বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম নিয়ে রচিত উপন্যাস কোনটি?
A
চৈতালী ঘূর্ণি
B
একটি কালো মেয়ের কথা
C
হাঁসুলি বাঁকের উপকথা
D
কালিন্দী
উত্তরের বিবরণ
‘একটি কালো মেয়ের কথা’ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি গভীর মানবিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্যমণ্ডিত উপন্যাস, যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে মানবতার করুণ চিত্র, নারীর যন্ত্রণা এবং জাতির আত্মত্যাগ একত্রে ফুটে উঠেছে। এটি শুধু একটি কাহিনি নয়, বরং স্বাধীনতার জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের সময়কার বাংলাদেশের মানসিক ও নৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি।
-
‘একটি কালো মেয়ের কথা’ হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম বিষয়ক উপন্যাস, যা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
-
এটি তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বশেষ উপন্যাস, যেখানে তিনি জীবনের অন্তিম পর্যায়ে এসে স্বাধীনতার আদর্শ ও মানবিক মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে এক অসাধারণ সাহিত্যকর্ম সৃষ্টি করেন।
-
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র নাজমা, এক কালো মেয়ে, যিনি সীমান্ত পেরোনোর সময় ‘স্পাই’ সন্দেহে ধরা পড়ে এবং ভারতীয় পুলিশ অফিসার ডেভিড আর্মস্ট্রং-এর সামনে জবানবন্দি দেন।
-
নাজমা পাকিস্তানি সেনাদের এক পাঞ্জাবি সৈন্যের হাতে নির্যাতিতা ও সন্তানহারা নারী, যার কণ্ঠে বাংলাদেশের নারীসমাজের যন্ত্রণা ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ধ্বনিত হয়েছে।
-
নাজমা উপন্যাসে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের প্রতিরূপে রূপায়িত, যেখানে তাঁর নিপীড়ন, দুঃখ ও প্রতিবাদ একাত্তরের রক্তাক্ত ইতিহাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
-
উপন্যাসটির ভাষা সংযত হলেও এতে রয়েছে অতল বেদনা, মানবিকতা ও মুক্তির আকুলতা।
-
লেখক এই রচনায় রাজনীতি, ইতিহাস ও মানবিক অনুভূতির সমন্বয়ে এক বাস্তবধর্মী শিল্পরূপ সৃষ্টি করেছেন।
-
এটি তারাশঙ্করের সাহিত্যজীবনের এক সমাপ্তিমূলক সৃষ্টিকর্ম, যেখানে তাঁর মানবতাবাদী চিন্তা ও সমাজচেতনা পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়েছে।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়:
-
তিনি বিংশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট বাঙালি কথাসাহিত্যিক, যিনি বাস্তববাদ, সমাজচিত্র ও মানবমনের জটিলতা সাহিত্যরূপে প্রকাশে অনন্য।
-
জন্ম: পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে, এক জমিদার পরিবারে।
-
তাঁর সাহিত্যকর্মে গ্রামীণ সমাজ, দরিদ্র মানুষের জীবনসংগ্রাম ও মানবিক সম্পর্কের টানাপোড়েন গভীরভাবে ফুটে ওঠে।
প্রধান উপন্যাসসমূহ:
-
চৈতালী ঘূর্ণি
-
ধাত্রীদেবতা
-
কালিন্দী
-
গণদেবতা
-
পঞ্চগ্রাম
-
কবি
-
হাঁসুলি বাঁকের উপকথা
-
একটি কালো মেয়ের কথা
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখনীতে মানবিক বোধ, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও জাতীয় চেতনা একসঙ্গে মিশে আছে, আর ‘একটি কালো মেয়ের কথা’ তাঁর সেই জীবনদর্শনের সর্বোচ্চ প্রকাশ।

