বাংলাদেশের নবীনতম নদী কোনটি?
A
পদ্মা
B
যমুনা
C
জিঞ্জিরাম
D
মেঘনা
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশে নতুন নদী সৃষ্টি হওয়ার ইতিহাস খুবই সীমিত; বরং নদী ভরাট হয়ে বা সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে মরতে থাকে। প্রশ্নটি ট্রিকি, কারণ এখানে “নবীনতম নদী” বলতে সর্বশেষ যে নদীর ধারা সৃষ্টি হয়েছে সেটাকেই বোঝানো হয়েছে।
বাস্তবে, বাংলাদেশে নতুন নদী তৈরি হওয়ার ঘটনা প্রায় ২৪০ বছর পূর্বে ১৭৮৭ সালে ঘটে, যখন তীব্র ভূমিকম্প ও বন্যার ফলে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে যমুনা নদীর সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে নতুন নদী তৈরি হওয়ার কোনো উল্লেখযোগ্য ইতিহাস নেই। তাই যমুনা নদীকে বাংলাদেশে নবীনতম নদী হিসেবে ধরা হয়।
-
যমুনা নদী:
-
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী এবং বিশ্বের দীর্ঘতম নদীর মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতপক্ষে ব্রহ্মপুত্রের নিম্নপ্রবাহকে যমুনা বলা হয়।
-
১৭৮২-১৭৮৭ সালের মধ্যে সংঘটিত ভূমিকম্প ও প্রবল বন্যার ফলে ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান যমুনা নদীর সৃষ্টি হয়।
-
ব্রহ্মপুত্র নদ হিমালয় পর্বতের কৈলাস শৃঙ্গের একটি হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়ে তিব্বত ও আসামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
-
ভূমিকম্পের কারণে ব্রহ্মপুত্র ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় দুটি শাখায় বিভক্ত হয় ⎯ একটি যমুনা নামে প্রবাহিত হয়ে গোয়ালন্দে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়, অপরটি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে ভৈরবের কাছে মেঘনায় পতিত হয়।
-
প্রধান শাখানদী: ধলেশ্বরী, বুড়িগঙ্গা।
-
উপনদীসমূহ: তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, আত্রাই, কালজানি, তোরসা, জলঢাকা, নাগর, দুপচাপিয়া, যমুনেশ্বরী, রায়ঢাক, ধবলা, ঘাঘট, বাঙালি, বড়াল, গঙ্গা, নারদ, ধবল বা দুধকুমার, তুলসী গঙ্গা, শিব বরনাই।
-
-
পদ্মা নদী:
-
বাংলাদেশের প্রধান নদী পদ্মা। গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন গঙ্গার অংশ এটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
-
পদ্মা যমুনার সাথে মিলিত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চাঁদপুরে মেঘনার সঙ্গে মিশেছে।
-
শাখানদী: মধুমতি, আড়িয়াল খাঁ, ভৈরব, মাথাভাঙ্গা, কুমার, কপোতাক্ষ, শিবসাত, পশুর, বড়াল, গড়াই, ইছামতি।
-
উপনদী: মহানন্দা, টাঙ্গন, নাগর, পুনর্ভবা, কুলিক।
-
-
জিঞ্জিরাম নদী:
-
বাংলাদেশ-ভারতের আন্তঃসীমান্ত নদী।
-
কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলায় প্রবাহিত। দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ কিলোমিটার।
-
-
মেঘনা নদী:
-
বাংলাদেশের প্রশস্ত ও গভীরতম নদী। উৎপত্তিস্থল ভারতের আসামের বরাক নদী।
-
বরাক নদী দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে সিলেটের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ⎯ সুরমা ও কুশিয়ারা।
-
কিশোরগঞ্জের ভৈরববাজারের কাছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত।
-
চাঁদপুরে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত।
-
উপনদীসমূহ: মনু, বাউলাই, গোমতী, তিতাস, কাসনি।
-
শাখানদী: জাঙ্গালিয়া, ডাকাতিয়া।
-

0
Updated: 8 hours ago
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার কোন নদী দ্বারা বিভক্ত?
Created: 4 months ago
A
নাফ
B
কর্ণফুলী
C
নবগঙ্গা
D
ভাগীরথী
• নাফ নদী (Naf River):
নাফ নদীর উৎস মিয়ানমারে। এটি বাংলাদেশের টেকনাফ ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী সীমান্ত নির্দেশ করে এবং পরে বঙ্গোপসাগরে মিশে যায়। নদীটির মোহনা বেশ প্রশস্ত, আর এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৫৬ কিলোমিটার।
• কর্ণফুলী নদী (Karnaphuli River):
এই নদী আসামের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
• নবগঙ্গা নদী (Nabaganga River):
চুয়াডাঙ্গা শহরের কাছাকাছি মাথাভাঙ্গা নদী থেকে নবগঙ্গার উৎপত্তি। ধারণা করা হয়, মাথাভাঙ্গা থেকে বেরিয়ে এটি ‘গঙ্গার নবরূপ’ হিসেবে পরিচিতি পায়, সেখান থেকেই নবগঙ্গা নামের উৎপত্তি।
• ভাগীরথী নদী (Bhagirathi River):
ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে প্রবাহিত এই নদী গঙ্গার প্রধান দুটি উৎসধারার একটি। এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র হিসেবে বিবেচিত।
তথ্যসূত্র:
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় (নবম-দশম শ্রেণি), উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 4 months ago
পুনর্ভবা, নাগর ও টাঙ্গন কোন নদীর উপনদী?
Created: 2 months ago
A
মহানন্দা
B
ভৈরব
C
কুমার
D
বড়াল
পুনর্ভবা, নাগর ও টাঙ্গন মহানন্দার উপনদী
• মহানন্দা (Mahananda):
- হিমালয়ের পাদদেশে দার্জিলিং এর নিকটবর্তী মহালড্রীম পর্বত হতে মহানন্দা নদী উৎপত্তি হয়েছে।
- ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ভারতে প্রবেশ করে। অত:পর ভারতের পূর্ণিয়া ও মালদহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাপাইনবাবগঞ্জের নিকট বাংলাদেশে পুনরায় প্রবেশ করে গোদাগাড়ির কাছে পদ্মার মিলিত হয়েছে।
- পুনর্ভবা, নাগর ও টাঙ্গন এর উপনদী।
সূত্র: ভূগোল ও পরিবেশ, নবম-দশম শ্রেণি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago
বাংলাদেশের নদীগুলোর মধ্যে সবেচেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে কোনটি?
Created: 2 months ago
A
ব্রহ্মপুত্র
B
পদ্মা
C
মেঘনা
D
যমুনা
ব্রহ্মপুত্র নদ
ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি দক্ষিণ-পশ্চিম হিমালয়ের তিব্বত অংশে অবস্থিত পবিত্র মানস সরোবর থেকে। এটি বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ নদীগুলোর মধ্যে একটি, যার বিস্তৃতি চীন (তিব্বত), ভারত এবং বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে।
তিব্বতের ভূমি অতিক্রম করে নদীটি ভারতের আসাম রাজ্যে প্রবেশ করে এবং সেখান থেকে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
এরপর দেওয়ানগঞ্জ (ময়মনসিংহ) অতিক্রম করে এটি দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নেয় এবং ভৈরববাজারের দক্ষিণে গিয়ে মেঘনা নদীতে মিলিত হয়।
বাংলাদেশ অংশে প্রবেশের পর মেঘনার সঙ্গে মিলনের আগে নদীটি পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। এই অংশে নদীটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭৭ কিলোমিটার। আর এর সামগ্রিক দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৫০ কিলোমিটার, যা শুরু হয় তিব্বতের উৎপত্তিস্থল থেকে।
আসাম অঞ্চলে ব্রহ্মপুত্রকে স্থানীয়ভাবে দিহাঙ নামে ডাকা হয়। এর মোট অববাহিকা এলাকা প্রায় ৫,৮৩,০০০ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে বাংলাদেশের অংশ ৪৭,০০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। বাংলাদেশে এই নদীটি স্বাভাবিকভাবে বিনুনি (meandering) প্রকৃতির।
এই নদীর উল্লেখযোগ্য শাখানদী হলো বংশী ও শীতলক্ষ্যা, এবং প্রধান উপনদী হিসেবে রয়েছে ধরলা ও তিস্তা।
একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক পরিবর্তন ঘটে ১৭৮৭ সালের এক ভূমিকম্পে, যার ফলে নদীর তলদেশ উঠে আসে এবং ব্রহ্মপুত্রের মূল ধারার পানি ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়। এতে একটি নতুন স্রোতধারা গঠিত হয়, যা আজকে যমুনা নদী নামে পরিচিত।
উৎস: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, SSC প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 2 months ago