কার নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়?
A
আবুল হাসেম
B
কাজী গোলাম মাহবুব
C
গাজীউল হক
D
আব্দুল মতিন
উত্তরের বিবরণ
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনেই মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার সংগ্রামে রক্ত ঝরেছিল তরুণ ছাত্রদের। নিচে দিনের ঘটনাবলি ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো—
ঘটনাক্রম:
১. তারিখ ও প্রেক্ষাপট: ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি, দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার, বাংলা সন অনুযায়ী ৮ ফাল্গুন ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ।
২. প্রাথমিক প্রস্তুতি: পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ছাত্ররা জড়ো হতে শুরু করে।
৩. ১৪৪ ধারা জারি: সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্ররা দুজন দুজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে থাকে।
৪. ছাত্রসভা শুরু: সকাল ১১টায় ছাত্রসভা শুরু হয়, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করার।
৫. সভাপতি ও বক্তারা: সভার সভাপতিত্ব করেন গাজীউল হক। বক্তব্য রাখেন শামসুল হক, মোহাম্মদ তোয়াহা, কাজী গোলাম মাহবুব, খালেক নেওয়াজ এবং আবদুল মতিন।
৬. ১৪৪ ধারা ভঙ্গের নির্দেশ: সভাপতি ঘোষণা দেন, ছাত্ররা দশজন করে দলবদ্ধ হয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করবে।
৭. পুলিশি দমননীতি: মিছিল শুরু হলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে। তবুও ছাত্ররা বাধা উপেক্ষা করে মেডিকেল হোস্টেলের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়।
৮. রাজনৈতিক উদ্দেশ্য: মেডিকেল হোস্টেলের নিকটে ছিল জগন্নাথ হলের অডিটোরিয়াম, যেখানে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের সভা চলছিল। ছাত্রদের উদ্দেশ্য ছিল আইন পরিষদের সদস্যদের কাছে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি পৌঁছে দেওয়া।
9. সংঘর্ষ তীব্র হওয়া: পুলিশ পুনরায় কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে, ছাত্ররা প্রতিবাদে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
10. গুলিবর্ষণ ও শহিদ হওয়া: অবশেষে পুলিশ গুলিবর্ষণ শুরু করে। ঘটনাস্থলেই আবদুল জব্বার ও রফিকউদ্দিন আহমদ শহিদ হন। প্রায় ১৭ জন আহত হন, যাদের মধ্যে রাতে আবুল বরকত শহিদ হন।
মূল তাৎপর্য: এই রক্তাক্ত সংগ্রামই পরবর্তীতে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের বিজয়ের ভিত্তি স্থাপন করে এবং ২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়।

0
Updated: 18 hours ago
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন -
Created: 2 weeks ago
A
আবদুল হামিদ
B
গোলাম মোস্তফা
C
আবদুল কাদের
D
গাজীউল হক
একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঐতিহাসিক দিনটি বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়কে চিহ্নিত করে। ১৯৫২ সালের এই দিনে ছাত্রদের রক্তে রঙিন হয়েছিল ঢাকার রাজপথ, যা পরবর্তী সময়ে মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতির পথ প্রশস্ত করে।
-
তারিখ ও সময়: ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার, ৮ ফাল্গুন ১৩৫৮ বঙ্গাব্দ।
-
প্রাথমিক প্রস্তুতি: পূর্ব ঘোষণার ভিত্তিতে সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জমায়েত শুরু হয়।
-
সরকারি পদক্ষেপ: সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্ররা দুই জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে থাকে।
-
সভা ও সিদ্ধান্ত: বেলা ১১টায় ছাত্রসভা শুরু হয় এবং সেখানে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
-
নেতৃত্ব ও বক্তৃতা: সভার সভাপতিত্ব করেন গাজীউল হক। বক্তব্য রাখেন শামসুল হক, মোহাম্মদ তোয়াহা, কাজী গোলাম মাহবুব, খালেক নেওয়াজ এবং আবদুল মতিন।
-
১৪৪ ধারা ভঙ্গ: সভাপতি ১০ জন করে ছাত্রদের ১৪৪ ধারা ভাঙার নির্দেশ দেন।
-
পুলিশের দমননীতি: পুলিশ লাঠিচার্জ ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করলেও ছাত্ররা বাধা উপেক্ষা করে মেডিকেল হোস্টেলের প্রধান ফটকের কাছে জমায়েত হন।
-
প্রতিবাদ ও লক্ষ্য: মেডিকেল হোস্টেলের কাছে জগন্নাথ হলের অডিটোরিয়ামে পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের সভা চলছিল। ছাত্রদের উদ্দেশ্য ছিল পরিষদে যোগদানকারী সদস্যদের কাছে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি পৌঁছে দেওয়া।
-
সংঘর্ষ: ছাত্ররা স্লোগান দিলে পুলিশ পুনরায় কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে। ছাত্ররাও প্রতিবাদে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
-
গুলিবর্ষণ ও শহীদ: একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালায়। আব্দুল জব্বার ও রফিকউদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। প্রায় ১৭ জন গুরুতর আহত হন এবং তাদের মধ্যে রাত আটটার দিকে আবুল বরকত শহীদ হন।

0
Updated: 2 weeks ago
১৯৫২ সালে তৎকালীন ভাষা আন্দোলন কিসের জন্ম দিয়েছিল?
Created: 4 months ago
A
এক রাজনৈতিক মতবাদের
B
এক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের
C
এক নতুন জাতীয় চেতনার
D
এক নতুন সমাজ ব্যবস্থার
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন: একটি জাতীয় চেতনার সূচনা
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল তৎকালীন পূর্ব বাংলায় (বর্তমান বাংলাদেশে) ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম, যা বাঙালি জাতিসত্তার জাগরণে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
এই আন্দোলন মূলত ভাষার মর্যাদা ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে গড়ে ওঠে এবং পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদের প্রতিফলন ছিল।
যদিও ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে, তবুও এর সূচনা হয়েছিল বহু আগে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি প্রথম উঠে আসে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পূর্বপর্বেই। কিন্তু পাকিস্তান সরকার বাংলা ভাষাকে অবহেলার নীতি গ্রহণ করলে ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে আন্দোলনের সূচনা হয়।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাস্তায় নামা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হলে ছয়জন তরুণ শহীদ হন। এই ত্যাগ জাতিকে না শুধু ভাষার অধিকার এনে দেয়, বরং তা রাজনৈতিক সচেতনতা, ছাত্রশক্তির উত্থান, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ এবং নারী জাগরণের পথও সুগম করে।
বাংলা ভাষাকে অবমূল্যায়ন করার সিদ্ধান্তের কারণে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায় এবং দেশের রাজনৈতিক চিত্রপটেও বড় ধরনের পরিবর্তন সূচিত হয়। ভাষা আন্দোলন পরিণত হয় একটি জাতীয় আন্দোলনে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্বাধীনতা সংগ্রামেও গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়।
তথ্যসূত্র:
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, এসএসসি প্রোগ্রাম, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

0
Updated: 4 months ago
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
Created: 4 months ago
A
নুরুল আমিন
B
লিয়াকত আলী খান
C
মোহাম্মদ আলী
D
খাজা নাজিমুদ্দীন
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) রাজনৈতিক ও শাসনব্যবস্থার অবস্থা ছিল নিম্নরূপ—
-
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খাজা নাজিমউদ্দিন,
-
পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নুরুল আমিন,
-
আর পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল ছিলেন গোলাম মুহাম্মদ।
২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২:
এই দিনটি ইতিহাসের পাতায় ‘অমর একুশে’, ভাষা শহীদ দিবস এবং আজকের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এর প্রতিবাদে ঢাকা শহরে ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
এই আন্দোলনে আত্মদানকারী ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি হয়ে ওঠে ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বাংলা ১৩৫৮ সনের ৮ ফাল্গুন, বৃহস্পতিবার দিনটি চিরস্মরণীয় হয়ে আছে ভাষার জন্য রক্তদানের এই বীরত্বপূর্ণ অধ্যায়ের মাধ্যমে।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া, শিক্ষক বাতায়ন ও বিবিসি বাংলা নিউজ।

0
Updated: 4 months ago