সাপ্তাহিক 'সুধাকর'-এর সম্পাদক কে?
A
মুন্সি মোহাম্মদ রিয়াজউদ্দিন আহমদ
B
মুন্সি মোহাম্মদ মেহের উল্লা
C
শেখ আব্দুর রহিম
D
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
উত্তরের বিবরণ
‘সুধাকর’ পত্রিকা
- সুধাকর কলকাতা থেকে ১৮৮৯ সালের ৮ নভেম্বর (১২৯৬ বঙ্গাব্দের ২৩ কার্তিক) প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা।
- রেয়াজুদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ রেয়াজউদ্দীন আহমদ ও শেখ আবদুর রহিমের প্রচেষ্টায় এটি প্রকাশিত হয় এবং এর প্রথম সম্পাদক ছিলেন শেখ আবদুর রহিম (মতান্তরে মোহাম্মদ রেয়াজউদ্দীন আহমদ)।
- পত্রিকা প্রকাশের লক্ষ ও উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের অতীত গৌরব ও ইসলামের মাহাত্ম্য প্রচার করা। এক পর্যায়ে এটি মিহির ও সুধাকর নামে প্রকাশিত হয়।
- খ্রিস্টান মিশনারিদের পরিচালিত খ্রিস্টীয় বান্ধব পত্রিকার সঙ্গে সুধাকরের ধর্মবিষয়ে বহু বিতর্ক হয়; এমনকি গো-হত্যার ব্যাপারে টাঙ্গাইলের মৌলবি নইমুদ্দীনের পক্ষে এবং মীর মশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে এটি প্রচারাভিযান চালায়। ধর্ম, সমাজ, ইতিহাস, ঐতিহ্য ইত্যাদি ছাড়াও সাহিত্যবিষয়ক মৌলিক রচনাও এতে প্রকাশিত হতো।
- ১৯১০ সাল পর্যন্ত এর প্রকাশনা অব্যাহত ছিল।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত সর্বপ্রথম যে পত্রিকায় প্রকাশিত হয় -
Created: 1 month ago
A
ঢাকা প্রকাশ
B
সমকাল
C
বঙ্গদর্শন
D
শিখা
সঠিক উত্তর হলো গ) বঙ্গদর্শন। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হলো।
-
রচনা ও প্রেক্ষাপট:
• গানটি রচনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
• বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে স্বদেশী আন্দোলনের সময় গানটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়।
• ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী রাজনীতিক, স্বদেশী কর্মী ও বিপ্লবীরা বাঙালি জনগণকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে গানটি প্রচার করেন।
• গানটি ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গ প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে রচিত। -
সঙ্গীত ও প্রকাশনা:
• প্রথম ১০ পঙ্ক্তি বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত।
• গানটি রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’–এর স্বরবিতান অংশভুক্ত।
• সুর করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তবে এতে বাউল গগন হরকরার সুরের প্রভাব পড়েছিল।
• প্রথম প্রকাশ: ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায়, ১৩১২ বঙ্গাব্দ (১৯০৫)। -
‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা:
• প্রথম প্রকাশ: ১৮৭২, সম্পাদক: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
• প্রধান লেখক: বঙ্কিমচন্দ্র; নিয়মিত লেখক ছিলেন গঙ্গাচরণ, রামদাস সেন, অক্ষয় সরকার, চন্দ্রনাথ বসু প্রমুখ।
• বঙ্কিমচন্দ্রের পরে সম্পাদকত্বে ছিলেন সঞ্জীবচন্দ্র ও শ্রীশচন্দ্র। -
অন্য পত্রিকাসমূহ (যেখানে গান প্রকাশিত হয়নি):
• ঢাকা প্রকাশ: ১৮৬১ সালে প্রথম প্রকাশিত, সম্পাদক: কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার।
• সমকাল: ১৯৫৭ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত মাসিক সাহিত্যপত্র, সম্পাদক: সিকান্দার আবু জাফর।
• শিখা: ১৯২৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত মুসলিম সাহিত্য-সমাজের মুখপত্র, প্রথম সম্পাদক: আবুল হুসেন।
অতএব, ‘আমার সোনার বাংলা’ প্রথম প্রকাশিত হয় বঙ্গদর্শন পত্রিকায়, যা সঠিক উত্তরকে নিশ্চিত করে।
0
Updated: 1 month ago
জোশুয়া মার্শম্যান কোন পত্রিকার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন?