0
Updated: 16 hours ago
'আনোয়ারা' উপন্যাসের রচয়িতার নাম-
Created: 3 weeks ago
A
সৈয়দ মুজতবা আলী
B
কাজী আবদুল ওদুদ
C
নজিবর রহমান
D
রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন
'আনোয়ারা' হলো মোহাম্মদ নজিবর রহমানের রচিত একটি কালজয়ী সামাজিক উপন্যাস যা বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এটি তার প্রথম ও সবচেয়ে সার্থক উপন্যাস হিসেবে পরিচিত এবং উপন্যাসে ধর্ম ও সত্যের জয়, অধর্মের পরাজয় এবং আনোয়ারার স্বামীনিষ্ঠার বিষয় প্রধানভাবে ফুটে উঠেছে।
-
প্রকাশের সাল ও স্থান: ১৯১৪ সালের ১৫ জুলাই (১৩২১ বঙ্গাব্দে) কলকাতা থেকে প্রথম প্রকাশিত।
-
প্রতিপাদ্য: ধর্ম ও সত্যের জয়, অধর্মের পরাজয়, আনোয়ারার স্বামীনিষ্ঠা।
-
মূল চরিত্র: আনোয়ারা, নুরুল এসলাম, খাদেম, আজিমুল্লাহ, গোলাপজান।
-
লেখকের অন্যান্য রচনা:
-
চাঁদতারা বা হাসান গঙ্গা বাহমনি (১৯১৭)
-
পরিণাম (১৯১৮)
-
গরীবের মেয়ে (১৯২৩)
-
দুনিয়া আর চাই না (১৯২৪)
-

0
Updated: 3 weeks ago
'বহিপীর' সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত একটি-
Created: 2 weeks ago
A
রূপক নাটক
B
ঐতিহাসিক নাটক
C
সামাজিক নাটক
D
মনস্তাত্ত্বিক নাটক
‘বহিপীর’ নাটকটি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত একটি সামাজিক নাটক এবং আধুনিক বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ রচনা। এটি ১৯৫৫ সালে রচিত এবং ১৯৬৫ সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। নাটকটি বহিপীরের সর্বগ্রাসী স্বার্থ এবং নতুন দিনের প্রতীক হিসেবে এক বালিকার বিদ্রোহের কাহিনীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
-
নাটকের নামকরণ মূল চরিত্র বহিপীর এর নামে, যিনি ধর্মকে ভণ্ডভাবে নিজের স্বার্থসিদ্ধিতে ব্যবহার করেন।
-
উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ:
-
বহিপীর
-
তাহেরা
-
হাতেম
-
আমেনা
-
হাশেম
-
উৎস:

0
Updated: 2 weeks ago
কোনটি ঠিক?
Created: 2 months ago
A
গোরা (নাট্যগ্রন্থ)
B
বিদ্রোহী (কাব্যগ্রন্থ)
C
পথের দাবী (উপন্যাস)
D
কাত্তরের দিনগুলি (উপন্যাস)
‘পথের দাবী’ উপন্যাস
‘পথের দাবী’ রচনা করেছেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত একটি রাজনৈতিক ধারার উপন্যাস।
এই গ্রন্থটি মূলত ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লব এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমিতে রচিত। কাহিনীর প্রধান চরিত্র সব্যসাচী, যিনি একজন গুপ্ত বিপ্লবী নেতার ভুমিকায় অভিনয় করেন। অনেকের মতে, সব্যসাচীর চরিত্রে বিরাজমান রূপটি ছিল বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর আদলে নির্মিত। উপন্যাসের কেন্দ্রে ব্রিটিশ বিরোধী বিক্ষোভ এবং দেশপ্রেমের স্ফূরণ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
গ্রন্থটি প্রকাশের পরেই ইংরেজ শাসন কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়ে যায়। যদিও নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে ‘পথের দাবী’ সাহিত্যিক উৎকৃষ্টতার মানদণ্ডে বিতর্কের সৃষ্টি করলেও, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটি স্বাধিকার আন্দোলনে অনুপ্রেরণার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
উপন্যাসের শেষের অংশে রয়েছে একটি গভীর বক্তব্য, “আমি একজন বিপ্লবী, ভারতের স্বাধীনতাই আমার একমাত্র লক্ষ্য, আমার একমাত্র সাধনা।” এ কারণে এই রচনা ভারতীয় রাজনৈতিক ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্ব ধারণ করে।
‘পথের দাবী’ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ‘বঙ্গবাণী’ পত্রিকার ১৩২৯ সালের ফাল্গুন সংখ্যায় ধারাবাহিক রূপে।
অন্য প্রসঙ্গে
-
জাহানারা ইমাম রচিত ‘একাত্তরের দিনগুলি’ একটি স্মৃতিকথামূলক গ্রন্থ, যা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঘটনা ও অভিজ্ঞতাগুলোকে দিনপঞ্জির আকারে উপস্থাপন করে।
-
কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ প্রথমবার ২২শে পৌষ ১৩২৮ (৬ জানুয়ারি ১৯২২) ‘সাপ্তাহিক বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা উপন্যাস ‘গোরা’ (১৯১০) তার নায়ক গোরা সম্পর্কে, যিনি সিপাহী বিদ্রোহের সময় নিহত এক আইরিশ দম্পতির সন্তান ছিলেন।
তথ্যসূত্র: ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 months ago