লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতা কে?
A
আলাওল
B
কোরেশী মগন
C
দৌলত কাজী
D
সৈয়দ সুলতান
উত্তরের বিবরণ
লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতা দৌলত কাজী
দৌলত কাজী ছিলেন মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের একজন প্রসিদ্ধ কবি এবং তিনি লৌকিক কাহিনীর প্রথম রচয়িতার মর্যাদা অর্জন করেছেন। ষোল শতকে তার সৃজনশীলতা বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।
তার প্রধান কাব্যগ্রন্থ হলো "সতীময়না ও লোরচন্দ্রানী," যা তিন খণ্ডে বিভক্ত। এই কাব্যে সামন্তপতি লোর ও অপর একটি সামন্তবধূ চন্দ্রানীর মধ্যে পরকীয়া প্রেমের গল্প মানবিক এবং সামাজিক জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরে মানব হৃদয়ের অনুভূতিকে স্পর্শ করে।
দৌলত কাজীর এই রচনা মধ্যযুগীয় সাহিত্যে মানব জীবনের বর্ণাঢ্য রস এবং সংবেদনশীলতা ফুটিয়ে তোলে।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম; বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত' কে রচনা করেন?
Created: 3 months ago
A
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
সুকুমার সেন
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
মুহম্মদ এনামুল হক
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান বাঙালি ব্যক্তিত্ব, যিনি ভারতের উপমহাদেশে দার্শনিক, শিক্ষক এবং বহুভাষাবিদ হিসেবে সুপরিচিত।
‘জ্ঞানতাপস’ নামে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এছাড়াও, তাঁকে ‘চলিষ্ণু অভিধান’ নামেও অভিহিত করা হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাতিসত্তা সম্পর্কে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিল, “আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার থেকেও অধিক সত্য আমরা বাঙালি।”
এই উক্তি বাঙালির ঐক্য ও পরিচয়ের গুরুত্বকে রূপায়িত করে। ১৯৫৯ সালে তিনি ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ নামক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন, যা বাংলা ভাষার ইতিহাস ও বিকাশকে তুলে ধরে।
ড. শহীদুল্লাহর ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ হলো—‘ভাষা ও সাহিত্য’, ‘বাঙ্গালা ব্যাকরণ’, ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ ইত্যাদি। পাশাপাশি তিনি বাংলা একাডেমির ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'আবোল-তাবোল' কার লেখা?
Created: 3 months ago
A
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী
B
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
C
সুকুমার রায়
D
সত্যজিৎ রায়
'আবোল-তাবোল'-এর রচয়িতা সুকুমার রায়
বাংলা শিশুসাহিত্যের এক অনন্য নাম সুকুমার রায়। তিনি ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ ও প্রযুক্তিনিপুণ ব্যক্তিত্ব। এই বিশিষ্ট রায় পরিবারের আদি নিবাস ছিল ময়মনসিংহ জেলার মসুয়া গ্রামে।
সুকুমার রায় শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন ব্যঙ্গ-রসিকতার এক নিপুণ কারিগর। তাঁর পুত্র সত্যজিৎ রায় পরবর্তীতে বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার হিসেবে অস্কার লাভ করেন।
সাহিত্যকর্মসমূহ:
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্ম মূলত কিশোর ও শিশু পাঠকদের জন্য হলেও প্রাপ্তবয়স্করাও তাঁর রচনায় বিমোহিত হন।
কবিতা সংকলন:
-
আবোল-তাবোল (ব্যঙ্গ ও কল্পনাপ্রবণ ছড়ার এক অমর সংকলন)
-
খাই খাই (খাবার নিয়ে মজার ছড়াসমূহ)
গল্প ও সংকলন:
-
হযবরল – এক স্বপ্নময় ও রহস্যঘেরা গল্প
-
পাগলা দাশু – কৌতুক ও ব্যঙ্গ-রসের সংমিশ্রণে ভরপুর একটি গল্প সংকলন
নাট্যকর্ম:
-
চলচিত্তচঞ্চরী – সমাজ ও মনস্তত্ত্বভিত্তিক নাটক
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা:
-
অবাক জলপান
-
লক্ষণের শক্তিশেল
-
হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি
-
ঝালাপালা ও অন্যান্য নাটক
-
বহুরূপী
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্মে রস, ছন্দ, ব্যঙ্গ ও কল্পনার এক অপরূপ মিশ্রণ রয়েছে যা বাংলা সাহিত্যে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও প্রিয়।
উৎস:
ড. সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা গ্রন্থ এবং ‘হ-য-ব-র-ল’ গ্রন্থের ভূমিকা।
0
Updated: 3 months ago
'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি'-এর রচয়িতা কে?
Created: 3 months ago
A
সিকান্দার আবু জাফর
B
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
C
ফররুখ আহমদ
D
আহসান হাবীব
“আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” কাব্যগ্রন্থ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর শক্তিশালী কণ্ঠে উচ্চারিত কাব্যগ্রন্থ “আমি কিংবদন্তির কথা বলছি” প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮১ সালে। এতে ৩৯টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এই গ্রন্থে কবি বাঙালি জাতিসত্তার শিকড় অনুসন্ধান করে সাহসী, সংগ্রামী মানুষের চেতনার এক ঐক্যবদ্ধ প্রতিচিত্র তুলে ধরেছেন। ঐতিহাসিক চেতনা ও আত্মপরিচয়ের গভীর অনুসন্ধান এই কাব্যের মূল সুর।
এই গ্রন্থের শিরোনাম কবিতাটির কিছু পংক্তি:
"আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি
তার বুকে রক্তজবার মতো ক্ষত ছিল—"
● আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, যিনি কেবল কবি নন, একইসঙ্গে ছিলেন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তিনি ১৯৩৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম ছিল আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান।
● তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
সাত নরীর হার
-
কখনো রং কখনো সুর
-
কমলের চোখ
-
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
-
সহিষ্ণু প্রতীক্ষা
-
প্রেমের কবিতা
-
নির্বাচিত কবিতা
-
আমার সকল কথা
-
মসৃণ কৃষ্ণ গোলাপ ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) ও বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago