'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি'-এর রচয়িতা কে?
A
সিকান্দার আবু জাফর
B
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
C
ফররুখ আহমদ
D
আহসান হাবীব
উত্তরের বিবরণ
“আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কাব্যগ্রন্থ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর শক্তিশালী কণ্ঠে উচ্চারিত কাব্যগ্রন্থ “আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮১ সালে। এতে ৩৯টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই গ্রন্থে কবি বাঙালি জাতিসত্তার শিকড় অনুসন্ধান করে সাহসী, সংগ্রামী মানুষের চেতনার এক ঐক্যবদ্ধ প্রতিচিত্র তুলে ধরেছেন। ঐতিহাসিক চেতনা ও আত্মপরিচয়ের গভীর অনুসন্ধান এই কাব্যের মূল সুর।
এই গ্রন্থের শিরোনাম কবিতাটির কিছু পংক্তি:
"আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি
তার বুকে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল—"
● আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, যিনি কেবল কবি নন, একইসঙ্গে ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তিনি ১৯৩৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম ছিল আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান।
● তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
সাত নরীর হার
-
কখনো রং কখনো সুর
-
কমলের চোখ
-
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
-
সহিষ্ণু প্রতীক্ষা
-
প্রেমের কবিতা
-
নির্বাচিত কবিতা
-
আমার সকল কথা
-
মসৃণ কৃষ্ণ গোলাপ ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) ও বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'কাঁঠালপাড়া'য় জন্মগ্রহণ করেন কোন লেখক?
Created: 2 months ago
A
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
B
সুভাষ মুখোপাধ্যায়
C
কাজী ইমদাদুল হক
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
-
তিনি ১৮৩৮ সালে চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁঠালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন একজন ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক এবং বাংলা নবজাগরণের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।
-
তাকে বাংলা উপন্যাসের পিতা বলা হয়।
-
তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ললিতা তথা মানস’ ১৮৫৬ সালে প্রকাশিত হয়।
-
প্রথম উপন্যাস ‘রাজমোহনস ওয়াইফ’ ইংরেজিতে লিখিত।
-
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সফল উপন্যাস ‘দুর্গেশনন্দিনী’ ১৮৬৫ সালে তিনি রচনা করেন।
-
তার বিখ্যাত ত্রয়ী উপন্যাস হলো — আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী, এবং সীতারাম।
-
তিনি ১৮৯৪ সালে মারা যান।
তার অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে:
কপালকুণ্ডলা, মৃণালিনী, বিষবৃক্ষ, ইন্দিরা, যুগলাঙ্গুরীয়, চন্দ্রশেখর, রাধারানী, রজনী, কৃষ্ণকান্তের উইল, রাজসিংহ ইত্যাদি।
তার লেখা প্রবন্ধের কিছু নাম:
লোকরহস্য, কমলাকান্তের দপ্তর, বিবিধ সমালোচনা, সাম্য, কৃষ্ণচরিত্র, ধর্মতত্ত্ব অনুশীলন ইত্যাদি।
অন্য কিছু উল্লেখযোগ্য লেখক:
-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর হুগলি জেলার দেবানন্দপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
-
সুভাষ মুখোপাধ্যায় (১৯১৯-২০০৩) কবি ও রাজনীতিবিদ, ১৯১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্ম।
-
কাজী ইমদাদুল হক ১৮৮২ সালে খুলনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago
'কেন পান্থ ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ?' কার লেখা?
Created: 2 months ago
A
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
B
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
C
কামিনী রায়
D
যতীন্দ্রমোহন বাগচী
"কেন পান্থ ক্ষান্ত হও হেরি দীর্ঘ পথ?" পঙ্ক্তি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার এর 'সদ্ভাবশতক' কাব্যগ্রন্থের 'দুঃখ বিনা সুখ হয় না' কবিতা থেকে নেয়া হয়েছে।
কবিতাটি নিম্নরূপ-
কি কারণ, দীন! তব মলিন বদন ?
যতন করহ লাভ হইবে রতন।
কেন পান্থ! ক্ষান্ত হও হেরে দীর্ঘ পথ ?
উদ্যম বিহনে কার পূরে মনােরথ ?
কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে,
দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?
মনে ভেবে বিষম-ইন্দ্রিয়-রিপু-ভয়,
হাফেজ! বিমুখ কেন করিতে প্রণয়?
-----------------------
• কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার:
- সাহিত্যিক, সাংবাদিক কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের জন্ম ১৮৩৪ সালের ১০ জুন খুলনা জেলার সেনহাটি গ্রামে এক বৈদ্য পরিবার।
- ঈশ্বর গুপ্তের উৎসাহে সংবাদ সাধুরঞ্জন ও সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়।
- কৃষ্ণচন্দ্রের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ সদ্ভাবশতক প্রকাশিত হয় ১৮৬১ সালে।
- নীতি ও উপদেশমূলক এ কাব্যটি পারস্য কবি হাফিজ ও সাদীর কাব্যাদর্শে রচিত।
- তাঁর কবিতার অনেক পঙ্ক্তি প্রবাদবাক্যস্বরূপ।
যেমন: ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে’ ইত্যাদি।
উৎস: 'দুঃখ বিনা সুখ হয় না', কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago
'বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত' রচনা করেছেন?
Created: 1 week ago
A
সুকুমার সনে
B
সুনীতি কুমার চট্টপাধ্যায়
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
দানীউল হক
বাংলা ভাষার উৎপত্তি, বিকাশ ও ঐতিহাসিক বিবর্তন নিয়ে বিশদ গবেষণামূলক আলোচনা পাওয়া যায় মুহম্মদ শহীদুল্লাহ রচিত ‘বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থে। এই গ্রন্থটি বাংলা ভাষাতত্ত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, যেখানে তিনি ভাষার উৎস, গঠনপ্রণালী ও পরিবর্তনের ধারা বিশ্লেষণ করেছেন প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় দলিলের আলোকে।
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একজন বিশিষ্ট ভাষাতত্ত্ববিদ ও দার্শনিক চিন্তক ছিলেন, যিনি ভাষার ঐতিহাসিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে বাংলা ভাষার স্বকীয়তা তুলে ধরেন।
গ্রন্থটির মূল দিকগুলো হলো:
-
বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও ধারা: তিনি দেখিয়েছেন, বাংলা ভাষার উৎস হলো ইন্দো-আর্য ভাষাপরিবারের পূর্ব প্রাকৃত ও অপভ্রংশ শাখা, বিশেষত মাগধী প্রাকৃত। এ ভাষা ক্রমে রূপান্তরিত হয়ে আধুনিক বাংলা রূপ লাভ করে।
-
প্রাচীন ভাষার নিদর্শন: তিনি প্রমাণ করেছেন যে বাংলা ভাষার প্রাচীন রূপ পাওয়া যায় চর্যাপদ-এ, যেখানে আদি বাংলা ভাষার ধ্বনি, রূপ ও বাক্যগঠন স্পষ্ট।
-
ভাষা ও জাতিসত্তার সম্পর্ক: তাঁর মতে, ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং জাতির সংস্কৃতি, ইতিহাস ও পরিচয়ের বাহক। বাংলা ভাষার বিকাশে ধর্ম, রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থার প্রভাবও তিনি বিশ্লেষণ করেন।
-
তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বের প্রয়োগ: শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডার ও ধ্বনিগত গঠন বিশ্লেষণে সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, আরবি, ফারসি ও ইংরেজি প্রভাব নির্ণয় করেছেন। এতে বোঝা যায় বাংলা একটি সংকর ভাষা, যা বহু ভাষার সংস্পর্শে সমৃদ্ধ হয়েছে।
-
আঞ্চলিক উপভাষা বিশ্লেষণ: তিনি বাংলা ভাষার নানা উপভাষা—রাঢ়ী, বাঙ্গালা, কামরূপী ও বরেন্দ্রী উপভাষার বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করে দেখান কিভাবে এগুলোর সংমিশ্রণেই আধুনিক মানক বাংলা গঠিত হয়েছে।
-
ভাষার বিকাশধারা: গ্রন্থে তিনি ধ্বনি, রূপ, বাক্য ও অর্থবিকাশের মাধ্যমে ভাষার ধারাবাহিক পরিবর্তন ব্যাখ্যা করেছেন। এতে ভাষার প্রাকৃতিক পরিবর্তন প্রক্রিয়া ও সামাজিক প্রভাব উভয়ই স্পষ্ট হয়।
-
বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক পর্যায় বিভাজন: মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষাকে প্রধানত তিনটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন—প্রাচীন বাংলা (৯৫০–১২০০ খ্রি.), মধ্য বাংলা (১২০১–১৮০০ খ্রি.) ও আধুনিক বাংলা (১৮০১ খ্রি. থেকে বর্তমান)।
সবশেষে তিনি বাংলা ভাষাকে একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা কেবল সংস্কৃতের শাখা নয় বরং নিজস্ব ইতিহাস ও সাহিত্যিক ঐতিহ্য বহন করে। তাই বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ বিষয়ক প্রামাণ্য গবেষণার ক্ষেত্রে ‘বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত’ আজও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত।
উ: গ) মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
ব্যাখ্যা: তিনি বাংলা ভাষার ইতিহাস, ধ্বনি, রূপ ও উৎস বিশ্লেষণ করে বাংলা ভাষাতত্ত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছেন তাঁর ‘বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত’ গ্রন্থে।
0
Updated: 1 week ago