নজরুল ইসলামের সম্পাদিত পত্রিকা কোনটি?
A
মাহে নও
B
সওগাত
C
ধূমকেতু
D
কালিকলম
উত্তরের বিবরণ
‘ধূমকেতু’ পত্রিকা
১৯২২ সালে কাজী নজরুল ইসলামের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় অর্ধসপ্তাহিক পত্রিকা ‘ধূমকেতু’। এই পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বিখ্যাত পংক্তি প্রকাশিত হয়েছিল –
“আয় চলে আয় রে ধূমকেতু,
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু।”
বিশেষ করে ধূমকেতুর পূজা সংখ্যায়, অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯২২ তারিখে ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ শিরোনামে একটি সংখ্যা প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ শাসকগণ পত্রিকাটি বাজেয়াপ্ত করে এবং নজরুলকে গ্রেফতার করে।
অন্যদিকে,
-
‘সওগাত’ ছিল একটি মাসিক সচিত্র পত্রিকা, যা ১৩২৫ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণে (১৯১৮) মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীনের সম্পাদনায় কলকাতা থেকে প্রকাশ পেয়েছিল।
-
১৯৫২ সালে ঢাকায় আবদুল কাদের ‘মাহে নও’ নামে একটি মাসিক পত্রিকার সম্পাদনা করতেন।
-
‘কালিকলম’ নামক সচিত্র মাসিক সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশিত হত কলকাতার কলেজ স্ট্রিট মার্কেটের বরদা এজেন্সির মাধ্যমে, যার সম্পাদনায় ছিলেন মুরলীধর বসু, শৈলেজানন্দ মুখোপাধ্যায় ও প্রেমেন্দ্র মিত্র।
কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে:
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক অনন্য প্রতিভা। তিনি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠে বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ডাকনাম ছিল ‘দুখু মিয়া’। বাংলা সাহিত্যে তাঁকে ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে স্মরণ করা হয়। আধুনিক বাংলা গানের জগতে তিনি ‘বুলবুল’ নামেও পরিচিত।
সংগীত সংকলন:
নজরুলের লেখা সংগীত সংকলনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য —
-
চোখের চাতক
-
নজরুল গীতিকা
-
সুর সাকী
-
বনগীতি
উপন্যাসসমূহ:
-
বাঁধন-হারা
-
মৃত্যুক্ষুধা
-
কুহেলিকা
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
দুর্দিনের যাত্রী
-
যুগবাণী
-
রুদ্র মঙ্গল
সম্পাদিত পত্রিকা:
-
‘ধূমকেতু’ (১৯২২)
-
‘লাঙ্গল’ (১৯২৫), যার প্রধান পরিচালক ছিলেন নজরুল নিজেই
-
‘দৈনিক নবযুগ’, যা তিনি কমরেড মুজাফ্ফর আহমদের সাথে যৌথভাবে সম্পাদনা করেছিলেন।
তথ্যের উৎস: বাংলাপিডিয়া ও বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সংক্রান্ত গবেষণা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 3 months ago
'পূর্বাশা' পত্রিকার সম্পাদক কে ছিলেন?
Created: 1 month ago
A
রফিক আজাদ
B
সঞ্জয় ভট্টাচার্য
C
সুফিয়া কামাল
D
মোতাহার হোসেন চৌধুরী
‘পূর্বাশা’ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যপত্রিকা, যার সম্পাদক ছিলেন সঞ্জয় ভট্টাচার্য। এটি প্রথমে কুমিল্লা থেকে ১৯৩২ সালে প্রকাশিত হয়। টানা সাত বছর চলার পর বন্ধ হয়ে যায়, তবে পরে ১৯৪৩ সালে কলকাতা থেকে পুনরায় প্রকাশিত হয়। অবশেষে ১৯৭১ সালে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এটি ছিল একটি মাসিক পত্রিকা, যেখানে আধুনিক বিখ্যাত লেখকদের প্রায় সবাই লেখালেখি করেছেন।
0
Updated: 1 month ago
শিখা পত্রিকার প্রথম সংখ্যার সম্পাদক ছিলেন-
Created: 1 month ago
A
কাজী মোতাহার হোসেন
B
আবুল হুসেন
C
আবুল ফজল
D
মুন্সি আহমদ আলী
শিখা ছিল মুসলিম সাহিত্য-সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুখপত্র, যা বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
-
শিখা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৬ সালে ঢাকায়, মুসলিম সাহিত্য-সমাজের মুখপত্র হিসেবে।
-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক আবুল হুসেন ছিলেন এর প্রথম সংখ্যার সম্পাদক।
-
এটি বছরে একবার প্রকাশিত হতো।
-
প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় চৈত্র ১৩৩৩ (৮ এপ্রিল ১৯২৭ খ্রি.)।
-
পত্রিকাটি মুসলিম সাহিত্য-সমাজের পক্ষে আবদুল কাদির কর্তৃক মুসলিম হল থেকে প্রকাশিত হয় এবং মুন্সি আহমদ আলী কর্তৃক সাত রওজার (ঢাকা) ইসলামিয়া প্রেস থেকে মুদ্রিত হয়।
-
শিখার মোট পাঁচটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল।
-
দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংখ্যার সম্পাদক ছিলেন কাজী মোতাহার হোসেন।
-
প্রকাশকাল: আশ্বিন ১৩৩৫ (অক্টোবর ১৯২৮) ও ১৩৩৬ (১৯২৯)।
-
-
চতুর্থ ও পঞ্চম সংখ্যার সম্পাদক ছিলেন যথাক্রমে মোহাম্মদ আবদুর রশিদ ও আবুল ফজল।
-
প্রকাশকাল: ১৩৩৭ (১৯৩০) ও ১৩৩৮ (১৯৩১) বঙ্গাব্দ।
-
-
দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম সংখ্যা প্রকাশ করেছিলেন সৈয়দ ইমামুল হোসেন, নবাবপুর (ঢাকা)-এর মডার্ন লাইব্রেরি থেকে।
0
Updated: 1 month ago
'একুশে ফেব্রুয়ারি' প্রথম সংকলনের সম্পাদক কে?
Created: 3 months ago
A
শওকত ওসমান
B
জহির রায়হান
C
আব্দুল গণি হাজারী
D
হাসান হাফিজুর রহমান
বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ঘটে যাওয়া রক্তঝরা আন্দোলনের স্মৃতিকে ধারণ করে ১৯৫৩ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয় এক অনন্য সাহিত্য সংকলন—‘একুশে ফেব্রুয়ারী’।
এই সংকলনের সম্পাদনায় ছিলেন কবি ও সাহিত্যিক হাসান হাফিজুর রহমান এবং প্রকাশনায় ছিলেন মোহাম্মদ সুলতান। উভয়েই তৎকালীন বামপন্থি রাজনৈতিক চিন্তাধারার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এই সংকলনটি বাংলা সাহিত্যে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখে, যেখানে ২২ জন লেখক ছয়টি বিভাগে লিখেছেন—কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, গান, নক্শা ও ইতিহাস। এ গ্রন্থেই প্রথমবার প্রকাশিত হয় ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অমর গান “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো”,
যার রচয়িতা ছিলেন আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী। তবে স্বাধীন মতপ্রকাশ সহ্য করতে না পেরে পাকিস্তানি সরকার সংকলনটি প্রকাশের মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই বাজেয়াপ্ত করে।
হাসান হাফিজুর রহমান: কবি, প্রাবন্ধিক ও সম্পাদক
জন্ম: ১৯৩২, জামালপুর
বিশেষ পরিচিতি: কবি, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক
হাসান হাফিজুর রহমান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম সংকলন ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তিনি ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র’ নামক গুরুত্বপূর্ণ দলিল সংকলনেরও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর সাহিত্যকর্ম:
প্রবন্ধসমূহ:
-
আধুনিক কবি ও কবিতা
-
মূল্যবোধের জন্য
-
সাহিত্য প্রসঙ্গ
-
আলোকিত গহ্বর
কাব্যগ্রন্থ:
-
বিমুখ প্রান্তর
-
প্রতিবিম্ব
-
আর্ত শব্দাবলী
-
অন্তিম শহরের মতো
-
যখন উদ্যত সঙ্গীন
-
ভবিতব্যের বাণিজ্য তরী
-
শোকার্ত তরবারী
গল্প:
-
আরো দুটি মৃত্যু
এই সংকলন ও এর সম্পাদক বাংলা জাতিসত্তার আত্মপ্রকাশ, সাহিত্য ও ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য অধ্যায়। ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া শহিদদের স্মরণে সাহিত্যের এ মহাকাব্যিক প্রকাশ বাংলা সংস্কৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 3 months ago