A
রামনারায়ণ তর্করত্ন
B
বিহারী লাল
C
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
D
মদনমোহন তর্কালঙ্কার
উত্তরের বিবরণ
‘পাখী-সব করে রব, রাতি পোহাইল’— এই চরণটির স্রষ্টা মদনমোহন তর্কালঙ্কার, যিনি একাধারে কবি এবং সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
• পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিল্বগ্রামে জন্মগ্রহণকারী এই গুণী মানুষটির পারিবারিক পদবী ছিল ‘চট্টোপাধ্যায়’। তবে তিনি তর্কবিদ্যায় পাণ্ডিত্যের জন্য ‘তর্কালঙ্কার’ উপাধি লাভ করে সেই নামেই অধিক পরিচিতি অর্জন করেন।
• তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহায়তায় ১৮৪৭ সালে ‘সংস্কৃত-যন্ত্র’ নামে একটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। এই ছাপাখানা থেকেই প্রথমবারের মতো ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্যগ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়।
• কাব্যপ্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি সংস্কৃত কলেজ থেকে ‘কাব্যরত্নাকর’ উপাধিও লাভ করেন।
• তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য মৌলিক সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে — রসতরঙ্গিণী এবং বাসবদত্তা।
• ১৮৫৮ সালের ৯ই মার্চ কলেরায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতা হলো ‘পাখী সব করে রব’, যেখানে ভোরবেলার প্রকৃতি, জীবনের গতি ও শিক্ষার প্রেরণা তুলে ধরা হয়েছে।
পাখী-সব করে রব, রাতি পোহাইল।
কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল।
রাখাল গরুর পাল, ল’য়ে যায় মাঠে।
শিশুগণ দেয় মন, নিজ নিজ পাঠে।
তথ্যসূত্র: বাংলা পিডিয়া এবং ‘পাখী সব করে রব’ কবিতা।

0
Updated: 1 week ago
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ক প্রথম উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ কার রচনা?
Created: 2 weeks ago
A
দীনেশচন্দ্র সেনগুপ্ত
B
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
সুকুমার সেন
‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসবিষয়ক প্রথম গ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত।
-
এই গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থটির প্রণেতা হলেন দীনেশচন্দ্র সেন।
‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ বইটিতে —
-
বঙ্গভাষা ও বঙ্গলিপির উৎস, সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষার সঙ্গে বাংলার সম্পর্ক, প্রাচীন বাংলা সাহিত্য, মধ্যযুগে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর কার্যকলাপ এবং তাদের সাহিত্যিক প্রভাব ইত্যাদি বিষয়ে সুসংবদ্ধ ও মনোগ্রাহী আলোচনা রয়েছে।
-
ইংরেজ শাসনের পূর্ববর্তী বাংলা সাহিত্য নিয়ে এতটা প্রাঞ্জল ও অনুরাগপূর্ণ ইতিহাস এর আগে কেউ রচনা করেননি।
-
এই গ্রন্থে সাহিত্যের সঙ্গে সমাজের গভীর সংযোগের দিকটি প্রথমবারের মতো বিশ্লেষণাত্মকভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 weeks ago
'ফণি-মনসা' কাব্যের রচয়িতা কে?
Created: 1 week ago
A
কাজী নজরুল ইসলাম
B
আহসান হাবীব
C
সিকান্দার আবু জাফর
D
হাসান হাফিজুর রহমান
‘ফণি-মনসা’ কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ।
- কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয়।
• কাজী নজরুল ইসলাম:
- কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।
- কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।
- বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’।
- কাজী নজরুল ইসলাম আধুনিক বাংলা গানের জগতে ‘বুলবুল’ নামে খ্যাত।
তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ:
- অগ্নি-বীণা,
- সঞ্চিতা,
- চিত্তনামা,
- মরুভাস্কর,
- সর্বহারা,
- ফণি-মনসা,
- চক্রবাক,
- সাম্যবাদী,
- ছায়ানট,
- নতুন চাঁদ,
- পুবের হাওয়া,
- জিঞ্জির,
- বিষের বাঁশি,
- দোলনচাঁপা,
- সিন্ধু হিন্দোল,
- ভাঙার গান,
- সন্ধ্যা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 1 week ago
'বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত' কার রচনা?
Created: 3 weeks ago
A
মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
B
মুহাম্মদ আবদুল হাই
C
মুনীর চৌধুরী
D
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্: একজন জ্ঞানতাপস ভাষাবিদ ও সাহিত্যসাধক
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৮৮৫–১৯৬৯) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের এক অসামান্য বাঙালি মনীষী—একাধারে ভাষাবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক এবং বহুভাষা-জ্ঞানসম্পন্ন বিদ্বান।
১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই প্রতিভাধর ব্যক্তি, যিনি পরবর্তীতে 'জ্ঞানতাপস' উপাধিতে সমাদৃত হন। তাঁকে অনেকে 'চলিষ্ণু অভিধান' নামেও আখ্যায়িত করেন, তাঁর বিস্তৃত জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের কারণে।
ড. শহীদুল্লাহ্ ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে ‘প্রফেসর ইমেরিটাস’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি—এই তিনটি ক্ষেত্রেই তাঁর প্রভাব ছিল অসামান্য। তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা করেছেন এবং সম্পাদনার কাজেও রেখেছেন অবদান। ‘আল-ইসলাম’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এবং ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনি তার সাহিত্যিক বিচক্ষণতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মুসলিম বাংলার প্রথম শিশুপত্রিকা ‘আঙুর’, যা ছিল একটি নতুন দিগন্তের সূচনা। পাশাপাশি তিনি সম্পাদনা করেন ‘দি পীস’ (ইংরেজি মাসিক), ‘বঙ্গভূমি’ (বাংলা মাসিক) এবং ‘তকবীর’ (পাক্ষিক) পত্রিকা।
বাংলা ভাষা ও জাতিসত্তা নিয়ে তাঁর চিন্তা ছিল গভীর এবং মানবিক। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তাঁর এক বিখ্যাত উক্তি:
“আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।”
এই বক্তব্য তাঁর অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল মননচর্চার প্রতিফলন।
তাঁর রচনার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’, যা ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয়। এটি বাংলা ভাষার উৎস ও বিকাশ নিয়ে গবেষণালব্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
সিন্দবাদ সওদাগরের গল্প
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
দীওয়ান-ই-হাফিজ
-
শিকওয়াহ ও জওয়াব-ই-শিকওয়াহ
-
রুবাইয়াত-ই-উমর খয়্যাম
-
Essays on Islam
-
আমাদের সমস্যা
-
পদ্মাবতী
-
বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)
-
বিদ্যাপতি শতক
-
বাংলা আদব কী তারিখ
-
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত
-
কুরআন শরীফ
-
অমরকাব্য
-
সেকালের রূপকথা
তাঁর সম্পাদিত আঞ্চলিক ভাষার অভিধান এবং ড. মুহম্মদ আবদুল হাই-এর সঙ্গে যৌথভাবে রচিত “Traditional Culture in East Pakistan” (১৯৬১) গ্রন্থ দুটি গবেষণাক্ষেত্রে অনন্য অবদান হিসেবে বিবেচিত।
উৎস: বাংলাপিডিয়া এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 3 weeks ago