কোন লেখক শহীদ জননী হিসেবে পরিচিত?
A
জাহানারা ইমাম
B
কামিনী রায়
C
বেগম রোকেয়া
D
সুফিয়া কামাল
উত্তরের বিবরণ
জাহানারা ইমাম ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম, যিনি ‘শহীদ জননী’ হিসেবে চিরস্মরণীয়। তাঁর জীবন ও সাহিত্যকর্মে দেশপ্রেম, ন্যায়বোধ, ত্যাগ ও প্রতিবাদের শক্তি গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
-
জাহানারা ইমাম জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৯ সালের ৩ মে, অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে, একটি রক্ষণশীল পরিবারে।
-
তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘শহীদ জননী’ নামে খ্যাত, কারণ তাঁর পুত্র রুমী মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন এবং সেই শোককে তিনি দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে প্রেরণায় রূপান্তরিত করেন।
-
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’র আহ্বায়ক হিসেবে দেশব্যাপী আলোচিত হন।
-
তাঁর লেখনী ও আন্দোলন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিকে জাতীয় আন্দোলনে রূপান্তরিত করেছিল।
-
তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলা সাহিত্যে এক ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে বিবেচিত।
-
এই গ্রন্থে তিনি যুদ্ধকালীন ভয়াবহতা, শহীদের ত্যাগ, পারিবারিক বেদনা ও স্বাধীনতার অনিঃশেষ আকাঙ্ক্ষা গভীরভাবে বর্ণনা করেছেন।
-
তাঁর লেখায় মুক্তিযুদ্ধের মানবিক ও বাস্তবচিত্র, বিশেষ করে একজন মায়ের হৃদয়ের আর্তনাদ ও গর্ববোধ শক্তিশালীভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
-
১৯৮১ সালের দিকে তিনি মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকেন।
-
১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েটে তাঁর মৃত্যু হয়।
-
মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ ঢাকায় এনে সমাহিত করা হয়।
জাহানারা ইমাম তাঁর জীবন, সাহিত্য ও আন্দোলনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মানবতার মূল্যবোধের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তাঁর ‘একাত্তরের দিনগুলি’ কেবল একটি স্মৃতিচারণ নয়, বরং বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের এক অনন্য সাহিত্যিক দলিল।

0
Updated: 1 day ago
জাহানারা ইমামের অনুবাদ গ্রন্থ কোনটি?
Created: 1 day ago
A
অন্যজীবন
B
বুকের ভিতর আগুন
C
নদীর তীরে ফুলের মেলা
D
সাতটি তারার ঝিকিমিকি
জাহানারা ইমাম ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি সাহিত্য, সমাজসচেতনতা ও মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর রচিত ও অনূদিত গ্রন্থসমূহে যেমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিফলিত হয়েছে, তেমনি মানবজীবনের গভীর অনুভব ও বাস্তবতার প্রকাশও লক্ষ্য করা যায়। তাঁর অনূদিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘নদীর তীরে ফুলের মেলা’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
-
‘নদীর তীরে ফুলের মেলা’ জাহানারা ইমামের একটি অনুবাদ গ্রন্থ, যেখানে মূল রচনার ভাব, ভাষা ও অনুভবকে গভীর সংবেদনশীলতার সঙ্গে উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
তাঁর অনুবাদে পাওয়া যায় মানবিক সহানুভূতি, জীবনের প্রতি মমতা ও সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন।
-
এ অনুবাদ তাঁর সাহিত্যিক বহুমাত্রিকতা ও ভাষাগত পারদর্শিতার পরিচায়ক।
-
অনুবাদ ছাড়াও জাহানারা ইমাম মূলত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা ও আত্মজৈবনিক সাহিত্যে বেশি খ্যাতি অর্জন করেন।
-
তাঁর ‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের এক ঐতিহাসিক দিনলিপি, যা দেশপ্রেম, শোক ও গর্বের অনুপম দলিল।
জাহানারা ইমাম সম্পর্কিত তথ্য:
-
জন্ম: ১৯২৯ সালের ৩ মে, অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলায়।
-
তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘শহীদ জননী’ হিসেবে পরিচিত।
-
মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’র আহ্বায়ক হিসেবে দেশজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন পরিচালনা করেন।
-
মৃত্যু: ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, মিশিগান, যুক্তরাষ্ট্রে; পরবর্তীতে তাঁর মরদেহ ঢাকায় সমাহিত করা হয়।
তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ:
-
অন্য জীবন
-
বুকের ভিতর আগুন
-
নাটকের অবসান
-
নিঃসঙ্গ পাইন
-
ক্যানসারের সঙ্গে বসবাস
-
প্রবাসের দিনগুলি
শিশু সাহিত্য:
-
গজকচ্ছপ
-
সাতটি তারার ঝিকিমিকি
-
বিদায় দে মা ঘুরে আসি
অনুবাদ গ্রন্থসমূহ:
১. জাগ্রত ধরিত্রী
২. তেপান্তরের ছোট্ট শহর
৩. নদীর তীরে ফুলের মেলা
জাহানারা ইমামের রচনায় দেশপ্রেম, ন্যায়, মানবিকতা ও জীবনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর অনূদিত গ্রন্থগুলো বাংলা ভাষার পাঠককে বিশ্বের সাহিত্যের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে, আর তাঁর নিজস্ব রচনাগুলো আজও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য দলিল হিসেবে মূল্যবান।

