কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম কত বঙ্গাব্দে?
A
১২ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৫
B
১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬
C
১লা আষাঢ় ১৩০৭
D
২৪শে বৈশাখ ১২৮৮
উত্তরের বিবরণ
কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সংগীতের এক অনন্য প্রতিভা, যিনি “বিদ্রোহী কবি” নামে সর্বাধিক পরিচিত। তাঁর জন্ম হয়েছিল ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে (২৪ মে ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে), ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে। তিনি ছিলেন এমন এক কবি, যিনি কলম ও কণ্ঠে একইসাথে বিদ্রোহ, মানবতা ও প্রেমের জাগরণ ঘটিয়েছিলেন।
-
জন্ম: ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ (২৪ মে ১৮৯৯ খ্রি.), চুরুলিয়া গ্রাম, আসানসোল মহকুমা, বর্ধমান জেলা, ভারত।
-
শৈশবে তিনি লেটো গানের দলে যোগ দেন, যা তাঁর সাহিত্যিক জীবনের প্রাথমিক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
-
পরবর্তীতে তিনি বর্ধমান ও ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার দরিরামপুর হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন।
-
১৯১৭ সালে তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বাঙালি পল্টনে যোগ দেন এবং করাচিতে কিছুদিন অবস্থান করেন।
-
সেনাজীবনের অভিজ্ঞতা তাঁর মধ্যে বিপ্লব, স্বাধীনতা ও ন্যায়ের প্রতি আকর্ষণ জাগ্রত করে, যা পরবর্তীতে তাঁর সাহিত্য ও সংগীতে প্রতিফলিত হয়।
-
তিনি “বিদ্রোহী কবি” নামে পরিচিত, কারণ তাঁর রচনায় বিদ্রোহ, প্রতিবাদ ও মুক্তির আহ্বান উচ্চারিত হয়েছে।
-
তাঁর রচিত ‘বিদ্রোহী’ কবিতা তাঁকে বাঙালির স্বাধীনচেতা মননের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
-
মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে তিনি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারান এবং দীর্ঘকাল অসুস্থ জীবন অতিবাহিত করেন।
-
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁকে ঢাকায় আনা হয় এবং বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।
-
তাঁকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয় এবং তাঁর অবদানকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি জানানো হয়।
কাজী নজরুল ইসলাম কেবল একজন কবি নন—তিনি ছিলেন সাহস, মানবতা ও মুক্তচেতনার প্রতীক, যাঁর কাব্য, গান ও চিন্তা আজও বাঙালির চেতনায় জীবন্ত।

0
Updated: 1 day ago
জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ নয় কোনটি?
Created: 3 months ago
A
ঝরা পালক বেলা অবেলা কালবেলা বাংলার রূপ মহাপৃথিবী
B
A
C
A
D
A
Coming

