বাংলা ভাষায় ধ্বনি পরিবর্তনের মাধ্যমে শব্দের রূপান্তর ঘটে, যা সাধারণত তৎসম শব্দ থেকে তদ্ভব শব্দ গঠনের সময় দেখা যায়। এই পরিবর্তনে স্বরধ্বনি বা ব্যঞ্জনধ্বনির রূপান্তর ঘটে, যা শব্দের উচ্চারণ ও গঠনে প্রভাব ফেলে। নিচে প্রতিটি বিকল্প বিশ্লেষণ করে দেখা যাক—
ক) ক্রন্দন → কাঁদা:
এটি ধ্বনি-পরিবর্তনের মাধ্যমে গঠিত একটি তদ্ভব রূপ। তৎসম শব্দ ‘ক্রন্দন’ (অর্থ: কান্না) থেকে তদ্ভব ক্রিয়াপদ ‘কাঁদা’ (অর্থ: কান্না করা) উৎপন্ন হয়েছে। এখানে ব্যঞ্জনধ্বনি ও স্বরধ্বনির পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
খ) অঞ্চল → আঁচল:
এটিও ধ্বনি-পরিবর্তনের একটি উদাহরণ। তৎসম শব্দ ‘অঞ্চল’ (অর্থ: অঞ্চল বা কাপড়ের প্রান্ত) থেকে তদ্ভব শব্দ ‘আঁচল’ (অর্থ: শাড়ির প্রান্ত) গঠিত হয়েছে। এখানে স্বরধ্বনির বিকৃতি ঘটেছে, যা ধ্বনিগত রূপান্তর নির্দেশ করে।
গ) সংগীত → গীতিকা:
এই রূপটি ধ্বনি পরিবর্তনের মাধ্যমে গঠিত নয়। এখানে শব্দরূপান্তর প্রত্যয়যোগের মাধ্যমে ঘটেছে। ‘গীতিকা’ শব্দটি ‘গীত’ (অর্থ: গান) শব্দের সঙ্গে ‘-ইকা’ প্রত্যয় যোগ করে গঠিত, যা ছোট গান বা সংগীতের এক রূপ বোঝায়। তাই ‘সংগীত’ থেকে ‘গীতিকা’ ধ্বনি পরিবর্তনের ফলে উৎপন্ন হয়নি।
ঘ) দন্ত → দাঁত:
এটি একটি সুস্পষ্ট ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ, যেখানে তৎসম শব্দ ‘দন্ত’ (অর্থ: দাঁত) থেকে তদ্ভব শব্দ ‘দাঁত’ গঠিত হয়েছে। এখানে স্বরবিকৃতি ও উচ্চারণগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
অতএব, প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে ধ্বনি-পরিবর্তনের মাধ্যমে গঠিত নয় — গ) সংগীত → গীতিকা।