0
Updated: 1 day ago
জাহানারা ইমাম রচিত গ্রন্থ নয় কোনটি?
Created: 4 months ago
A
সাতটি তারার তিমির
B
বুকের ভিতর আগুন
C
ক্যানসারের সঙ্গে বসবাস
D
একাত্তরের দিনগুলি
‘সাতটি তারার তিমির’ কাব্যগ্রন্থটি জাহানারা ইমামের লেখা নয়।
– এই কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা হলেন কবি জীবনানন্দ দাশ।
জাহানারা ইমাম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি:
– তিনি ‘শহীদ জননী’ হিসেবে সমাধিক পরিচিত।
– মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য শফি ইমাম রুমী ছিলেন তাঁর সন্তান।
– ১৯৯২ সালে তিনি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’-র আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
– ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে গণ-আদালত গঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
জাহানারা ইমামের রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ:
-
সাতটি তারার ঝিকিমিকি
-
অন্যজীবন
-
বুকের ভিতর আগুন
-
নাটকের অবসান
-
নিঃসঙ্গ পাইন
-
ক্যানসারের সঙ্গে বসবাস
-
প্রবাসের দিনগুলি
উৎস: বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 4 months ago
‘একাত্তরের দিনগুলি’ কোন ধরনের রচনা?
Created: 1 day ago
A
উপন্যাস
B
প্রবন্ধ
C
নাটক
D
দিনলিপি
‘একাত্তরের দিনগুলি’ জাহানারা ইমাম রচিত এক অনন্য ডায়েরি বা দিনলিপি, যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বাস্তব অভিজ্ঞতা, বেদনা ও সংগ্রামের দলিল হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। এটি শুধু একটি সাহিত্যকর্ম নয়, বরং একজন মায়ের চোখে দেখা জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের মর্মস্পর্শী বিবরণ।
-
‘একাত্তরের দিনগুলি’ গ্রন্থটি জাহানারা ইমামের সর্বাধিক খ্যাতিপ্রাপ্ত রচনা, যা দিনপঞ্জি বা ডায়েরির আকারে লেখা।
-
এতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাঙালির দৈনন্দিন জীবন, যুদ্ধের ভয়াবহতা, পাকিস্তানি সেনাদের নির্মমতা ও মুক্তিকামী মানুষের ত্যাগ নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
-
এটি মূলত লেখিকার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বর্ণনা, যেখানে যুদ্ধকালীন দিনগুলির ঘটনাবলি একদিকে যেমন বেদনাদায়ক, অন্যদিকে তেমনি অনুপ্রেরণাদায়ক।
-
তাঁর একমাত্র পুত্র রুমী মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং শহীদ হন—এই ব্যক্তিগত শোককে লেখিকা দেশের সংগ্রাম ও ত্যাগের প্রতীকে পরিণত করেছেন।
-
‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের শিহরণময়, মর্মস্পর্শী ও দলিলসম মূল্যবান রচনা হিসেবে বিবেচিত।
-
এতে সমাজ, পরিবার ও মানবিক অনুভূতির গভীর প্রকাশের পাশাপাশি স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামী জাতির অদম্য মানসিক শক্তি প্রতিফলিত হয়েছে।
জাহানারা ইমাম (১৯২৯–১৯৯৪):
-
জন্ম: ১৯২৯ সালের ৩ মে, অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে।
-
পরিচিতি: ‘শহীদ জননী’ নামে খ্যাত, কারণ তাঁর পুত্র রুমী মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
-
তিনি ছিলেন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি’র আহ্বায়ক, এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জাতীয় আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
-
১৯৮১ সালে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং দীর্ঘ চিকিৎসার পর ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, আমেরিকার মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েটে মৃত্যুবরণ করেন।
-
মৃত্যুর পর তাঁর দেহ ঢাকায় এনে সমাহিত করা হয়।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ:
১. একাত্তরের দিনগুলি
২. গজকচ্ছপ
৩. সাতটি তারার ঝিকিমিকি
৪. অন্য জীবন
৫. বুকের ভিতর আগুন
৬. শেক্সপিয়রের ট্রাজেডি
৭. নাটকের অবসান
৮. নিঃসঙ্গ পাইন
৯. ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস
১০. প্রবাসের দিনগুলি
জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ কেবল একটি সাহিত্যকর্ম নয়—এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক জীবন্ত দলিল, যেখানে এক নারীর চোখ দিয়ে দেখা স্বাধীনতার সংগ্রাম চিরকাল পাঠকের হৃদয়ে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

0
Updated: 1 day ago