0
Updated: 3 months ago
নিচের কোন কাব্য কাজী নজরুল ইসলামের উদারনৈতিক ঐতিহ্যভাবনার ধারক?
Created: 3 weeks ago
A
বিষের বাঁশী
B
অগ্নি-বীণা
C
সিন্ধু-হিন্দোল
D
চক্রবাক
কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যে উদারনৈতিক ঐতিহ্য ও মানবিক মূল্যবোধের চিত্র বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছে তার কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা এবং বিষের বাঁশী-এ।
এই কাব্যগ্রন্থগুলোতে সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভিন্নতা সহিষ্ণুতা, মানবিক সাম্য এবং উদারনৈতিক চেতনার প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়।
নজরুলের কবিতা ব্যক্তিস্বাধীনতার প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ভাবনাকে গুরুত্ব দেয়।
অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্যসমূহ:
-
উদারতাবাদ: শব্দটির ইংরেজি Liberalism, লাতিন শব্দ liberalis থেকে উদ্ভূত।
-
উদারনীতিবাদের সাধারণ অর্থ হলো ব্যক্তিস্বাধীনতার নীতি প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।
-
প্রকাশকাল ও প্রেক্ষাপট: প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত; প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে লেখা।
-
কাব্যের মূল বিষয়বস্তু: সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্রোহ, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, মানবিক সাম্য এবং উদারনৈতিক মানবতাবোধ।
-
উল্লেখযোগ্য কবিতা: 'বিদ্রোহী', 'আগমনী'।
-
কাব্যের ১২টি কবিতার মধ্যে: ৭টি ইসলামী ঐতিহ্যভিত্তিক, ৩টি বিশুদ্ধ হিন্দু ঐতিহ্যভিত্তিক, এবং ২টি হিন্দু-মুসলিম মিশ্র ঐতিহ্যভিত্তিক।
-
ইসলামী ঐতিহ্য: খোদার আসন, আরশ ছেদিয়া, বোররাক, জিব্রাইল, হাবিয়া-দোযখ ইত্যাদি।
-
হিন্দু ঐতিহ্য: নটরাজ ধূর্জটি, হােমশিখা, জমদগ্নি, ইন্দ্রানী, কৃষ্ণ-কন্ঠ, ব্যোমকেশ, ইশান, শ্যাম, বিষ্ণু, পরশুরাম, বলরাম, ভৃগু ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার।
অগ্নিবীণা কাব্যের কবিতাগুলো বিষয়ভিত্তিক চার ভাগে বিভক্ত করা যায়:
-
দ্রোহ, বিপ্লব ও আমিত্ব: প্রলয়োল্লাস, বিদ্রোহী, ধূমকেতু
-
সময় ও যুদ্ধ: কামাল পাশা, আনোয়ার, রণভেরী, শাত-ইল-আরব
-
মুসলিম ঐতিহ্য: মোহররম, কোরবানী, খেয়াপারের তরণী
-
হিন্দু ঐতিহ্য: রক্তাম্বরধারিণী মা, আগমনী
বিষের বাঁশী কাব্যগ্রন্থের বৈশিষ্ট্য:
-
প্রকাশকাল: ১৩৩১ বঙ্গাব্দের শ্রাবণে (আগস্ট, ১৯২৪)
-
প্রথম নিষিদ্ধকৃত কাব্যগ্রন্থ; নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয় ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে এপ্রিল।
-
কবিতাগুলো উদারনৈতিক ঐতিহ্য, সামাজিক সচেতনতা, মানবিকতা এবং বিপ্লবী চেতনার বহিঃপ্রকাশ।
-
উল্লেখযোগ্য কবিতা: বন্দী-বন্দনা, উদ্বোধন, উৎসর্গ, চরকার গান, জাতের বজ্জাতি, বন্দনা-গান, বিদ্রোহীর বাণী, মুক্ত-পিঞ্জর, যুগান্তরের গান, শিকল-পরার গান।
পরিশেষে বলা যায়, 'বিষের বাঁশী' কাব্যগ্রন্থ মূলত সামাজিক দ্রোহ ও বিপ্লবী চেতনার মাধ্যমে উদারনৈতিক ভাবনার প্রতিফলন ঘটায়, যেখানে 'অগ্নিবীণা' কাব্যগ্রন্থে নজরুলের উদারনৈতিক ও মানবতাবাদী চেতনার গভীরতা এবং বিস্তৃত প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।
অতিরিক্ত তথ্য:
-
কাজী নজরুল ইসলামের অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ:
-
সিন্ধু হিন্দোল: প্রেমের কবিতা ও গান, প্রকাশিত ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে।
-
চক্রবাক: প্রেমের কবিতা ও গান, প্রকাশিত ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে।
-

0
Updated: 3 weeks ago
কাজী নজরুল ইসলাম কোন কবিতা রচনার জন্য কারাবরণ করেন?
Created: 2 months ago
A
বিদ্রোহী
B
প্রলয়োল্লাস
C
আনন্দময়ীর আগমনে
D
নারী
কাজী নজরুল ইসলাম ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতা রচনার জন্য কারাবরণ করেণ।
- ৭৯ লাইনের বৃটিশ বিরোধী এই কবিতাটিতে নজরুলের ক্ষুব্ধ মনের প্রকাশ পাওয়া যায় জ্বালাময়ী শব্দের অন্তরালে।
- 'ধূমকেতু' পত্রিকার পূজা সংখ্যায় 'আনন্দময়ীর আগমনে' (২৬ শে সেপ্টেম্বর, ১৯২২) কবিতাটি প্রকাশিত হলে কাজী নজরুল ইসলাম কুমিল্লা থেকে ৮ই নভেম্বর গ্রেফতার হন।
----------------------------
• কাজী নজরুল ইসলাম:
- কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।
- কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।
- বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’।
- কাজী নজরুল ইসলাম আধুনিক বাংলা গানের জগতে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাত।
কাজী নজরুল ইসলাম রচনাসমগ্র:
• উপন্যাস:
- বাঁধন-হারা (বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রোপান্যাস),
- মৃত্যুক্ষুধা,
- কুহেলিকা।
• গল্পগ্রন্থ:
- ব্যথার দান,
- রিক্তের বেদন,
- শিউলিমালা।
• নাটক:
- ঝিলিমিলি,
- আলেয়া
- মধুমালা (গীতিনাট্য)
• কাজী নজরুল ইসলাম রচিত প্রবন্ধগ্রন্থ:
- দুর্দিনের যাত্রী,
- যুগবাণী,
- রুদ্র মঙ্গল।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, মৃত্যুক্ষুধা উপন্যাস ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago