বাংলা ভাষায় প্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন কে?
A
অক্ষয় দত্ত
B
মার্শম্যান
C
ব্রাশি হ্যালহেড
D
রাজা রামমোহন
উত্তরের বিবরণ
গৌড়ীয় ব্যাকরণ ও রাজা রামমোহন রায়
গৌড়ীয় ব্যাকরণ
রামমোহন রায়ের লেখা ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ হলো বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থ। এটি তিনি ১৮৩৩ সালে প্রকাশ করেন, যা তাঁর জীবনের শেষ রচিত গ্রন্থও। এর আগে তিনি ইংরেজিতে “Bengali Grammar in the English Language” নামে আরেকটি ব্যাকরণ গ্রন্থ লেখেন।
এই বইটিতে বাংলা ভাষার ধ্বনি (শব্দের ধ্বনিগত গঠন), বর্ণ, উচ্চারণ, শব্দ গঠন, অক্ষর ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এটি মোট ১২টি অধ্যায়ে ভাগ করা। প্রথম অধ্যায়ে মৌলিক ধ্বনি ও উচ্চারণের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে বাংলা ভাষার লিঙ্গ, প্রত্যয়, বাক্য গঠন, পদান্বয় এবং ছন্দ নিয়ে আলোচনা রয়েছে।
রামমোহন রায় বাংলা ভাষার স্বতন্ত্র উচ্চারণ-পদ্ধতি নিয়ে নিজস্ব কিছু মূল্যবান মত দিয়েছেন, যা আজও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।
এই বইতে বাংলা ভাষার ধ্বনি ও রূপ (গঠনগত দিক) এর বিশ্লেষণভিত্তিক ব্যাকরণিক আলোচনা পাওয়া যায়।
রাজা রামমোহন রায়
রাজা রামমোহন রায়কে বাংলা নবজাগরণের পথপ্রদর্শক বা আদি পুরুষ বলা হয়। তিনি ১৭৭২ সালের ২২ মে হুগলির রাধানগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
১৮৩০ সালে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর তাঁকে “রাজা” উপাধি দেন এবং তাঁকে ব্রিটিশ শাসক ও পার্লামেন্টে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান।
তিনি ১৮২৮ সালের ২০ আগস্ট কলকাতায় প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সহযোগিতায় ‘ব্রাহ্মসমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজ সংস্কারের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতাও করেছেন। “শিব প্রসাদ রায়” নামে তিনি একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করতেন।
রামমোহন রায় প্রায় ৩০টি গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
বেদান্তগ্রন্থ
-
বেদান্তসার
-
ভট্টাচার্যের সহিত বিচার
-
গোস্বামীর সহিত বিচার
-
সহমরণ বিষয়ক প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ
-
গৌড়ীয় ব্যাকরণ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 3 months ago
কোন শাখা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
প্রাকৃত
B
আদি আর্য
C
শতম
D
গৌড়ীয় প্রাকৃত
বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা গোষ্ঠীর সদস্য এবং এর উৎপত্তি মূলত শতম (Satam) শাখা থেকে। আধুনিক ভাষাতত্ত্ব অনুযায়ী, আদি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা বহু বিবর্তনের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষায় পরিণত হয়েছে। এই বিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ স্তরগুলো হলো: ইন্দো-ইউরোপীয় → ইন্দো-ইরানীয় → ভারতীয় আর্য → প্রাকৃত → বাংলা।
-
ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর প্রাচীন শাখা মূলত ৯টি হলেও আধুনিককালে ১০টি শাখার কথাও বলা হয়।
-
ভাষাতাত্ত্বিক অধ্যাপক অ্যাসকোলি আদি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করেছেন: শতম (Satam) ও কেন্টুম (Centum)।
-
কেন্তুম ও শতমের বিভাজন কণ্ঠবর্ণের উচ্চারণ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী হয়েছে। এই বিভাজনের ফলে একটি ভৌগোলিক বিভাজনও দেখা দেয়: কেন্তুম গোষ্ঠীর ভাষাগুলো পশ্চিমে এবং শতম গোষ্ঠীর ভাষাগুলো পূর্বে।
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
-
যদি প্রশ্ন আসে কোন ভাষাগোষ্ঠী থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে → উত্তর হবে ইন্দো-ইউরোপীয় বা আদি আর্য।
-
যদি প্রশ্ন আসে কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে → উত্তর হবে প্রাকৃত বা পূর্ব ভারতীয় প্রাকৃত।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে কোন প্রাকৃত থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি হয়েছে → উত্তর হবে গৌড়/গৌড়ীয় প্রাকৃত।
0
Updated: 1 month ago
‘সোনালি ফসল’ - এখানে ‘সোনালি’ কোন ধরনের বিশেষণ?
Created: 1 month ago
A
গুণবাচক
B
বিশেষ্যজাত
C
ক্রিয়াদ্বিত্বজাত
D
উপাদানবাচক
বিশেষ্যজাত বিশেষণ:
বিশেষ্যজাত বিশেষণ হলো সেই বিশেষণ যা বিশেষ্যের সঙ্গে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগ করে গঠিত হয়। এটি সাধারণত বিশেষ্যের ধরণ বা উপাদানকে নির্দেশ করে।
উদাহরণ:
-
দেশীয় → দেশ + য় (সম্পদ)
-
সোনালি → সোনা + আলি (ফসল)
-
মেঘলা → মেঘ + লা (আকাশ)
অন্যান্য বিশেষণের ধরণ:
-
গুণবাচক বিশেষণ: বিশেষিত পদের গুণ বা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। উদাহরণ: চৌকস লোক, দক্ষ কারিগর, ঠান্ডা হাওয়া
-
ক্রিয়াদ্বিত্বজাত বিশেষণ: ক্রিয়াপদের দ্বিত্ব ঘটিয়ে গঠিত। উদাহরণ: যায় যায় অবস্থা, খাই খাই মলন, কাঁদো কাঁদো চেহারা
-
উপাদানবাচক বিশেষণ: বিশেষিত বস্তুর উপাদান নির্দেশ করে। উদাহরণ: বেলে মাটি, মেটে কলসি, পামুদ্রে মূর্তি
0
Updated: 1 month ago
'তাগিদ' শব্দটি কোন পদ?
Created: 2 months ago
A
বিশেষ্য
B
বিশেষণ
C
ক্রিয়া
D
অব্যয়
শব্দ ‘তাগিদ’ কোন পদ তা নির্ধারণ করার জন্য আমরা এর অর্থ ও ব্যবহার বিশ্লেষণ করি।
‘তাগিদ’ শব্দের অর্থ: কোনো কাজে উৎসাহ বা প্রেরণা দেওয়া, উদ্দীপনা বা উদ্দীপক বার্তা। উদাহরণ: “শিক্ষকের তাগিদে ছাত্ররা আরও মনোযোগী হয়ে পড়ে।”
এখানে লক্ষ্য করুন:
-
এটি কোনো ব্যক্তি, স্থান বা বস্তু নির্দেশ করে না → বিশেষ্য হতে পারে।
-
এটি কোনো গুণ বা অবস্থা বোঝায় না → বিশেষণ নয়।
-
এটি কোনো কর্ম বা কাজের ক্রিয়াকে নির্দেশ করে না → ক্রিয়া নয়।
-
এটি কোনো সাধারণ অব্যয় (যেমন: শুধু সংযোগ বা অব্যয় পদ) নয়।
সুতরাং, ‘তাগিদ’ হলো বিশেষ্য।
সংক্ষেপে ব্যাখ্যা:
‘তাগিদ’ শব্দটি এমন একটি পদ যা কোনো বস্তু বা ধারণা (উদ্দীপনা/প্রেরণা) বোঝায়। অতএব, এটি বিশেষ্য।
0
Updated: 2 months ago