বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিকের নাম কি?
A
মোতাহের হোসেন
B
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
C
মীর মশাররফ হোসেন
D
ফররুখ আহমদ
উত্তরের বিবরণ
মীর মশাররফ হোসেন: একজন পথপ্রদর্শক সাহিত্যিক
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন একজন বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যে প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক হিসেবে তার বিশেষ স্থান রয়েছে। তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন গ্রামবার্তার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ।
মশাররফ হোসেনের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ছাত্রাবস্থায় যখন তিনি সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালির গ্রামবার্তা পত্রিকার জন্য মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তীতে তিনি ‘আজিজননেহার’ এবং ‘হিতকরী’ নামক দুটি পত্রিকার সম্পাদকত্বও পালন করেন। তিনি উনিশ শতকের বাঙালি মুসলিম লেখকদের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী গদ্যকার এবং বঙ্কিমচন্দ্র যুগের প্রধান সাহিত্য ব্যক্তিত্ব।
তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মসমূহ:
নাটক
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
প্রহসন
-
টালা অভিনয়
-
এর উপায় কী
-
ফাঁস কাগজ
-
ভাই ভাই এইতো চাই
উপন্যাস
-
বিষাদ-সিন্ধু
আত্মজীবনীমূলক রচনা
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
অন্যদিকে, মুসলিম পুনর্জাগরণ আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন ফররুখ আহমদ।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
দোভাষী পুঁথি বলতে কি বোঝায়?
Created: 3 months ago
A
দুই ভাষায় রচিত পুঁথি
B
কয়েকটি ভাষার শব্দ ব্যবহার করে মিশ্রিত ভাষায় রচিত পুঁথি
C
তৈরি করা কৃত্রিম ভাষায় রচিত পুঁথি
D
আঞ্চলিক বাংলায় রচিত পুঁথি
• পুথি সাহিত্য:
- পুথি সাহিত্য আরবি, উর্দু, ফারসি ও হিন্দি ভাষার মিশ্রণে রচিত এক বিশেষ শ্রেণীর বাংলা সাহিত্য। আঠারো থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এর ব্যাপ্তিকাল। এ সাহিত্যের রচয়িতা এবং পাঠক উভয়ই ছিল মুসলমান সম্প্রদায়।
- পুথি (বা পুঁথি) শব্দের উৎপত্তি ‘পুস্তিকা’ শব্দ থেকে। এ অর্থে পুথি শব্দদ্বারা যেকোনো গ্রন্থকে বোঝালেও পুথি সাহিত্যের ক্ষেত্রে তা বিশেষ অর্থ বহন করে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিশেষ সময়ে রচিত বিশেষ ধরণের সাহিত্যই পুথি সাহিত্য নামে পরিচিত।
- হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনু. ১৬৮০-১৭৭০) আমীর হামজা রচনা করে এ কাব্যধারার সূত্রপাত করেন। আরবদেশের ইতিহাস-পুরাণ মিশ্রিত কাহিনি অবলম্বনে রচিত আমীর হামজা জঙ্গনামা বা যুদ্ধ বিষয়ক কাব্য।
- মধ্যযুগে প্রায় পাঁচশ বছর ধরে বাংলা ভাষার যে ঐতিহ্য তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে এ কাব্যের ভাষার মিল নেই। বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি, ফারসি প্রভৃতি শব্দের মিশ্রণজাত একটি ভিন্ন ভাষায় কাব্যটি রচিত। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এ কাব্যে ৩২% বিদেশি শব্দের পরিসংখ্যান দিয়েছেন। হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, ২৪ পরগনা প্রভৃতি অঞ্চলের মুসলমানদের কথ্যভাষা এর উৎস ছিল বলে মনে করা হয়।
- গরীবুল্লাহ নিজে এবং তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এ ভাষায় আরও কয়েকখানি কাব্য রচনা করেন। তাঁদের অনুসরণে পরবর্তীকালে বহু সংখ্যক মুসলমান কবি এ জাতীয় কাব্য রচনা করেন।
- এগুলির পাঠক ছিল সর্বস্তরের মুসলমান; তবে নিম্নবিত্তের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষের কাছে এর জনপ্রিয়তা ছিল সর্বাধিক।
- পুথি সাহিত্যের শব্দসম্ভার ও ভাষারীতি লক্ষ করে বিভিন্ন জন এর বিভিন্ন নামকরণ করেছেন। রেভারেন্ড জেমস লং এ ভাষাকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা’, আর এ ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
- কলকাতার বটতলার ছাপাখানার বদৌলতে প্রচার লাভ করে বলে এগুলি ‘বটতলার পুথি’ নামেও পরিচিত হয়।
- গবেষকগণ ভাষা-বৈশিষ্ট্য ও বাক্যরীতির দিক থেকে বিচার করে প্রথমে এগুলিকে দোভাষী পুথি এবং পরবর্তীকালে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ বলে অভিহিত করেন।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
বিহারীলাল চক্রবর্তীর সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
সারদামঙ্গল
B
বঙ্গসুন্দরী
C
বন্ধু বিয়োগ
D
স্বপ্নদর্শন
‘সারদামঙ্গল’ কাব্য
-
‘সারদামঙ্গল’ (১৮৭৯) কবি বিহারীলাল চক্রবর্তীর সর্বশ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ।
-
এটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল আর্যদর্শন পত্রিকায়।
-
আখ্যানকাব্য হলেও এর আখ্যানবস্তু খুব সামান্য; মূলত এটি একটি গীতিকবিতাধর্মী কাব্য।
-
কাব্যগ্রন্থটি মোট পাঁচটি সর্গে বিভক্ত।
-
‘ভোরের পাখি’ খ্যাত রোমান্টিক কবি বিহারীলাল এই কাব্যে প্রিয়তমার রূপে দেবী সারদার অনুসন্ধান করেছেন।
-
গ্রন্থটি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূল্যায়ন
রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন—
"সূর্যাস্ত কালের সুবর্ণমণ্ডিত মেঘমালার মত সারদামঙ্গলের সোনার শ্লোকগুলি বিবিধরূপের আভাস দেয়। কিন্তু কোন রূপকে স্থায়ীভাবে ধারণ করিয়া রাখে না। অথচ সুদূর সৌন্দর্য স্বর্গ হইতে একটি অপূর্ণ পূরবী রাগিণী প্রবাহিত হইয়া অন্তরাত্মাকে ব্যাকুল করিয়া তুলিতে থাকে।"
বিহারীলাল চক্রবর্তীর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ
-
স্বপ্নদর্শন
-
সঙ্গীতশতক
-
বঙ্গসুন্দরী
-
নিসর্গ সন্দর্শন
-
বন্ধু বিয়োগ
-
সারদামঙ্গল
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা এবং ‘সারদামঙ্গল’ কাব্য
0
Updated: 1 month ago
ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম সাহিত্য সংকলন কোনটি?
Created: 1 month ago
A
আরেক ফাল্গুন
B
একুশে ফেব্রুয়ারী
C
একুশের গল্প
D
আর্তনাদ
‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ সংকলন
-
এটি ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম সাহিত্য সংকলন।
-
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার জন্য ঢাকায় আত্মদান স্মরণে, ১৯৫৩ সালের মার্চে হাসান হাফিজুর রহমান ‘একুশে ফেব্রুয়ারী’ নামে সংকলনটি সম্পাদনা করেন।
-
প্রকাশক ছিলেন মোহাম্মদ সুলতান।
-
সম্পাদক ও প্রকাশক উভয়ই বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
-
সংকলনে কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প, গান, নকশা ও ইতিহাস—৬টি বিভাগে ২২ জন লেখক লিখেছেন।
-
এখানে প্রথম প্রকাশিত হয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী রচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গান।
-
প্রকাশের তিন সপ্তাহের মধ্যে পাকিস্তানের তৎকালীন সরকার সংকলনটি বাজেয়াপ্ত করে।
অন্যান্য ভাষা আন্দোলনভিত্তিক সাহিত্য
-
‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাস: জহির রায়হান রচিত, ২১ ফেব্রুয়ারি পালনের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি।
-
‘একুশের গল্প’: জহির রায়হানের ভাষা আন্দোলনভিত্তিক বিখ্যাত গল্প। প্রধান চরিত্র: তপু, রেণু ও রাহাত।
-
‘আর্তনাদ’: শওকত ওসমান রচিত ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উপন্যাস।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা এবং বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 1 month ago