মুনীর চৌধুরী রচিত "কবর" কোন ধরনের রচনা?
A
নাটক
B
প্রবন্ধ
C
উপন্যাস
D
কবিতা
উত্তরের বিবরণ
‘কবর’ হলো অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী রচিত একটি ঐতিহাসিক ও প্রতীকধর্মী নাটক, যা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত। এটি কেবল বাংলা নাটকের ইতিহাসেই নয়, বরং বাংলাদেশের প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত।
-
‘কবর’ নাটকটি ১৯৫৩ সালে রচিত হয়, যখন মুনীর চৌধুরী রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে জেলে অবস্থান করছিলেন।
-
বামপন্থী চিন্তাবিদ রণেশ দাশগুপ্তের অনুরোধে, ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপন উপলক্ষে এই নাটকটি লেখা হয়।
-
নাটকটি প্রথম অভিনীত হয় ১৯৫৩ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে, যেখানে বন্দিরাই অভিনেতা ছিলেন।
-
১৯৬৬ সালে নাটকটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
-
এটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম প্রতিবাদী রাজনৈতিক নাটক, যা ভাষা আন্দোলনের আত্মত্যাগ, শোক ও পুনর্জাগরণের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
নাটকের প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য:
-
পটভূমি: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, যা বাঙালির ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সংগ্রামকে প্রতিফলিত করে।
-
নাটকটির মূল প্রতীক হলো “কবর”—যা মৃত্যুর মধ্য দিয়েই নতুন জীবনের, নতুন চেতনার জন্মের ইঙ্গিত দেয়।
-
এতে বাঙালি জাতির সংগ্রাম, আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতা চেতনার নবজাগরণ ফুটে উঠেছে।
-
নাটকটি একদিকে রাজনৈতিক প্রতিবাদের ভাষা, অন্যদিকে আত্মত্যাগের মহিমার কাব্যময় উপস্থাপন।
মুনীর চৌধুরী (১৯২৫–১৯৭১):
-
জন্ম: ২৭ নভেম্বর ১৯২৫, মানিকগঞ্জ শহরে।
-
ছিলেন শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী।
-
ছাত্রজীবন থেকেই বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘ, কমিউনিস্ট পার্টি এবং ভাষা আন্দোলন-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।
-
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ঠিক আগে, তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসরদের হাতে অপহৃত ও নিহত হন, এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
উল্লেখযোগ্য নাটকসমূহ:
-
কবর
-
রক্তাক্ত প্রান্তর
-
চিঠি
-
দণ্ডকারণ্য
-
পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য
-
কেউ কিছু বলতে পারে না
-
রূপার কৌটা
-
মুখরা রমণী বশীকরণ
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
মীর মানস
-
তুলনামূলক সমালোচনা
-
বাংলা গদ্যরীতি
‘কবর’ শুধু একটি নাটক নয়—এটি ভাষা আন্দোলনের চেতনা, প্রতিবাদ ও আত্মত্যাগের কাব্যিক প্রতীক, যা দেখায় কীভাবে মৃত্যু থেকেও নতুন জীবন ও জাতিসত্তার পুনর্জন্ম সম্ভব।

0
Updated: 1 day ago
’'জমিদার দর্পন" নাটকে ট্র্যাজেডির গভীরতা ফুটে উঠেনি কারণ-
Created: 3 hours ago
A
কাহিনী একমুখি ও সংলাপ রিপোর্টধর্মী
B
চরিত্রের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব অনুপস্থিত
C
নাট্যকারের শৈল্পিক নিরাশক্তির অভাব
D
উপরের তিনটিই সত্যি
মুনীর চৌধুরির মতে, এই দর্পণে একটি বিশেষ প্রকৃতির বর্বরোচিত অত্যাচারের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে, যা সম্ভবত অবিকলভাবে প্রতিবর্ণিত হয়েছে। তবে, এটি শিল্পমাধ্যমে পুরোপুরি রূপান্তরিত বা নান্দনিকভাবে আবদ্ধ হয়নি।

0
Updated: 3 hours ago
“মুখরা রমণী বশীকরণ” নাটকটি কোন নাটকের অনুবাদ?
Created: 2 weeks ago
A
The Silver Box
B
The Taming of the Shrew
C
You Never Can Tell
D
The Tempest
মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, নাট্যকার এবং সাহিত্যসমালোচক, যিনি বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ভাষা আন্দোলনের প্রভাব স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
মুনীর চৌধুরীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
জন্ম ও পৈতৃক নিবাস: ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন, পৈতৃক নিবাস নোয়াখালী।
১৯৫২ ভাষা আন্দোলন: ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে তিনি কারাবন্দী অবস্থায় ১৯৫৩ সালে "কবর" নাটক রচনা করেন, যা তাঁর অন্যতম বিখ্যাত রচনা।
বাংলা টাইপরাইটার উদ্ভাবন:
১৯৬৫ সালে তিনি কেন্দ্রীয় বাঙলা উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে বাংলা টাইপরাইটারের জন্য একটি উন্নতমানের কী-বোর্ড উদ্ভাবন করেন, যার নাম "মুনীর অপ্টিমা"।
রচিত নাটকসমূহ:
মৌলিক নাটক:
"কবর" (১৯৫৩): ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত নাটক, বাংলা নাটকের ইতিহাসে বিশেষ স্থান অধিকারী।
"রক্তাক্ত প্রান্তর": পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধকে কেন্দ্র করে লেখা।
"মানুষ": ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উপজীব্য।
"নষ্ট ছেলে": রাজনৈতিক চেতনাসমৃদ্ধ নাটক।
"পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য": রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রচিত।
"দণ্ডকারণ্য": তিনটি নাটকের সমন্বয়ে নির্মিত।
"রাজার জন্মদিন": রাজনীতি ও সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত নাটক।
অনুবাদ নাটক:
"কেউ কিছু বলতে পারে না" (১৯৬৯): জর্জ বার্নার্ড শর-এর "You Never Can Tell" নাটকের বাংলা অনুবাদ।
"রূপার কৌটা" (১৯৬৯): জন গলজওয়র্দির "The Silver Box" নাটকের বাংলা অনুবাদ।
"মুখরা রমণী বশীকরণ" (১৯৭০): উইলিয়াম শেকসপিয়ারের "The Taming of the Shrew" নাটকের বাংলা অনুবাদ।

0
Updated: 2 weeks ago
মুনীর চৌধুরীর 'মুখরা রমণী বশীকরণ' একটি-
Created: 1 month ago
A
উপন্যাস
B
ছোটগল্প
C
প্রবন্ধ
D
অনুবাদ নাটক
মুনীর চৌধুরীর ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ নাটক
-
রচনা ও উৎস
‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ হলো বাংলাদেশি নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর অনুবাদ নাটক। এটি উইলিয়াম শেক্সপিয়রের The Taming of The Shrew (টেমিং অব দ্য শ্রু) নাটকের অনুবাদ, ১৯৭০ সালে প্রকাশিত। নাটকটি পাঁচ অঙ্কের কমেডি রূপে উপস্থাপিত। -
পটভূমি ও কাহিনী:
নাটকটির প্রধান চরিত্র দুই কন্যা — ক্যাথেরিনা এবং বিয়াঙ্কা, যাদের পিতা পডুয়া শহরের ধনী ব্যক্তি। ক্যাথেরিনা চঞ্চল ও মুখরায়, আর বিয়াঙ্কা সুন্দরী ও কোমল স্বভাবের। ভেরোনা শহরের যুবক পেট্রুশিও ক্যাথেরিনার আত্মমর্যাদা ও জেদকে চ্যালেঞ্জ করে, শেষে তার বিয়ে সম্পন্ন হয়।
মুনীর চৌধুরীর ভাষায়, কাহিনিটি স্থূল হলেও এতে হাস্যরস সতেজ, সরস ও উপভোগ্য।
মুনীর চৌধুরী
-
জন্ম: ২৭ নভেম্বর ১৯২৫, মানিকগঞ্জ।
-
পেশা: শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী।
-
জীবন: শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
রচিত নাটকসমূহ
-
মূল নাটক: রক্তাক্ত প্রান্তর, চিঠি, কবর, দণ্ডকারণ্য।
-
অনুবাদ নাটক: কেউ কিছু বলতে পারে না, রূপার কৌটা, মুখরা রমণী বশীকরণ।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 1 month ago