'সার্বভৌমত্ব অবিভাজ্য' কার মতবাদ?
A
বোদ্যা
B
হবস
C
মার্কস
D
অস্টিন
উত্তরের বিবরণ
জঁ বোদ্যা ছিলেন ১৬ শতকের একজন প্রখ্যাত ফরাসি রাজনৈতিক চিন্তাবিদ, যিনি সার্বভৌমত্বের তত্ত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন, সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা, যা সম্পূর্ণ, অবিভাজ্য এবং চিরস্থায়ী। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো ক্ষমতার দ্বারা এটি বিভক্ত করা যায় না। তাঁর মতে, রাষ্ট্রের ঐক্য ও কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সার্বভৌমত্ব একক ও অখণ্ড থাকতে হবে।
• থমাস হবস সার্বভৌমত্বকে মূলত শক্তি বা ক্ষমতার ধারণা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “লেভিয়াথান”-এ তিনি বলেছেন যে রাষ্ট্রের ক্ষমতা একক কর্তৃপক্ষের হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত। তবে তিনি বোদ্যার মতো স্পষ্টভাবে “অবিভাজ্য” শব্দটি ব্যবহার করেননি।
• কার্ল মার্কস রাষ্ট্রকে শ্রেণীসংগ্রামের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে রাষ্ট্র হলো শাসক শ্রেণির হাতিয়ার, তাই সার্বভৌমত্বের অবিভাজ্যতার ধারণা তাঁর চিন্তায় প্রযোজ্য নয়।
• জন অস্টিন সার্বভৌমত্বকে আইনের দর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি আইন প্রণেতার কর্তৃত্ব ও আদেশের বাধ্যতামূলক ক্ষমতা-র উপর জোর দিয়েছেন।
• বোদ্যা সার্বভৌমত্বকে শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও আইনি শৃঙ্খলার মূলভিত্তি হিসেবে দেখেছিলেন, যা পরবর্তী অনেক রাজনৈতিক চিন্তাবিদের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

0
Updated: 1 day ago
জনমত বলতে বোঝায়-
Created: 7 hours ago
A
জনগনের মত
B
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মত
C
জনগনের কল্যাণকামী মত
D
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মত
জনমত হলো এমন এক সামাজিক ও রাজনৈতিক ধারণা, যা মানুষের সম্মিলিত চিন্তা, অনুভূতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটায়। এটি কোনো একটি জাতীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রশ্নে সাধারণ মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠ বা প্রভাবশালী মতামতকে বোঝায়, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: জনমত একটি প্রাচীন ধারণা; গ্রিক ও রোমান যুগের আইন ব্যবস্থায় এবং মধ্যযুগেও জনমতের প্রভাব বিদ্যমান ছিল।
-
আক্ষরিক অর্থ: জনগণের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত জনগণের মতামতই জনমত হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
সাধারণ অর্থ: এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অভিমত বা মতপ্রকাশ, যা সমাজে একটি নির্দিষ্ট দিক নির্দেশ করে।
-
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ: পৌরনীতি বা রাজনৈতিক চিন্তায় শুধু সেই মতামতকেই জনমত বলা হয়, যা প্রভাবশালী, যুক্তিসঙ্গত, সুস্পষ্ট এবং সমাজকল্যাণমূলক।
-
গঠনের প্রক্রিয়া: যখন কোনো জাতীয় ইস্যুতে বিভিন্ন শ্রেণি ও স্বার্থগোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করে, তখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনো একটি মত অন্যগুলোর তুলনায় অধিক প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, সেটিই জনমত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
প্রধান বৈশিষ্ট্য: জনমত যুক্তিনির্ভর, স্পষ্ট, কল্যাণধর্মী ও বলিষ্ঠ; এটি সাধারণত সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।

0
Updated: 7 hours ago
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর উদাহরণ হলো i) প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি; ii) সুশীল সমাজ; iii) শ্রমিক সংঘ:- কোনটি সঠিক?
Created: 7 hours ago
A
i
B
i ও ii
C
ii ও iii
D
i, ii ও iii
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী (Pressure Groups) হলো এমন গোষ্ঠী যারা সরকারের নীতি, আইন বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, কিন্তু নিজেরা সরাসরি রাজনৈতিক ক্ষমতা গ্রহণ করে না। এরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ তারা জনগণের বিভিন্ন শ্রেণি ও স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে সরকারের নীতি নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়।
• কার্যপদ্ধতি: এ গোষ্ঠীগুলি সাধারণত আন্দোলন, গণস্বাক্ষর, লবিং, গণমাধ্যম প্রচারণা, মিছিল বা আলোচনার মাধ্যমে সরকার ও প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
• রাজনৈতিক ভূমিকা: তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেও রাজনৈতিক দল বা সরকারের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে নীতি প্রণয়নের পর্যায়ে।
• গণতান্ত্রিক গুরুত্ব: গণতন্ত্রে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী নাগরিকদের মতামত প্রকাশের একটি কার্যকর মাধ্যম। তারা জনমতকে সংগঠিত করে এবং সরকারের নীতি জনগণের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ভূমিকা রাখে।
• উদাহরণ:
-
প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি: শিক্ষা নীতি ও শিক্ষক কল্যাণ সংক্রান্ত দাবিতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।
-
সুশীল সমাজ: মানবাধিকার, দুর্নীতি দমন ও নীতি সংস্কারে সামাজিক সচেতনতা ও জনমত সৃষ্টি করে সরকারের ওপর প্রভাব ফেলে।
-
শ্রমিক সংঘ: শ্রম নীতি, বেতন, কর্মপরিবেশ ও শ্রম অধিকারের প্রশ্নে সরকার ও নিয়োগকর্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
• প্রভাব ও তাৎপর্য: চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সরকারকে জবাবদিহিতার মধ্যে রাখে, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করে এবং নীতি নির্ধারণে জনগণের স্বার্থকে প্রতিফলিত করতে সাহায্য করে।

0
Updated: 7 hours ago
অ্যালমন্ডের মতে ইনপুট এবং আউটপুটের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের উপায় কী?
Created: 7 hours ago
A
বৈধ দৈহিক বল প্রয়োগ ও আদেশ প্রদান
B
বৈধ বিধি প্রনয়ন ও বল প্রয়োগের হুমকী
C
বৈধ দৈহিক বল প্রয়োগ ও বল প্রয়োগের হুমকী
D
বৈধ নির্দেশ প্রদান ও বল প্রয়োগের হুমকী
অ্যালমন্ডের মতে, রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া যেখানে সমাজের জনগণ তাদের বিভিন্ন দাবি, প্রত্যাশা ও সমর্থনকে রাষ্ট্রের কাছে প্রেরণ করে, আর রাষ্ট্র সেই তথ্যের ভিত্তিতে নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে সমাজে বাস্তবায়ন করে। এই প্রক্রিয়াটি দুইটি প্রধান অংশে বিভক্ত—ইনপুট (Input) ও আউটপুট (Output)—যাদের পারস্পরিক সম্পর্ক রাষ্ট্রের কার্যকারিতা নির্ধারণ করে।
-
ইনপুট (Input): জনগণের দাবি, সমর্থন, জনমত, চাপ সৃষ্টির কার্যক্রম এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রত্যাশা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। এগুলিই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার মূল উপাদান।
-
আউটপুট (Output): রাষ্ট্র জনগণের ইনপুট অনুযায়ী নীতি, আইন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে এবং তা সমাজে কার্যকর করে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র জনগণের চাহিদার প্রতিক্রিয়া প্রদান করে।
-
ইনপুট ও আউটপুটের সম্পর্ক: অ্যালমন্ড বলেন, রাষ্ট্রের উচিত এই দুইয়ের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক রক্ষা করা। এজন্য রাষ্ট্রের থাকতে হবে—
-
বৈধ কর্তৃত্ব যা জনগণের স্বীকৃত ও ন্যায্য।
-
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা যাতে নীতিমালা কার্যকর হয়।
-
বৈধ বল প্রয়োগের সামর্থ্য, প্রয়োজনে শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োগ করা যায়।
-
আদেশ প্রদানের সক্ষমতা, যা প্রশাসনিক কাঠামোকে কার্যকর রাখে।
-
-
বাস্তব প্রয়োগ: আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়; রাষ্ট্রকে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ন্যায় ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হয়। প্রয়োজনে বৈধ বল প্রয়োগ করে আইন কার্যকর রাখতে হয়।
-
উদাহরণ: যদি জনগণ নিরাপত্তা চায় (Input), রাষ্ট্র তখন আইন প্রণয়ন করে ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে (Output)। যখন এই আইন বাস্তবায়িত হয় এবং জনগণ তার ফল ভোগ করে, তখন ইনপুট ও আউটপুটের মধ্যে কার্যকর যোগসূত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে।

0
Updated: 7 hours ago