তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালীর মধ্যে গামা রশ্মি (γ-রশ্মি) সবচেয়ে বেশি শক্তি সম্পন্ন। তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালী হলো বিভিন্ন ধরনের বিকিরণের একটি বিন্যাস, যা কম্পাঙ্ক (frequency), তরঙ্গদৈর্ঘ্য (wavelength) এবং শক্তি (energy) ভিত্তিতে সাজানো হয়। শক্তি ও কম্পাঙ্ক সমানুপাতিক (E ∝ ν) এবং শক্তি ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যস্তানুপাতিক (E ∝ 1/λ)। অর্থাৎ, যে রশ্মির কম্পাঙ্ক বেশি এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম, তার শক্তি সর্বোচ্চ।
গামা রশ্মি (γ-রশ্মি):
-
গামা রশ্মি সাধারণ আলোকের মতো তড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ, কোনো কণিকা নয়।
-
α-কণা বা β-কণা বিচ্ছুরণের পর নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে শক্তির পূর্ণবিন্যাসের ফলে γ-রশ্মির উদ্ভব ঘটে।
-
তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালীর মধ্যে গামা রশ্মির কম্পাঙ্ক সর্বোচ্চ এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য সর্বনিম্ন, তাই শক্তি সর্বোচ্চ।
-
এদের ভেদন ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি, এবং জীবন্ত কোষের ডিএনএ-তে ক্ষতি করতে পারে।
-
এই কারণে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য রেডিয়েশন থেরাপিতে গামা রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
অন্যান্য রশ্মি ও তাদের শক্তি:
-
রঞ্জন রশ্মি (X-rays): গামা রশ্মির ঠিক পরেই অবস্থান। এদেরও উচ্চ শক্তি এবং ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্য রয়েছে, যা নরম টিস্যু ভেদ করে হাড়ের ছবি তুলতে সক্ষম, তবে গামা রশ্মির চেয়ে শক্তি কম।
-
অতিবেগুনী রশ্মি (Ultraviolet rays): রঞ্জন রশ্মির চেয়ে কম শক্তি সম্পন্ন এবং দৃশ্যমান আলোর চেয়ে বেশি শক্তি সম্পন্ন। সূর্যের আলোয় থাকে এবং অতিরিক্ত সংস্পর্শে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
-
মাইক্রোওয়েভ (Microwaves): বর্ণালীর সর্বনিম্ন শক্তির দিকে অবস্থান। এদের শক্তি অতিবেগুনী বা রঞ্জন রশ্মির চেয়ে অনেক কম। সাধারণত খাবার গরম বা যোগাযোগ ব্যবস্থায় (যেমন ওয়াইফাই) ব্যবহৃত হয়।