তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ ব্যবহার করে অধিক দূরত্বে সংকেত পাঠানোর পন্থা আবিষ্কার করেন কে?
A
মার্কোনি
B
গ্যালিলিও
C
ম্যাক্সওয়েল
D
আইনস্টাইন
উত্তরের বিবরণ
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী অগ্রগতি সাধিত হয়, যা তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্ব ও বেতার যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের মাধ্যমে মানবসভ্যতায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে।
-
১৮৬৪ সালে বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (James Clerk Maxwell) আলোর তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্বের (Electromagnetic Theory of Light) ধারণা দেন।
-
তিনি প্রথম তড়িৎ ক্ষেত্র (Electric field) ও চুম্বক ক্ষেত্র (Magnetic field)-কে একত্রিত করে প্রমাণ করেন যে আলো মূলত একটি তাড়িতচুম্বকীয় তরঙ্গ।
-
পরবর্তীতে জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী হেনরিখ হার্টজ (Heinrich Hertz) পরীক্ষার মাধ্যমে ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বটি প্রমাণিত করেন, যা তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের অস্তিত্বকে বাস্তবে তুলে ধরে।
-
১৮৯৬ সালে গুলিয়েলমো মার্কোনি (Guglielmo Marconi) এই তাড়িতচুম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে দূরবর্তী স্থানে সংকেত প্রেরণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন, যা আধুনিক বেতার যোগাযোগের ভিত্তি স্থাপন করে।
-
একই সময়ে বাঙালি বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুও তাড়িতচুম্বকীয় তরঙ্গ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনা করেন।
-
তিনি পরবর্তীতে বেতার যন্ত্র (Wireless apparatus) উদ্ভাবন করেন এবং প্রমাণ করেন যে বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্য বা সংকেত প্রেরণ সম্ভব।
-
এইসব আবিষ্কার আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে এবং রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল ও স্যাটেলাইট যোগাযোগের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

0
Updated: 1 day ago
নিচের কোন বর্ণের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম?
Created: 2 weeks ago
A
কমলা
B
হলুদ
C
লাল
D
বেগুনি
তাড়িতচৌম্বকীয় বর্ণালির এক ক্ষুদ্র অংশ আমাদের চোখে দৃশ্যমান হয়, যাকে দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গ বা দৃশ্যমান বিকিরণ বলা হয়। এই আলোই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রঙের অনুভূতি প্রদান করে।
-
দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিসর 4×10⁻⁷ মিটার থেকে 7×10⁻⁷ মিটার।
-
ভিন্ন ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কারণে আলোর বিভিন্ন বর্ণ দেখা যায়।
-
দৃশ্যমান আলোকে সাধারণত বেগুনি, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল—এই সাতটি ভাগে বিভক্ত করা হয়।
-
বেগুনি আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম, তাই এর প্রতিসরণ, বিচ্যুতি ও বিক্ষেপণ সবচেয়ে বেশি।
-
লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি, তাই এর প্রতিসরণ, বিচ্যুতি ও বিক্ষেপণ সবচেয়ে কম।
-
তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত বেশি হবে, প্রতিসরণ, বিচ্যুতি ও বিক্ষেপণ তত কম হবে।
উৎস:

0
Updated: 2 weeks ago
কোন রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য খুবই কম?
Created: 1 week ago
A
গামা রশ্মি
B
রঞ্জন রশ্মি
C
বিটা রশ্মি
D
আলফা রশ্মি
গামা রশ্মি (γ-রশ্মি):
- গামা রশ্মি সাধারণ অর্থে কোনো কণিকা নয়, এটি সাধারণ আলোকের ন্যায় তড়িৎ চৌম্বক তরঙ্গ।
- α-কণা বা β-কণা বিচ্ছুরণের পর নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে শক্তির পূর্ণবিন্যাসের ফলে γ-রশ্মির উদ্ভব ঘটে।
- গামা রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য খুবই কম, এমনকি রঞ্জন রশ্মি অপেক্ষাও কম হয়।
- এরা প্রধানত পরোক্ষভাবে পদার্থকে আয়নিত করে। বহু দীর্ঘ পথে ঐ আয়নীকরণ সংঘটিত হয় বলে গামা রশ্মির আপেক্ষিক আয়নীকরণ ক্ষমতা খুব কম।
- রঞ্জন রশ্মির ন্যায় তা বিভিন্ন পদার্থের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারে।
- গামা রশ্মি (γ-রশ্মি) বিকিরণের ফলে মৌলের নিউক্লিয়াসের কোন পরিবর্তন ঘটে না, কারণ গামা রশ্মি (γ-রশ্মি) হলো বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
- গামা রশ্মির (γ-রশ্মি) কোন ভর বা চার্জ নেই।
উৎস: উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র, হাজারী নাগ।
গামা রশ্মি (γ-রশ্মি)
বৈশিষ্ট্য:
প্রকৃতি: গামা রশ্মি কোনো কণা নয়, বরং সাধারণ আলোর মতো এক প্রকার তড়িৎ চৌম্বক তরঙ্গ (electromagnetic wave)।
উৎপত্তি: আলফা (α) কণা বা বিটা (β) কণা নির্গত হওয়ার পর নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে শক্তির পুনর্বিন্যাসের ফলে গামা রশ্মির উদ্ভব ঘটে।
তরঙ্গদৈর্ঘ্য: এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অত্যন্ত কম, এমনকি রঞ্জন রশ্মির (X-ray) চেয়েও কম।
আয়নীকরণ ক্ষমতা:
গামা রশ্মি প্রধানত পরোক্ষভাবে (indirectly) পদার্থকে আয়নিত করে।
এটি দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার কারণে এর আপেক্ষিক আয়নীকরণ ক্ষমতা (relative ionizing power) খুব কম।
ভেদ্যতা: রঞ্জন রশ্মির মতোই গামা রশ্মি বিভিন্ন পদার্থের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে পারে (penetrate)।
নিউক্লিয়াসের উপর প্রভাব: গামা রশ্মি বিকিরণের ফলে মৌলের নিউক্লিয়াসের কোনো পরিবর্তন ঘটে না, কারণ এটি বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
ভর ও চার্জ: গামা রশ্মির কোনো ভর (mass) বা চার্জ (charge) নেই।

0
Updated: 1 week ago
শব্দ তরঙ্গের গতি কোন মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি?
Created: 2 weeks ago
A
কঠিন
B
তরল
C
শূন্য
D
বায়ুবীয়
শব্দ তরঙ্গ হলো এমন এক প্রকার তরঙ্গ যা সৃষ্টি, সঞ্চালন এবং গ্রহণের জন্য উৎস, মাধ্যম ও রিসিভারের প্রয়োজন হয়। মানুষের ক্ষেত্রে শব্দ তৈরি হয় মূলত ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাতাস গলার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় স্বরযন্ত্রে (Larynx) কম্পন ঘটানোর মাধ্যমে। স্বরযন্ত্রে দুটি ভোকাল কর্ড (Vocal Cord) থাকে, যেগুলো ভালভের মতো কাজ করে। বাতাস বের হওয়ার সময় এগুলো কাঁপলে শব্দ তৈরি হয়। বয়সের কারণে পুরুষের ভোকাল কর্ড শক্ত হয়ে যায় আর নারীর ভোকাল কর্ড তুলনামূলক কোমল থাকে। এজন্য পুরুষরা কম কম্পাঙ্কের শব্দ উৎপন্ন করে, ফলে তাদের স্বর মোটা হয়; অন্যদিকে নারীরা উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ উৎপন্ন করে, ফলে তাদের স্বর তীক্ষ্ণ শোনায়।
শব্দ তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য:
-
শব্দ একটি যান্ত্রিক তরঙ্গ, কারণ বস্তুকণার কম্পনের ফলে এটি সৃষ্টি হয় এবং সঞ্চালনের জন্য একটি স্থিতিস্থাপক মাধ্যমের প্রয়োজন হয়।
-
শব্দ একটি অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ, কারণ তরঙ্গের সঞ্চালনের দিক এবং মাধ্যমের কণার কম্পনের দিক এক।
-
শব্দ তরঙ্গের বেগ মাধ্যমের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে।
-
বায়বীয় মাধ্যমে শব্দের বেগ সবচেয়ে কম, তরলে এর বেগ বেশি এবং কঠিনে সবচেয়ে বেশি।
-
শব্দের বেগ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার ওপরও নির্ভরশীল।
-
শব্দ তরঙ্গের তীব্রতা বিস্তারের (Amplitude) বর্গের সমানুপাতিক। অর্থাৎ বিস্তার যত বেশি, তীব্রতাও তত বেশি হয়; বিস্তার কম হলে তীব্রতাও কম হয়।
-
অন্যান্য তরঙ্গের মতো শব্দ তরঙ্গও প্রতিফলন, প্রতিসরণ ও উপরিপাতন ঘটাতে সক্ষম।
উৎস:

0
Updated: 2 weeks ago