কোন পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই আধান এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে প্রবাহিত হতে পারে?
A
তামা
B
কাচ
C
প্লাস্টিক
D
জার্মেনিয়াম
উত্তরের বিবরণ
আধান বা তড়িৎ প্রবাহের ক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে পদার্থকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়—পরিবাহী, অর্ধপরিবাহী এবং অপরিবাহী। এই পদার্থগুলোর নিজস্ব ভৌত ও বৈদ্যুতিক বৈশিষ্ট্যের জন্যই তারা আধুনিক ইলেকট্রনিক্স এবং তড়িৎ প্রকৌশলে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা পালন করে।
পরিবাহী পদার্থ (Conductor)
পরিবাহী পদার্থ হলো সেই সকল উপাদান, যার মধ্য দিয়ে আধান বা তড়িৎ খুব সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হতে পারে। এটি মূলত মুক্ত ইলেকট্রনের প্রাচুর্যের কারণে ঘটে।
সংজ্ঞা: যে পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।
উদাহরণ: রূপা (সর্বোত্তম পরিবাহী), তামা, লোহা, এবং সকল ধাতব পদার্থ।
মুক্ত ইলেকট্রন: এই পদার্থগুলোতে বিপুল সংখ্যক মুক্ত ইলেকট্রন থাকে, যা তড়িৎ প্রবাহে সাহায্য করে।
তাপমাত্রার প্রভাব: পরিবাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে এর তড়িৎ প্রবাহের ক্ষমতা বা পরিবাহিতা হ্রাস পায়, অর্থাৎ রোধ বৃদ্ধি পায়।
অর্ধপরিবাহী পদার্থ (Semiconductor)
অর্ধপরিবাহী পদার্থগুলো হলো পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থের বৈশিষ্ট্যের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা বিশেষ উপাদান। আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির (যেমন: কম্পিউটার, মোবাইল) মূল ভিত্তি হলো এই অর্ধপরিবাহী।
সংজ্ঞা: যে পদার্থের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা পরিবাহীর চেয়ে অনেক কম, কিন্তু অপরিবাহীর চেয়ে অনেক বেশি।
উদাহরণ: জার্মেনিয়াম (Ge) এবং সিলিকন (Si)।
পরিবাহিতার বৈশিষ্ট্য: এদের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতাকে তাপমাত্রা বা অন্যান্য উপাদানের ডোপিং (Doping) এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
তাপমাত্রার প্রভাব: অর্ধপরিবাহীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে এর তড়িৎ প্রবাহের ক্ষমতা বা পরিবাহিতা বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ রোধ হ্রাস পায়। এটি পরিবাহীর বৈশিষ্ট্যের সম্পূর্ণ বিপরীত।
অপরিবাহী পদার্থ (Insulator)
অপরিবাহী পদার্থকে অনেক সময় অন্তরক বা বিদ্যুৎ অপরিবাহী পদার্থও বলা হয়। এই পদার্থগুলো আধান প্রবাহে প্রায় সম্পূর্ণ বাধা দেয়।
সংজ্ঞা: যে পদার্থের মধ্য দিয়ে আধান বা তড়িৎ কোনোভাবেই প্রবাহিত হতে পারে না।
উদাহরণ: কাচ, কাঠ, প্লাস্টিক, রাবার, এবং প্রায় সকল অধাতব পদার্থ।
মুক্ত ইলেকট্রন: অপরিবাহী পদার্থে তড়িৎ পরিবহণের জন্য কোনো মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না, তাই এটি বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না।

0
Updated: 1 day ago