'তুমি মা কল্পতরু, আমরা সব পোষাগরু'- এই কবিতাংশটির রচয়িতা কে?
A
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
B
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
C
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
D
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
উত্তরের বিবরণ
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত উনিশ শতকের প্রথমার্ধের একজন কবি ছিলেন, যিনি তাঁর কবিতায় হালকা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপকে প্রধান করে তুলেছিলেন। তাঁর লেখায় কল্পনার স্থান তেমন বড় নয়,
এবং তিনি আধুনিকতার প্রভাব অনুভব করলেও সেটিকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করতে পারেননি। তিনি শুধু একজন কবি নন, বরং সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
-
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন 'সংবাদ প্রভাকর' পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। এটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম দৈনিক পত্রিকা।
-
১৮৩১ সালে তিনি 'সংবাদ প্রভাকর' নামক সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন।
-
১৮৩৯ সাল থেকে এটি দৈনিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়।
-
তিনি আরও কিছু পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন, যেমন:
-
সংবাদ রত্নাবলী
-
পাষণ্ডপীড়ণ
-
সংবাদ সাধুরঞ্জন
-
তাঁর কবিতা "নীলকর"-এ তিনি মহারানী ভিক্টোরিয়াকে সম্বোধন করে বলেন:
"তুমি মা কল্পতরু আমরা সব পোষা গরু
শিখিনি শিং বাঁকানো
কেবল খাবো খোল বিচিলি ঘাষ...
আমরা ভুসি পেলেই খুশি হব
ঘুষি খেলে বাঁচব না।"
এই কবিতার মাধ্যমে তিনি সমকালীন সমাজ ও রাজতন্ত্রের প্রতি ব্যঙ্গাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।
0
Updated: 1 month ago
'বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত' কার রচনা?
Created: 4 months ago
A
মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
B
মুহাম্মদ আবদুল হাই
C
মুনীর চৌধুরী
D
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্: একজন জ্ঞানতাপস ভাষাবিদ ও সাহিত্যসাধক
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৮৮৫–১৯৬৯) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের এক অসামান্য বাঙালি মনীষী—একাধারে ভাষাবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক এবং বহুভাষা-জ্ঞানসম্পন্ন বিদ্বান।
১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই প্রতিভাধর ব্যক্তি, যিনি পরবর্তীতে 'জ্ঞানতাপস' উপাধিতে সমাদৃত হন। তাঁকে অনেকে 'চলিষ্ণু অভিধান' নামেও আখ্যায়িত করেন, তাঁর বিস্তৃত জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের কারণে।
ড. শহীদুল্লাহ্ ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে ‘প্রফেসর ইমেরিটাস’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি—এই তিনটি ক্ষেত্রেই তাঁর প্রভাব ছিল অসামান্য। তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা করেছেন এবং সম্পাদনার কাজেও রেখেছেন অবদান। ‘আল-ইসলাম’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এবং ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনি তার সাহিত্যিক বিচক্ষণতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মুসলিম বাংলার প্রথম শিশুপত্রিকা ‘আঙুর’, যা ছিল একটি নতুন দিগন্তের সূচনা। পাশাপাশি তিনি সম্পাদনা করেন ‘দি পীস’ (ইংরেজি মাসিক), ‘বঙ্গভূমি’ (বাংলা মাসিক) এবং ‘তকবীর’ (পাক্ষিক) পত্রিকা।
বাংলা ভাষা ও জাতিসত্তা নিয়ে তাঁর চিন্তা ছিল গভীর এবং মানবিক। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তাঁর এক বিখ্যাত উক্তি:
“আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।”
এই বক্তব্য তাঁর অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল মননচর্চার প্রতিফলন।
তাঁর রচনার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’, যা ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয়। এটি বাংলা ভাষার উৎস ও বিকাশ নিয়ে গবেষণালব্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
সিন্দবাদ সওদাগরের গল্প
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
দীওয়ান-ই-হাফিজ
-
শিকওয়াহ ও জওয়াব-ই-শিকওয়াহ
-
রুবাইয়াত-ই-উমর খয়্যাম
-
Essays on Islam
-
আমাদের সমস্যা
-
পদ্মাবতী
-
বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)
-
বিদ্যাপতি শতক
-
বাংলা আদব কী তারিখ
-
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত
-
কুরআন শরীফ
-
অমরকাব্য
-
সেকালের রূপকথা
তাঁর সম্পাদিত আঞ্চলিক ভাষার অভিধান এবং ড. মুহম্মদ আবদুল হাই-এর সঙ্গে যৌথভাবে রচিত “Traditional Culture in East Pakistan” (১৯৬১) গ্রন্থ দুটি গবেষণাক্ষেত্রে অনন্য অবদান হিসেবে বিবেচিত।
উৎস: বাংলাপিডিয়া এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 4 months ago
কোনটি মুহম্মদ এনামুল হকের রচনা?
Created: 3 months ago
A
ভাষার ইতিবৃত্ত
B
আধুনিক ভাষাতত্ত্ব
C
মনীষা মঞ্জুষা
D
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান
‘মনীষা মঞ্জুষা’ হচ্ছে ড. মুহম্মদ এনামুল হকের লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যবিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ।
অন্যদিকে,
-
‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ রচনায় অবদান রেখেছেন ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেন।
-
‘আধুনিক ভাষাতত্ত্ব’ গ্রন্থটি ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ রচিত, যেখানে ভাষা ও সাহিত্যের নানা দিক বিশ্লেষিত হয়েছে।
-
‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ একটি ব্যতিক্রমধর্মী গ্রন্থ, যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপভাষাগুলো সংগ্রহ ও সংকলন করা হয়েছে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সম্পাদনায়।
মুহম্মদ এনামুল হক ছিলেন একাধারে বিশিষ্ট গবেষক, প্রজ্ঞাবান সাহিত্যিক এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রগামী ও অন্যতম শ্রদ্ধেয় পণ্ডিত।
তিনি ১৯০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার বখৎপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে তাঁর গবেষণা ও সাধনার মূল উপজীব্য ছিল সত্য অনুসন্ধান ও ঐতিহাসিক চেতনার বিকাশ। বিশেষ করে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের হারিয়ে যাওয়া পাণ্ডুলিপির সন্ধানে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
তাঁর রচনার মূল প্রেরণা ছিল সাহিত্য ও ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অতীত-বর্তমানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে দেওয়া।
ড. এনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি হলো:
-
আরাকান রাজসভায় বাঙ্গালা সাহিত্য (গবেষণামূলক; আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদের সঙ্গে যৌথ),
-
বঙ্গে সূফীপ্রভাব (গবেষণামূলক),
-
বাঙলা ভাষার সংস্কার (ভাষাতত্ত্বভিত্তিক),
-
মুসলিম বাঙলা সাহিত্য (গভীর গবেষণাধর্মী) ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া ও ‘মনীষা মঞ্জুষা’ গ্রন্থ।
0
Updated: 3 months ago
শামসুর রাহমানের রচিত উপন্যাস -
Created: 3 weeks ago
A
পতঙ্গ পিঞ্জর
B
প্রেম একটি লাল গোলাপ
C
রৌদ্র করোটিতে
D
অদ্ভুত আঁধার এক
শামসুর রাহমান একজন খ্যাতনামা কবি ও সাংবাদিক, যিনি বাংলা সাহিত্যের বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার ৪৬ নম্বর মাহুতটুলীতে। শামসুর রাহমানের কবিতার প্রতি আকর্ষণ প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৬০ সালে, যখন তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ "প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে" প্রকাশিত হয়।
তাঁর বিখ্যাত কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ এবং ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা’ মুক্তিযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধকালীন সময়ে লেখা কবিতাগুলি ‘বন্দী শিবির থেকে’ নামে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। এই কবিতাগুলি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের অমূল্য স্মৃতিরূপে চিহ্নিত হয়।
শামসুর রাহমান কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও বেশ কিছু উপন্যাসও রচনা করেন, যার মধ্যে অদ্ভুত আঁধার এক অন্যতম। ১৯৮৫ সালে এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়। তাঁর অন্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে অক্টোবাস, নিয়ত মন্তাজ, এবং এলো সে অবেলায়।
শামসুর রাহমানের কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে,
-
প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে,
-
রৌদ্র করোটিতে,
-
বিধ্বস্ত নীলিমা,
-
নিরালোকে দিব্যরথ,
-
নিজ বাসভূমে,
-
বন্দী শিবির থেকে,
-
ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা,
-
আমি অনাহারী,
-
প্রতিদিন ঘরহীন ঘরে,
-
উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ,
-
বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়,
-
হরিণের হাড়,
-
তুমি নিঃশ্বাস তুমি হৃদস্পন্দন।
এছাড়া, ‘পতঙ্গ পিঞ্জর’ উপন্যাসের রচয়িতা শওকত ওসমান, এবং ‘প্রেম একটি লাল গােলাপ’ উপন্যাসের লেখক রশীদ করীম।
0
Updated: 3 weeks ago