‘রক্তকরবী' কোন নাটকের বিষয়বস্তু?
A
বিশুর খামখেয়ালী
B
নন্দিনীর সৌন্দর্য
C
ধর্মীয় অচলায়তন
D
পুঁজিবাদ ও কৃষিসভ্যতার দ্বন্দ
উত্তরের বিবরণ
‘রক্তকরবী’ নাটকটি মূলত যান্ত্রিক শ্রমব্যবস্থা এবং কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে সংঘাতের প্রতিফলন। এতে পুঁজিবাদী ধনতান্ত্রিক সমাজের অত্যাচার, প্রেম ও মানবিকতার বিজয়, এবং আকর্ষণশীল ও কর্ষণশীল শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব ফুটে ওঠে। নাটকটি প্রেম ও জীবনের জয়কে মানুষের মুক্তি ও সাম্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরে।
• সংক্ষিপ্ত কাহিনী:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রক্তকরবী’-এ যক্ষপুরীর রাজা অর্থলোভী এবং প্রজাশোষক। তিনি সোনার খনির শ্রমিকদের কেবল উৎপাদনের যন্ত্র হিসেবে দেখেন, মানুষের প্রেম, সৌন্দর্য ও মানবিকতা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। নন্দিনী প্রেম ও জীবনের প্রতীক হিসেবে এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে আবির্ভূত হন এবং সকলকে মুক্ত জীবন যাপনের আহ্বান জানান। রাজা নন্দিনীকে জোরপূর্বক নিজের করতে চায়, কিন্তু প্রেম ও সৌন্দর্যকে জয় করা যায় না। রঞ্জন, নন্দিনীর প্রেমাস্পদ, যান্ত্রিকতার শিকার হয়ে মারা যায়। নাটকটি শেষ পর্যন্ত জীবনের প্রাণশক্তি ও মানবিকতার জয়কে প্রমাণ করে।
• গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
-
নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাংকেতিক নাটক।
-
রচিত হয়েছে বাংলা ১৩৩০ সনের শিলং-এর শৈলবাসে।
-
প্রাথমিকভাবে এর নাম ছিল ‘যক্ষপুরী’।
-
১৩৩০ সনের আশ্বিন মাসে প্রবাসীতে প্রকাশের সময় নামকরণ হয় ‘রক্তকরবী’।
-
নাটকে ধনের ওপর ধান্যের, শক্তির ওপর প্রেমের ও মৃত্যুর ওপর জীবনের জয়গান গাওয়া হয়েছে।
• উল্লেখযোগ্য চরিত্র:
-
নন্দিনী – নিপীড়িত মানুষের মাঝে আনন্দের দূত।
-
রঞ্জন – বিদ্রোহ ও প্রেমের প্রতীক; মানুষের প্রাণশক্তি বহনকারী চরিত্র।

0
Updated: 1 day ago
নিচের কোন চরিত্র দুটি রবীন্দ্রনাথের 'ঘরে বাইরে' উপন্যাসের?
Created: 1 month ago
A
বিহারী-বিনোদিনী
B
নিখিলেস-বিমলা
C
মধুসূদন-কুমুদিনী
D
অমিত-লাবণ্য
‘ঘরে-বাইরে’ উপন্যাস
-
রচনাবর্ষ ও প্রকাশনা: ‘ঘরে-বাইরে’ (১৯১৬) রবীন্দ্রনাথের প্রথম চলিত ভাষার উপন্যাস। এটি ১৯১৫ সালে সবুজপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল।
-
প্রেক্ষাপট: ব্রিটিশ ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই উপন্যাসের মূল প্রেক্ষাপট।
-
প্রভাব ও মিল: পাশ্চাত্য ঔপন্যাসিক স্টিভেনসনের প্রিন্স অট উপন্যাসের ভাব ও ধারার সঙ্গে এর কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
-
প্রধান চরিত্র: নিখিলেশ, বিমলা ও সন্দীপ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
সাধারণ পরিচয়: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক।
-
নোবেল পুরস্কার: ১৯১৩ সালে তিনি সাহিত্য ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার পান; এশিয়ার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই গৌরব অর্জন করেন।
-
জন্ম ও পরিবার: ১৮৬১ সালের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিতামহ: প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।
-
পটভূমি ও প্রভাব: পরিবারের পূর্বপুরুষরা পূর্ববঙ্গ থেকে কলকাতায় ব্যবসায়িক কারণে এসেছিলেন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার বাঙালির নবজাগরণ, ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল। রামমোহন রায়ের আদর্শ দেবেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
-
প্রধান স্থল: তিনি বাংলাদেশের শাহজাদপুর, পতিসর, কালিগ্রাম ও শিলাইদহে সময় কাটিয়েছেন।
-
মৃত্যু: ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮) জোড়াসাঁকোর বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
কিছু বিখ্যাত উপন্যাস
-
ঘরে-বাইরে, চোখের বালি, শেষের কবিতা, যোগাযোগ, নৌকাডুবি, দুই বোন, মালঞ্চ, গোরা, রাজর্ষি, চার অধ্যায় ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
”নয়নের সম্মুখে তুমি নাই/নয়নের মাঝখানে নিয়েছো যে ঠাই” উদ্ধৃতিটি ‘বলাকা’ কাব্যের কোন কবিতা থেকে সংগৃহিত?
Created: 4 hours ago
A
তাজমহল
B
বলাকা
C
চঞ্চলা
D
ছবি
“নয়নের সম্মুখে তুমি নাই, নয়নের মাঝখানে নিয়েছো যে ঠাঁই”—এই পংক্তিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বলাকা’ কাব্যের ‘ছবি’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটিতে কবি অনুপস্থিত প্রিয়জনের উপস্থিতিকে হৃদয়ের গভীরে অনুভব করেছেন। যদিও প্রিয়জন চোখের সামনে নেই, তবুও তাঁর স্মৃতি ও ভালোবাসা হৃদয়ের ভেতর স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে। এতে প্রেমের অদৃশ্য উপস্থিতি, আত্মিক সংযোগ ও চিরন্তন বন্ধনের অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে।

0
Updated: 4 hours ago
রবীন্দ্রনাথের কোন গ্রন্থটি নাটক?
Created: 2 months ago
A
চোখের বালি
B
বলাকা
C
ঘরে-বাইরে
D
রক্তকরবী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘রক্তকরবী’ একটি দার্শনিক ও সাংকেতিক নাটক, যা বাংলা ১৩৩০ সনে শিলং-এর শৈলবাসে রচিত হয়েছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে নাটকটির নাম ছিল ‘যক্ষপুরী’।
পরবর্তীতে ১৩৩০ সালের আশ্বিন মাসে এটি যখন ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, তখন এর নতুন নামকরণ হয় ‘রক্তকরবী’।
নাটকটিতে সমাজব্যবস্থায় মানুষের সীমাহীন লোভ কীভাবে জীবন থেকে স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও মানবিক আবেগকে ছেঁটে ফেলে, এবং মানুষকে কেবলমাত্র উৎপাদনের এক যন্ত্রে পরিণত করে—
তার এক গভীর রূপক উপস্থাপিত হয়েছে। সেই যান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে মানুষের প্রাণশক্তি ও মানবিক প্রতিবাদের যে জাগরণ, তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে এই নাটকে।
‘রক্তকরবী’-তে ধনবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রেম, মানবতা ও জীবনের জয়গান গাওয়া হয়েছে। এখানে ‘নন্দিনী’ চরিত্রটি দেখা দেয় নিপীড়িত মানুষের মাঝে এক আনন্দদায়িনী দূতের মতো, আর ‘রঞ্জন’ চরিত্রটি হয়ে ওঠে বিপ্লবের কণ্ঠস্বর। শেষপর্যন্ত জয়ী হয় মানুষের জীবনমুখী শক্তি ও সাহসী আত্মপ্রতিবাদ।
প্রধান চরিত্র:
-
নন্দিনী – আশার প্রতীক, যিনি ভালোবাসা ও জীবনের বার্তা নিয়ে আসেন।
-
রঞ্জন – যিনি প্রতিবাদ ও বিদ্রোহের প্রতীক।
অন্যদিকে:
-
‘চোখের বালি’ এবং ‘ঘরে-বাইরে’ হল রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ উপন্যাসসমূহের মধ্যে অন্যতম।
-
‘বলাকা’ একটি প্রভাবশালী কাব্যগ্রন্থ, যেখানে কবির কাব্যিক উচ্চারণের প্রকাশ ঘটেছে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 2 months ago