Created: 3 weeks ago
A
সমাচার দর্পণ
B
সমাচার সভারাজেন্দ্র
C
সম্বাদ কৌমুদী
D
বাঙ্গাল গেজেট
জোশুয়া মার্শম্যান ছিলেন বাংলার প্রারম্ভিক যুগের সংবাদপত্র আন্দোলন, ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রাচ্যবিদ্যা চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ। তিনি কেবল একজন মিশনারি নন, বরং একজন পণ্ডিত, চিন্তাবিদ ও শিক্ষাব্রতী ব্যক্তিত্ব, যিনি বাংলা সাংবাদিকতা ও ধর্মীয় জ্ঞানচর্চায় গভীর প্রভাব ফেলেছিলেন।
-
জোশুয়া মার্শম্যান ছিলেন একজন পণ্ডিত, প্রাচ্যবিদ্যাবিশারদ ও ধর্মতাত্ত্বিক।
-
তিনি শ্রীরামপুর মিশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, যিনি উইলিয়াম কেরি ও উইলিয়াম ওয়ার্ডের সঙ্গে একত্রে শিক্ষা ও সংবাদমাধ্যমের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
-
তিনি ভারতে সংবাদপত্রের অগ্রদূতদের অন্যতম এবং ১৮১৮ সালে প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক ‘সমাচার দর্পণ’ প্রকাশে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
-
এ ছাড়া তিনি ‘Friends of India’ নামে একটি ইংরেজি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন, যার পরবর্তীকালে সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব নেন তাঁর পুত্র জন ক্লার্ক মার্শম্যান।
-
১৮২১ সালে তিনি শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষার উদ্দেশ্যে ‘School Dialogues; or Lessons on the Commandments and the Way of Salvation’ নামক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
-
একই বছরে তিনি প্রথমবারের মতো চীনা ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করেন, যা ১৮২১ সালে শ্রীরামপুর প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।
-
তিনি আরও কিছু খ্রিস্টীয় প্রার্থনাসঙ্গীত রচনা করেন, যা পরবর্তীকালে প্রচার কাজে ব্যবহৃত হয়।
-
তাঁর প্রচেষ্টায় শিক্ষা, ধর্মপ্রচার ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে চিন্তাবিকাশের এক নতুন যুগের সূচনা ঘটে।
জোশুয়া মার্শম্যান সম্পৃক্ত প্রধান পত্রিকা ও প্রকাশনা:
-
সমাচার দর্পণ – প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক সংবাদপত্র (১৮১৮)।
-
দিগদর্শন – শিক্ষামূলক ও সাহিত্যধর্মী পত্রিকা।
-
Friends of India – ইংরেজি ভাষার মাসিক পত্রিকা।
বাংলা সাংবাদিকতার ইতিহাসে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
-
মুসলমান সম্পাদিত প্রথম সংবাদপত্র: সমাচার সভারাজেন্দ্র — সম্পাদক শেখ আলিমুল্লাহ; প্রকাশিত হতো কলকাতার কলিঙ্গা থেকে। এটি ছিল বাংলা-পারসি দ্বিভাষিক পত্রিকা।
-
ব্রাহ্মণসেবধি ও সম্বাদ কৌমুদী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন রাজা রামমোহন রায়।
-
রাজা রামমোহন রায়ের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত ‘বাঙ্গাল গেজেট’ ছিল একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা, যার সম্পাদক ছিলেন গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য।
জোশুয়া মার্শম্যানের অবদান শুধু সাংবাদিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; তিনি ভারতীয় সমাজে শিক্ষা, যুক্তিবাদ ও মুদ্রণসংস্কৃতির প্রসারে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন, যার ফলেই বাংলায় আধুনিক সংবাদপত্র ও শিক্ষা আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
0
Updated: 3 weeks ago
'বঙ্গদর্শন' পত্রিকার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন?
Created: 3 months ago
A
প্যারীচাঁদ মিত্র
B
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
C
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
D
প্রমথ চৌধুরী
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ১৮৭২ সালে প্রকাশিত ‘বঙ্গদর্শন’ ছিল উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
বাংলা গদ্যভাষার বিকাশে এ পত্রিকার অবদান অনস্বীকার্য। যদিও এটি প্রথম পর্যায়ে মাত্র চার বছর (১৮৭২–১৮৭৬) নিয়মিত প্রকাশ পেয়েছিল, তবুও তার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী।
‘বঙ্গদর্শন’-এর ভাষা ছিল উৎকর্ষমান সাধু বাংলা, যা তৎকালীন শিক্ষিত সমাজের রুচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই পত্রিকায় সাহিত্য, সমাজনীতি, ধর্মতত্ত্ব, দর্শন, রাজনীতি ও বিজ্ঞানের উপর বহু তথ্যবহুল ও বিশ্লেষণধর্মী রচনা প্রকাশিত হতো।
এর মাধ্যমে বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজ প্রথম আধুনিক চেতনার প্রকাশের সুযোগ পায়। তাই একে শিক্ষিত বাঙালির প্রথম মুখপত্র বললে অত্যুক্তি হয় না।
বঙ্কিমচন্দ্র ছাড়াও গঙ্গাচরণ, রামদাস সেন, অক্ষয় কুমার সরকার ও চন্দ্রনাথ বসুর মতো জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিত্বরা নিয়মিত এই পত্রিকায় লেখালেখি করতেন।
পরবর্তীকালে বঙ্কিমচন্দ্রের দুই ভাই—সঞ্জীবচন্দ্র ও শ্রীশচন্দ্র—কিছুদিন এই পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন।
দীর্ঘ বিরতির পর, ২০০০ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের নৈহাটিতে অবস্থিত বঙ্কিমভবন গবেষণাকেন্দ্র ‘বঙ্গদর্শন’-কে নতুন আঙ্গিকে ষাণ্মাসিক পত্রিকা হিসেবে পুনঃপ্রকাশ করছে। এই নবযাত্রা ‘বঙ্গদর্শন’-এর ঐতিহ্য ও তাৎপর্যকে আরও প্রসারিত করছে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা - ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago