নবাব ফয়জুন্নেসা রচিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম কী?
A
সঙ্গীতসার
B
রূপজালাল
C
সঙ্গীতলহরী
D
মুসলিম বন্ধু
উত্তরের বিবরণ
নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছিলেন উনিশ শতকের বাংলার এক অগ্রগণ্য নারী শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক ও সাহিত্যিক, যিনি নারীশিক্ষা ও সমাজকল্যাণে পথিকৃৎ হিসেবে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। তাঁর রচিত আত্মজীবনীমূলক রূপক গ্রন্থের নাম “রূপজালাল”, যা বাংলা সাহিত্যে এক ঐতিহাসিক অবদান হিসেবে গণ্য করা হয়।
-
‘রূপজালাল’ হলো নওয়াব ফয়জুন্নেসা রচিত গদ্য ও পদ্য মিলিত আত্মজীবনীমূলক ও কল্পকাহিনীমূলক একটি রূপক গ্রন্থ।
-
এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৭৬ সালে ঢাকা থেকে।
-
গ্রন্থটিতে লেখিকা নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে তাঁর বিড়ম্বিত দাম্পত্য জীবনের করুণ কাহিনী, রূপকের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন।
-
এটি বাংলার একজন মুসলিম নারীর রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাহিত্যকর্ম বলে বিবেচিত।
-
‘রূপজালাল’-এর কাহিনীতে দেখা যায় আত্মসম্মানবোধ, নারী-অধিকার চেতনা ও সামাজিক অবিচারের প্রতিবাদ — যা তৎকালীন নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির পূর্বাভাস দেয়।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা (১৮৩৪–১৯০৩):
-
জন্ম: কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁও গ্রামে, এক জমিদার পরিবারে।
-
তিনি সমাজকল্যাণ, নারীশিক্ষা ও দরিদ্রসেবায় নিবেদিত ছিলেন।
-
নারী শিক্ষার প্রচার ও নারী অধিকার রক্ষায় তাঁর অবদান অসাধারণ।
-
১৮৮৯ সালে ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়া তাঁকে ‘নওয়াব’ উপাধিতে ভূষিত করেন, যা কোনো বাঙালি নারী প্রথমবারের মতো অর্জন করেন।
-
তিনি ছিলেন একাধারে জমিদার, সমাজসেবক, কবি ও সাহিত্যিক।
-
বাংলা পত্রপত্রিকা যেমন বান্ধব, ঢাকা প্রকাশ, মুসলমান বন্ধু, সুধাকর, ইসলাম প্রচারক প্রভৃতির তিনি নিয়মিত পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
-
সাহিত্যকর্ম:
-
রূপজালাল (১৮৭৬) – আত্মজীবনীমূলক রূপক কাহিনি।
-
সঙ্গীতসার ও সঙ্গীতলহরী – তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
-
নওয়াব ফয়জুন্নেসা তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে শুধু ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতাই প্রকাশ করেননি, বরং সমাজে নারীর অবস্থান, সম্মান ও আত্মপ্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়েছেন, যা তাঁকে বাংলা সাহিত্য ও সমাজ ইতিহাসে এক অনন্য স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

0
Updated: 1 day ago
বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত গ্রন্থের রচয়িতা কে?
Created: 2 months ago
A
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
B
দীনেশচন্দ্র সেন
C
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
D
সুকুমার সেন
'বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত' (১৯৬৫) গ্রন্থের রচয়িতা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ । তাঁর ভাষা বিষয়ক অন্যান্য গ্রন্থসমূহ হলো - 'বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান '(১৯৬৫), 'ভাষা ও সাহিত্য' (১৯৩১), 'বাংলা সাহিত্যের কথা' (১ম খণ্ড - ১৯৫৩, ২য় খণ্ড - ১৯৬৫), 'বাংলা ব্যাকরণ' (১৯৫৮) ।

0
Updated: 2 months ago
বাংলায় চৈতন্যদেবের প্রথম জীবনীগ্রন্থের নাম কী?
Created: 2 weeks ago
A
চৈতন্য মঙ্গল
B
চৈতন্য-ভাগবত
C
চৈতন্য-চরিতামৃত
D
চৈতন্যজীবনী
শ্রী চৈতন্যদেব মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য প্রভাব বিস্তারকারী ধর্মপ্রচারক। তিনি নিজে বাংলা ভাষায় একটি পঙক্তিও রচনা করেননি, কিন্তু তাঁর নামেই একটি যুগের সৃষ্টি হয়েছে, যা চৈতন্যযুগ নামে পরিচিত। তাঁকে কেন্দ্র করে মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যধারা বৈষ্ণব সাহিত্য গড়ে ওঠে। তাঁর প্রচেষ্টা ও প্রভাবের ফলেই বাঙালির স্বজাত্যবোধ ও নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষিত হয়।
-
বাংলায় চৈতন্যদেবের প্রথম জীবনীগ্রন্থ হলো বৃন্দাবন দাস রচিত ‘চৈতন্য-ভাগবত’।
-
দ্বিতীয় জীবনীগ্রন্থ হলো লোচন দাসের ‘চৈতন্য মঙ্গল’।
-
সবচেয়ে অদ্বিতীয় ও তথ্যবহুল জীবনীগ্রন্থ হলো কৃষ্ণদাস কবিরাজের ‘চৈতন্য-চরিতামৃত’।
-
বাংলা সাহিত্য ১৫০০ থেকে ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়কে চৈতন্যযুগ বলা হয়।
-
শ্রীচৈতন্যর পিতৃদত্ত নাম ছিল বিশ্বম্ভর মিশ্র, আর ডাক নাম ছিল নিমাই।
-
তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৪৮৬ খ্রিষ্টাব্দে এবং মৃত্যুবরণ করেন ১৫৩৩ খ্রিষ্টাব্দে।
বৈষ্ণব সাহিত্য প্রধানত তিন প্রকার—
-
জীবনীকাব্য
-
বৈষ্ণব শাস্ত্র
-
পদাবলী

0
Updated: 2 weeks ago
সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবন্ধ গ্রন্থ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
পঞ্চতন্ত্র
B
কালান্তর
C
প্রবন্ধ সংগ্রহ
D
শাশ্বত বঙ্গ
সৈয়দ মুজতবা আলীর গুরুত্বপূর্ণ রচনা ও গ্রন্থসমূহ
পঞ্চতন্ত্র:
-
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘পঞ্চতন্ত্র’ (১৯৫২) একটি ব্যক্তিগত প্রবন্ধ সংকলন, যা দুই ভাগে বিভক্ত।
-
প্রথম পর্বে: ৩৪টি রচনা
-
দ্বিতীয় পর্বে: ৩১টি রচনা
-
মোট: ৬৫টি প্রবন্ধ
-
-
উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ: বই কেনা, মোপাসাঁ, চেখফ্-রবীন্দ্রনাথ, বিদেশে, মেশেদিনী, অনুবাদ সাহিত্য, অর্থং অর্থং ইত্যাদি।
-
এই প্রবন্ধগুলো মূলত ‘বসুমতী’ ও ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
-
এতে মুজতবা আলীর সরস ও প্রাঞ্জল গদ্যশৈলী এবং বিচিত্র বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে।
-
গ্রন্থটি সাধারণত রম্যসাহিত্যের অন্তর্ভুক্ত।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:
-
কালান্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ জীবনে রচিত রাজনৈতিক প্রবন্ধ সংকলন।
-
শাশ্বত বঙ্গ (কাজী আবদুল ওদুদ): বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।
সৈয়দ মুজতবা আলী: জীবন ও সাহিত্যিক পরিচিতি
-
জন্ম: ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৪, করিমগঞ্জ, শ্রীহট্ট (সিলেট)। পৈতৃক নিবাস: মৌলভীবাজার, উত্তরসুর গ্রাম।
-
শিক্ষা: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৬ সালে স্নাতক।
-
সাহিত্যিক জীবন:
-
প্রথম স্বীকৃতি: ‘দেশে-বিদেশে’ – কাবুলে অবস্থানের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও অন্তরঙ্গ উপলব্ধি থেকে উদ্ভূত।
-
বিশেষ রচনা: ‘পূর্ব-পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’।
-
ভূমিকা রচনা: কাজী নজরুল ইসলামের ‘রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম’ গ্রন্থে।
-
-
মৃত্যু: ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪, ঢাকা।
লেখাগুলি ভাগ করা যায়:
-
উপন্যাস: অবিশ্বাস্য, শবনম
-
রম্য রচনা: পঞ্চতন্ত্র, ময়ূরকণ্ঠী
-
ছোটগল্প সংকলন: চাচা-কাহিনী, টুনি মেম
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago