বাংলা সাহিত্যে কখন গদ্যের সূচনা হয়?

Edit edit

A

 নবম শতকে 

B

ত্রয়োদশ শতকে

C

 ষোড়শ শতকে 

D

উনিশ শতকে

উত্তরের বিবরণ

img

বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও বিকাশধারা

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগ শুরুর আগ পর্যন্ত সাহিত্যমানসম্পন্ন কোনো গদ্যরচনার নির্দিষ্ট উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না। যদিও বাঙালির দৈনন্দিন জীবনযাপনে গদ্যরীতি প্রচলিত ছিল, তবু উনিশ শতকের পূর্বে তা সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারেনি।

সে সময়ে গদ্য ভাষার ব্যবহার সীমাবদ্ধ ছিল মূলত ব্যক্তিগত চিঠিপত্র, নথিপত্র, বৈষ্ণব মতবাদ সংক্রান্ত বিবরণী এবং বিদেশি খ্রিষ্টান মিশনারিদের ধর্মীয় লেখনির মধ্যে।

১৫৫৫ সালে কোচবিহারের রাজা আসামের রাজাকে যে চিঠিটি প্রেরণ করেছিলেন, সেটিকে বাংলা গদ্যের প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়।

ষোড়শ শতকে গদ্যরীতির প্রাথমিক সূত্রপাত হলেও তা দীর্ঘকাল শুধুমাত্র ব্যবহারিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়েছে, ফলে ভাষাগত উৎকর্ষতা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়নি।

যদিও বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন উদাহরণ এখানে-সেখানে পাওয়া যায়, তবু বাংলায় গদ্যের বিস্তৃত ব্যবহার শুরু হয় পর্তুগিজ পাদ্রিদের মাধ্যমে। তারা বাণিজ্য বিস্তারের আড়ালে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাংলা ভাষায় ধর্মীয় রচনার মাধ্যমে গদ্যচর্চার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেন।

বাংলা গদ্যরীতির ক্রমবিকাশকে বিশ্লেষণ করে ড. সুকুমার সেন এটিকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন:

  • প্রথম স্তর – সূচনা পর্ব: ষোড়শ শতক থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত সময়কাল।

  • দ্বিতীয় স্তর – উন্মেষ পর্ব: ১৮০০ সালে শ্রীরামপুর মিশনের কার্যক্রম শুরু থেকে ১৮৪৭ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পূর্বপর্যন্ত।

  • তৃতীয় স্তর – অভ্যুদয় পর্ব: ১৮৪৭ সালে বিদ্যাসাগরের গদ্যচর্চা শুরু থেকে ১৮৬৫ সালে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আগমনের আগ পর্যন্ত।

  • চতুর্থ স্তর – পরিণতি পর্ব: ১৮৬৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত, যার সূচনা হয়েছে বঙ্কিমচন্দ্রের মাধ্যমে।

উপরোক্ত বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট হয়, বাংলা গদ্যর সূচনা ঘটেছিল ষোড়শ শতকে, তবে সাহিত্যিক রূপে গদ্যের বিশ্লেষণাত্মক ও শৈল্পিক ব্যবহার শুরু হয় উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে।

উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম

Unfavorite

0

Updated: 1 week ago

Related MCQ

Get Our App

Download our app for a better experience.

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD