ঐতিহাসিক ৬-দফা দাবিতে কোন দু'টি বিষয় কেন্দ্রিয় সরকারের হাতে রাখার প্রস্তাব ছিল?
A
বৈদেশিক বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা
B
অর্থ ও পররাষ্ট্র
C
স্বরাষ্ট্র ও পরিকল্পনা
D
প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র
উত্তরের বিবরণ
ছয় দফা কর্মসূচি ছিল বাঙালির রাজনৈতিক মুক্তির মূল দাবি ও সংগ্রামের ভিত্তি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত এই কর্মসূচি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে ওঠে। নিচে ছয় দফা কর্মসূচির মূল বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হলো—
-
ছয় দফা কর্মসূচি প্রকাশিত হয়েছিল ‘আমাদের বাঁচার দাবি: ছয়দফা-কর্মসূচি’ নামে। একে ‘বাঙালির মুক্তির সনদ’ বা ‘Magna Carta of Bengali Liberation’ বলা হয়।
-
১৯৬৬ সালের ৫–৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধীদলীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো ছয় দফা উপস্থাপন করেন।
-
ঢাকায় ফিরে ২১ ফেব্রুয়ারি, আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির বৈঠকে তিনি এই প্রস্তাব দলের অনুমোদন নেন।
-
একই বছরের ১৮–১৯ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সভায় শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এই সভাতেই ছয় দফা আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়।
-
২৩ মার্চ ১৯৬৬ তারিখে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দফা ঘোষণা করেন এবং দেশজুড়ে শুরু হয় গণআন্দোলন।
-
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী গণদাবি দমন করতে গেলে ৮ মে শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
-
এর প্রতিবাদে ৭ জুন হরতাল পালিত হয়, যেদিন পুলিশের গুলিতে ১১ জন শহীদ হন। দিনটি এখন ‘ছয়দফা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
ছয় দফা কর্মসূচির মূল দাবি সমূহ:
-
প্রথম দফা – Provincial Autonomy (প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন):
-
লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে এমন একটি Federal Parliamentary System গঠন করতে হবে, যেখানে প্রতিটি প্রদেশ সার্বভৌম হবে।
-
জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচন হবে, এবং কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভা সমান ক্ষমতাসম্পন্ন থাকবে।
-
-
দ্বিতীয় দফা – Central Government’s Powers (কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা):
-
কেবল Defense (প্রতিরক্ষা) ও Foreign Affairs (পররাষ্ট্র) বিষয় দুটি থাকবে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে।
-
বাকি সব ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে, যাতে পূর্ব পাকিস্তান নিজের অর্থনীতি ও প্রশাসন পরিচালনা করতে পারে।
-
-
তৃতীয় দফা – Currency and Monetary Policy (মুদ্রা ও অর্থনীতি):
-
পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে পৃথক দুইটি মুদ্রা চালু থাকবে, যা সহজেই বিনিময়যোগ্য হবে।
-
বিকল্পভাবে, একটি অভিন্ন মুদ্রা চালু থাকলেও দুইটি Reserve Bank থাকবে ফেডারেল ব্যাংকের অধীনে।
-
-
চতুর্থ দফা – Taxation and Revenue (রাজস্ব ও কর ব্যবস্থা):
-
সকল প্রকার কর ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
-
রাজস্বের নির্ধারিত অংশ কেন্দ্রকে প্রদান করা হবে।
-
-
পঞ্চম দফা – Foreign Trade and Exchange (বৈদেশিক বাণিজ্য):
-
দুই প্রদেশের জন্য পৃথক Foreign Exchange Accounts থাকবে।
-
কেন্দ্র নির্ধারিত হারে বৈদেশিক মুদ্রা গ্রহণ করবে।
-
-
ষষ্ঠ দফা – Regional Defense Forces (আঞ্চলিক সেনাবাহিনী):
-
প্রতিটি প্রদেশ নিজস্ব Militia and Para-military Force গঠন ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
-

0
Updated: 8 hours ago
আওয়ামী লীগের ৬-দফা পেশ করা হয়েছিল -
Created: 4 weeks ago
A
১৯৬৬ সালে
B
১৯৬৭ সালে
C
১৯৬৮ সালে
D
১৯৬৯ সালে
ছয় দফা দাবি (১৯৬৬)
পটভূমি: ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বঞ্চনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তি হিসেবে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন।
ঘটনাক্রম:
-
১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের লাহোরে বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের লক্ষ্যে ৬ দফা প্রস্তাব করেন।
-
একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি, আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয় দফা আন্দোলন বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
-
২৩ ফেব্রুয়ারি, বিরোধীদলীয় সম্মেলনে শেখ মুজিব আনুষ্ঠানিকভাবে এ দাবিগুলো পেশ করেন।
-
পরবর্তীতে, ১৮ মার্চ ১৯৬৬, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রকাশিত “আমাদের বাঁচার দাবি: ৬ দফা কর্মসূচি” শীর্ষক পুস্তিকা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
ছয় দফার মূল বিষয়বস্তু:
-
প্রথম দফা: রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও শাসনতান্ত্রিক প্রকৃতি।
-
দ্বিতীয় দফা: কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতা বণ্টন।
-
তৃতীয় দফা: মুদ্রা ও অর্থনীতি।
-
চতুর্থ দফা: রাজস্ব ও শুল্কনীতি।
-
পঞ্চম দফা: বৈদেশিক মুদ্রা ও বাণিজ্যনীতি।
-
ষষ্ঠ দফা: প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা।
এ ছয় দফাকে পূর্ব বাংলার “মুক্তির সনদ” বলা হয়, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
তথ্যসূত্র: পৌরনীতি ও সুশাসন দ্বিতীয় পত্র, এইচএসসি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

0
Updated: 4 weeks ago
ছয়-দফা দাবি প্রথম কোথায় উত্থাপন করা হয়?
Created: 2 months ago
A
ঢাকায়
B
লাহোরে
C
করাচিতে
D
নারায়ণগঞ্জে
১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারির ৫ ও ৬ তারিখে লাহোরে আয়োজিত একটি সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা উত্থাপন করেন। এই পরিকল্পনাই পরবর্তীতে ছয়-দফা দাবি নামে ইতিহাসে স্থান করে নেয়।
এরপর ২৩ মার্চ ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আনুষ্ঠানিকভাবে লাহোরের এক সংবাদ সম্মেলনে ছয়-দফা কর্মসূচি জনগণের সামনে তুলে ধরেন। এই দাবিসমূহকে বাঙালির "মুক্তির সনদ" বা "ম্যাগনাকার্টা" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, যা মূলত পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছিল।
এই ছয় দফা দাবি ছিল ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব থেকে অনুপ্রাণিত এবং পূর্ব বাংলার জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবির প্রতীক।
ছয় দফার মূল দাবি:
-
প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন: পূর্ব পাকিস্তানকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার প্রদান।
-
কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা: প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতি ছাড়া সকল ক্ষমতা প্রদেশের হাতে থাকা।
-
মুদ্রানীতি: নিজস্ব অর্থনীতি পরিচালনার জন্য পূর্ব পাকিস্তানকে পৃথক মুদ্রা বা আর্থিক ব্যবস্থা গঠনের অধিকার।
-
কর ও রাজস্ব: শুল্ক ও রাজস্ব আদায়ে প্রাদেশিক সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ।
-
বৈদেশিক বাণিজ্য: পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থ অনুযায়ী বৈদেশিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা।
-
আঞ্চলিক সামরিক ব্যবস্থা: পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নিজস্ব সেনাবাহিনী বা মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের অধিকার।
উৎস:
i) ইতিহাস ১ম পত্র, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
ii) পৌরনীতি, নবম-দশম শ্রেণি

0
Updated: 2 months ago
ঐতিহাসিক “ছয় দফা দাবিতে” যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল না-
Created: 3 weeks ago
A
শাসনতান্ত্রিক কাঠামো
B
কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা
C
স্বতন্ত্র মুদ্রা ব্যবস্থা
D
বিচার ব্যবস্থা
‘বিচার ব্যবস্থা’ ছয় দফা দাবিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দলগুলোর এক মহাসম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষার দাবিগুলোকে ভিত্তি করে একটি ঘোষণাপত্র পেশ করেন। এটি ইতিহাসে “ছয় দফা কর্মসূচি” নামে পরিচিত।
পরবর্তীতে, ২৩ মার্চ ১৯৬৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ছয় দফা দাবি প্রকাশিত হয়। এ কর্মসূচি ছিল মূলত ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব এর ধারাবাহিকতা। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য এই ছয় দফাকে বলা হয় “মুক্তির সনদ” বা “ম্যাগনা কার্টা”।
ছয় দফার মূল বিষয়বস্তু
১. প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা
২. কেন্দ্রীয় সরকারের সীমিত ক্ষমতা
৩. মুদ্রা ও অর্থনৈতিক বিষয়ে প্রাদেশিক অধিকার
৪. কর ও শুল্ক সংগ্রহে প্রাদেশিক ক্ষমতা
৫. বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রাদেশিক নিয়ন্ত্রণ
৬. প্রতিটি প্রদেশের জন্য আঞ্চলিক সেনাবাহিনী গঠনের ক্ষমতা
এখানে দেখা যায়, ‘বিচার ব্যবস্থা’ বা বিচার বিভাগের সংস্কার কোনো দফায় উল্লেখ করা হয়নি।
উৎসঃ বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 3 weeks ago