিত হয়।
• এরিস্টটল তাঁর গ্রন্থ “Politics”-এ রাষ্ট্র, নাগরিকত্ব, শাসনব্যবস্থা এবং বিভিন্ন সরকারী কাঠামোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন। তবে তিনি “প্রজাতন্ত্র” শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেননি, বরং রাষ্ট্রকে একটি স্বাভাবিক সামাজিক সংগঠন হিসেবে দেখিয়েছেন, যার উদ্দেশ্য মানুষের কল্যাণ সাধন।
• জন লক আধুনিক রাজনৈতিক দর্শনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, যিনি লিবারেল প্রজাতন্ত্র ও সামাজিক চুক্তি তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি ব্যক্তিস্বাধীনতা, আইনের শাসন ও জনগণের সম্মতির ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রের বৈধতা ব্যাখ্যা করেন।
• “প্রজাতন্ত্র” ধারণার ঐতিহাসিক বিকাশে দেখা যায়, এটি ধীরে ধীরে দার্শনিক চিন্তা থেকে বাস্তব রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছে, যার বীজ রোপণ করেন প্লেটো এবং যার পরিণতি ঘটে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায়।

0
Updated: 1 day ago
প্লেটো শিক্ষা ব্যবস্থার উচ্চতর স্তরে পর্যায়-
Created: 1 day ago
A
২
B
৩
C
৪
D
৫
প্লেটো শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখেছেন, যেখানে উচ্চতর শিক্ষার তিনটি পর্যায় ধীরে ধীরে মানবমনের বিকাশ ও বাস্তব জ্ঞানের প্রয়োগ নিশ্চিত করে। তাঁর মতে, শিক্ষার উদ্দেশ্য কেবল জ্ঞানার্জন নয়, বরং একজন মানুষকে যুক্তিবোধসম্পন্ন, নৈতিক ও রাষ্ট্রপরিচালনায় সক্ষম নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।
• প্রথম স্তর (২০-৩০ বছর): এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উচ্চতর জ্ঞানের সূচনা পায়। অধ্যয়নের বিষয় হয় গণিত, জ্যোতিষশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র ও জ্যামিতি—যা মননশীলতা ও বিশ্লেষণক্ষমতা বৃদ্ধি করে। দশ বছর মেয়াদি এই শিক্ষায় তত্ত্বগত জ্ঞানকে গভীরভাবে অনুশীলন করতে হয়। শেষে ৩০ বছর বয়সে নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হয়, যেখানে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা সরকারি নিম্নপদে নিযুক্ত হয় এবং কৃতকার্যরা পরবর্তী স্তরে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পায়।
• দ্বিতীয় স্তর (৩০-৩৫ বছর): এই পর্যায়টি জ্ঞানের উৎকর্ষ অর্জনের ধাপ। শিক্ষার্থীরা এখানে উচ্চতর দর্শন (Higher Philosophy) ও অধিবিদ্যা (Metaphysics) অধ্যয়ন করে। এ সময় তাদের চিন্তা ও যুক্তি আরও পরিপক্ব হয়, তারা সত্য ও অস্তিত্বের গভীর ধারণা অর্জন করে এবং দর্শনের বিমূর্ত ভাবনাকে অনুধাবনে সক্ষম হয়।
• তৃতীয় স্তর (৩৫-৫০ বছর): প্লেটোর মতে, শিক্ষার সমাপ্তি কেবল পাঠ্যজ্ঞানেই সীমাবদ্ধ নয়। ৩৫ বছর বয়সের পর শিক্ষার্থীকে আরও ১৫ বছর ধরে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। এই স্তরে তারা রাষ্ট্র পরিচালনা, সামাজিক কার্যক্রম ও বাস্তব সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রজ্ঞা বিকাশ করে।
• এই তিনটি স্তরের উদ্দেশ্য হলো তত্ত্ব ও বাস্তবের সমন্বয় ঘটিয়ে আদর্শ শাসক বা দার্শনিক-রাজা (Philosopher King) তৈরি করা, যিনি জ্ঞানে, নৈতিকতায় ও অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হবেন।

0
Updated: 1 day ago
প্লেটোর 'সদগুণ' বলতে বুঝিয়েছেন-
Created: 23 hours ago
A
আত্ম প্রত্যয়, প্রেষণা, নিয়ন্ত্রণ ও ন্যায়
B
প্রজ্ঞা, সাহস, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ন্যায়
C
প্রজ্ঞা, প্রেষণা, প্রত্যয় ও ন্যায়
D
নিয়ন্ত্রণ, প্রেষণা, সাহস, ও ন্যায়
প্লেটোর মতে রাষ্ট্র ও ব্যক্তির আদর্শ গঠন “সদগুণ” দ্বারা নির্ধারিত, কারণ সদগুণই রাষ্ট্রের নৈতিকতা ও সুষম বিকাশের মূলভিত্তি। তিনি তার গ্রন্থ “The Republic”-এ রাষ্ট্র ও মানুষের আত্মার মধ্যে একটি তুলনা টেনে দেখিয়েছেন যে, যেমন ব্যক্তির আত্মায় বিভিন্ন গুণের সমন্বয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তেমনি রাষ্ট্রেও বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে সঠিক ভূমিকা ও ভারসাম্য রক্ষা করলেই আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
প্লেটো চারটি মৌলিক সদগুণ (Cardinal Virtues) নির্ধারণ করেছিলেন—প্রজ্ঞা (Wisdom), সাহস (Courage), আত্মনিয়ন্ত্রণ (Temperance) এবং ন্যায় (Justice)।
-
প্রজ্ঞা (Wisdom): রাষ্ট্রে যারা শাসন করবে, তাদের মধ্যে প্রজ্ঞা থাকা আবশ্যক, কারণ তাদের সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্ব সমাজের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে।
-
সাহস (Courage): যারা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা করে, যেমন সৈনিক শ্রেণি, তাদের মধ্যে সাহসের গুণ থাকা জরুরি, যাতে তারা ভয় ও বিপদের মুখেও দৃঢ় থাকে।
-
আত্মনিয়ন্ত্রণ (Temperance): সমাজের সব শ্রেণি ও ব্যক্তি যেন নিজেদের সীমা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখে, সেটিই আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রকাশ।
-
ন্যায় (Justice): প্রত্যেক শ্রেণি ও ব্যক্তি যেন নিজের স্বাভাবিক কাজ করে এবং অন্যের দায়িত্বে হস্তক্ষেপ না করে—এটাই ন্যায়ের মূল সারবস্তু।
প্লেটোর মতে, এই চারটি গুণ একত্রে রাষ্ট্র ও ব্যক্তিকে নৈতিক, ভারসাম্যপূর্ণ ও আদর্শ অবস্থায় পৌঁছে দেয়।
-
ক) আত্ম প্রত্যয়, প্রেষণা, নিয়ন্ত্রণ ও ন্যায় — ভুল; কারণ এখানে প্রজ্ঞা ও সাহস অনুপস্থিত।
-
খ) প্রজ্ঞা, সাহস, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ন্যায় — সঠিক; কারণ এটি প্লেটোর মূল চার সদগুণের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিল রয়েছে।
-
গ) প্রজ্ঞা, প্রেষণা, প্রত্যয় ও ন্যায় — ভুল; কারণ সাহস ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অনুপস্থিত।
-
ঘ) নিয়ন্ত্রণ, প্রেষণা, সাহস ও ন্যায় — ভুল; কারণ এখানে প্রজ্ঞা বাদ গেছে।
উ. খ) প্রজ্ঞা, সাহস, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ন্যায়
ব্যাখ্যা: এটি প্লেটোর নির্ধারিত চারটি মূল সদগুণ, যা রাষ্ট্র ও ব্যক্তির আদর্শ গঠনের ভিত্তি।

0
Updated: 23 hours ago
প্লেটোর মতে প্রাথমিক শিক্ষার বয়স কত?
Created: 1 day ago
A
শৈশব থেকে ১৬ বৎসর
B
শৈশব থেকে ১৮ বৎসর
C
শৈশব থেকে ২০ বৎসর
D
কোনটিই নয়।
প্লেটো তাঁর শিক্ষাব্যবস্থাকে মূলত দু’টি স্তরে ভাগ করেছেন—প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চতর শিক্ষা। তাঁর মতে, প্রথমটি হলো প্রবল অনুভূতির মাধ্যমে চরিত্র গঠনের শিক্ষা এবং দ্বিতীয়টি হলো বিজ্ঞান ও দর্শনের মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশের শিক্ষা। এই শিক্ষা বিভাজন মূলত বয়সের ভিত্তিতে গঠিত, যেখানে প্রতিটি স্তরে নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী পৃথক পাঠদান ব্যবস্থা নির্ধারিত ছিল।
-
প্রাথমিক শিক্ষার বয়সসীমা: ৬ বছর থেকে ২০ বছর পর্যন্ত।
-
প্রাথমিক শিক্ষাকে তিনি দুটি ধাপে বিভক্ত করেছেন—
১। প্রথম স্তর (৬–১৮ বছর):
-
এই স্তরে জ্ঞান প্রদানের পরিবর্তে শিশুদের মানসিক ও নৈতিক বিকাশে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
-
তাদের মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস, নৈতিকতা, উত্তম আচরণ ও সৎ চরিত্র গঠনের শিক্ষা প্রদান করা হয়।
-
এই সময়েই শিশুদের ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে শেখানো হয় এবং তারা নৈতিক মূল্যবোধ অর্জন করে।
-
প্লেটো মনে করতেন, শিশুরা যেন আবেগ ও সৌন্দর্যের প্রতি অনুরাগী হয়, এজন্য এই স্তরে শিক্ষাদান করা হতো—
-
সঙ্গীত (Music)
-
সাহিত্য (Literature)
-
প্রাথমিক গণিত (Primary Mathematics)
-
-
এসব বিষয় শিশুর মানসিক বিকাশ, নান্দনিক রুচি এবং সামাজিক চেতনা গঠনে সহায়ক বলে বিবেচিত হয়।
২। দ্বিতীয় স্তর (১৮–২০ বছর):
-
এই স্তরটি ছিল শরীর চর্চা (Gymnastics) ও সামরিক শিক্ষা (Military Skill)-এর জন্য নির্ধারিত।
-
এ দুই বছরে অন্য কোনো বিষয় অধ্যয়নের সুযোগ থাকত না।
-
এর উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃঙ্খলাবোধ, আত্মসংযম, ধৈর্য, পরিশ্রম ও সাহসিকতা গড়ে তোলা।
-
এই শিক্ষা তাদেরকে দক্ষ সৈনিক ও আত্মনিয়ন্ত্রিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে।
-
প্রাথমিক শিক্ষার শেষে, যারা প্রতিভা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারবে, তাদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হবে।
-
এই নির্বাচন হবে একটি গণপরীক্ষার (Public Examination) মাধ্যমে, যার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের বাছাই করা হবে।
-
নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাই পরবর্তী ধাপে বিজ্ঞান ও দর্শননির্ভর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের উপযুক্ত বিবেচিত হবে।
-
প্লেটোর এই শিক্ষাব্যবস্থা মানবজীবনের প্রতিটি স্তরে নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিক বিকাশের সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।
-
তাঁর মতে, আদর্শ রাষ্ট্র গঠনের জন্য এমন নাগরিক প্রয়োজন যারা সুস্থ দেহ, উন্নত মনের অধিকারী এবং নৈতিকভাবে দৃঢ়—আর তাঁর শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিটি ধাপ সেই উদ্দেশ্য পূরণের জন্যই পরিকল্পিত।

0
Updated: 1 day ago