'আমি যখন জেলে যাই তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস।'- এখানে 'ওর' বলতে শেখ মুজিবুর রহমান কাকে বুঝিয়েছেন?

A

শেখ নাসেরকে

B

শেখ কামালকে

C

শেখ হাসিনাকে

D

শেখ রেহেনাকে

উত্তরের বিবরণ

img

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতির জনক হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

শেখ লুৎফর রহমান ও মোসাম্মৎ সাহারা খাতুনের চার কন্যা ও দুই পুত্রের মধ্যে তিনি তৃতীয় সন্তান। তার বাবা-মা তাকে ডাকতেন খোকা বলে, এবং তার শৈশবকাল কাটে টুঙ্গিপাড়ায়।

  • বঙ্গবন্ধুর রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোচনামচা, এবং আমার দেখা নয়াচীন

অসমাপ্ত আত্মজীবনী:

  • জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রচিত এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী ২০১২ সালে প্রকাশিত হয়।

  • বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী ও সহধর্মিণীর অনুরোধে তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে রাজবন্দি থাকা অবস্থায় এই আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন।

  • এতে তিনি জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ এবং গভীর উপলব্ধি সহজ ও সরল ভাষায় তুলে ধরেছেন।

  • বইতে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অপশাসন, বিনাবিচারে বছরের পর বছর রাজবন্দি থাকা, ১৯৫২ সালের জেলজীবন এবং জেল থেকে মুক্তি লাভের স্মৃতি বর্ণিত হয়েছে।

  • বইতে উল্লেখ রয়েছে: 'আমি যখন জেলে যাই তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস।' এখানে 'ওর' বলতে বঙ্গবন্ধু শেখ কামালকে বোঝিয়েছেন।

  • ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফরিদপুর জেলখানায় অনশনরত অবস্থায় আটক ছিলেন

  • ২৭ ফেব্রুয়ারি তার মুক্তির আদেশ জেলখানায় পৌঁছায়, এবং প্রায় ২৭–২৮ মাস পর তিনি পরিবারের কাছে ফিরে আসেন।

  • এখানে পরিবার বলতে তাঁর বাবা-মা ছাড়াও স্ত্রী রেণু ও দুই সন্তান— হাসিনা ও কামাল বোঝানো হয়েছে।

  • দীর্ঘদিন পরে শেখ কামালের সঙ্গে সাক্ষাতের মুহূর্ত এবং তার প্রভাবকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু উক্তিটি লিখেছেন।

‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে অংশবিশেষ:

  • একদিন সকালে বঙ্গবন্ধু ও রেণু বিছানায় বসে গল্প করছিলেন। হাচু ও কামাল নিচে খেলছিল। হাচু মাঝে মাঝে খেলা থামিয়ে বাবার কাছে আসে এবং “আব্বা” বলে ডাকে। কামাল চেয়েছিল নিজেই “আব্বা” বলার সুযোগ পেতে। বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, “আমি তো তোমারও আব্বা,” কিন্তু কামাল তখন কাছে আসতে চাইছিল না। এতে বোঝা যায়, দীর্ঘদিন নিজের সন্তানকে না দেখলে তাকে ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক।

  • বঙ্গবন্ধু লেখেন, “আমি যখন জেলে যাই তখন ওর বয়স মাত্র কয়েক মাস। রাজনৈতিক কারণে একজনকে বিনা বিচারে বন্দি করা এবং তার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে দূরে রাখা কত বড় জঘন্য কাজ তা কে বুঝবে?”

  • তিনি ব্যক্ত করেন যে মানুষ স্বার্থের জন্য অন্ধ হয়ে যায়। স্বাধীনতার জন্য সামান্য আন্দোলনও করার পর, ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে বঙ্গবন্ধু ও তার সহকর্মীরা বছরের পর বছর জেল খাটছেন। তিনি আরও বলেন, “ভয় আমি পাই না, আর মনও শক্ত হয়েছে।”

Unfavorite

0

Updated: 1 day ago

Related MCQ

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD