প্রথম সাহিত্যিক গদ্যের স্রষ্টা কে?
A
রাজা রামমোহন রায়
B
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
C
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
বাংলা গদ্যের বিকাশ এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। আদি নিদর্শন থেকে শুরু করে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ, সংবাদপত্র, মিশনারিদের অবদান এবং অবশেষে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের হাতে সাহিত্যিক গদ্যের জন্ম—সবকিছুই এক ধারাবাহিক বিকাশের অংশ। নিচে বিষয়গুলো ক্রমান্বয়ে তুলে ধরা হলো:
-
আদি নিদর্শন: বাংলা গদ্যের মূল বিকাশ উনিশ শতকে হলেও তার আগে কিছু নমুনা পাওয়া যায়। প্রাচীনতম উদাহরণ হিসেবে ধরা হয় কোচবিহারের রাজার ১৫৫৫ সালে আসামের রাজার কাছে লেখা চিঠি। যদিও এ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে, তবে এ থেকে বোঝা যায় সেই সময় থেকেই যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলা গদ্যে চিঠি লেখা শুরু হয়েছিল।
-
ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের ভূমিকা: বাংলা গদ্যের বিকাশে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অবদান অপরিসীম। ১৮০১ সালে রামরাম বসুর রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র বাংলা হরফে ছাপা প্রথম মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হয়। মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারসহ কলেজের অন্যান্য লেখকরা সংস্কৃত-প্রভাবিত ভাষা ব্যবহার করলেও এসব গ্রন্থ মূলত পাঠ্যপুস্তক হিসেবে রচিত হয়।
-
সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র: ১৮১৮ সালে শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত সমাচার-দর্পণ, রামমোহন রায়ের সম্বাদকৌমুদী (১৮২১) এবং ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাচারচন্দ্রিকা (১৮২২) বাংলা গদ্যকে আরও সহজ, কেজো ও ভাবপ্রকাশক্ষম করে তোলে। পরবর্তী সময়ে সম্বাদপ্রভাকর (১৮৩১) এবং তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (১৮৪৩) এই বিকাশকে আরো ত্বরান্বিত করে।
-
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান: ১৮৪৭ সালে বিদ্যাসাগর তাঁর বেতালপঞ্চবিংশতি প্রকাশ করলে বাংলা গদ্যের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তাঁর লেখায় প্রথমবার সাহিত্যিক গদ্যের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
-
তিনি শব্দ-সামঞ্জস্য, অন্বয়, সঠিক পদক্রম বজায় রেখে স্বতন্ত্র শৈলী গড়ে তোলেন।
-
বিষয়বস্তুর উপযোগী শব্দ, অনুপ্রাস ও সাঙ্গীতিক ছন্দ এনে তিনি ভাষাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেন।
-
তাঁর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল শ্বাসযতি ও অর্থযতির সমন্বয়, যা বাংলা গদ্যকে সাবলীল ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।
-
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যকে সাহিত্যিক উচ্চতায় পৌঁছে দেন।
-
জীবনী ও অবদান: বিদ্যাসাগর (১৮২০–১৮৯১) মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা গদ্যকে সুললিত শব্দবিন্যাস, পদবিভাগ ও যতি দ্বারা সহজবোধ্য ও শিল্পসমৃদ্ধ করে তোলেন। প্রথমবার তিনি গদ্যের ধ্বনি, ছন্দ ও সুর উপলব্ধি করেন। শ্বাসপর্ব ও অর্থপর্বের ভেদরেখা অনুসারে যতিচিহ্ন প্রবর্তন করেন, যা গদ্যকে সুবিন্যস্ত ও সাহিত্যোপযোগী করে।
-
সমকালীন ও পরবর্তী মতামত:
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে বাংলা গদ্যের ‘প্রথম শিল্পী’ বলেছেন।
-
প্রমথনাথ বিশি অভিহিত করেছেন ‘বাংলা গদ্যের যথার্থ শিল্পী’ হিসেবে।
-
তাঁকে ‘বাংলা গদ্যের জনক’ বলা হয়, কারণ তিনি গদ্যকে জীবন্ত ও গতিশীল রূপ দেন।
-
সব মিলিয়ে বলা যায়, যদিও বিদ্যাসাগরের আগে গদ্যের বিকাশে বহু মানুষের অবদান ছিল, তবুও সাহিত্যিক গদ্যের প্রথম স্রষ্টা হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরই স্বীকৃত।
0
Updated: 1 month ago
'মাটির ময়না' চলচ্চিত্রের নির্মাতা কে?
Created: 3 months ago
A
আলমগীর কবির
B
হুমায়ূন আহমেদ
C
তারেক মাসুদ
D
শেখ নিয়ামত আলী
মাটির ময়না একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে তৈরি। এটি ২০০২ সালে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পায়।
এই ছবির গল্প লিখেছেন এবং পরিচালনা করেছেন তারেক মাসুদ। আর প্রযোজনা করেছেন তাঁর স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ।
তারেক মাসুদ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন, যেমন:
-
সোনার বেড়ি
-
অন্তর্যাত্রা
-
আদম সুরত
-
রানওয়ে
উৎস: প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদন।
0
Updated: 3 months ago
কবি জনাব আলী রচিত কিসসাতুল আম্বীয়া গ্রন্থের বিষয়বস্তু কি?
Created: 1 month ago
A
আল কোৱআনে বর্ণিত বিভিন্ন কাহিনির বাংলা অনুবাদ
B
ওলি-দরবেশ-ইমামদের জীবনগাঁথা ও কীর্তি বর্ণনা
C
মহানবীর জীবৎকালের বিভিন্ন যুদ্ধ-বিগ্রহের ঘটনা
D
খুলাফায়ে রাশেদিনের বিভিন্ন অভিযানের বিবরণ
কবি জনাব আলী ইসলামি চরিতকথার ধারায় কিসসাসুল আম্বিয়া কাব্য রচনা করেছিলেন। এই কাব্যে তেতাল্লিশ জন ওলি, দরবেশ ও ইমাম প্রভৃতি শাস্ত্রবিদের জীবনকথা ও কীর্তিকাহিনী বর্ণিত আছে, যা ইসলামী চরিত্র ও নৈতিক শিক্ষার প্রকাশ ঘটায়।
-
কাব্যটি ইসলামী চরিতকথার ধারাকে সাহিত্যিক রূপে উপস্থাপন করে।
-
এতে ঐতিহাসিক ও ধার্মিক ব্যক্তিত্বদের কীর্তি ও জীবনসংগ্রহ তুলে ধরা হয়েছে।
-
পাঠক এই কাব্যের মাধ্যমে ইসলামী জীবনধারা ও নৈতিক শিক্ষা সম্পর্কে জানতে পারে।
0
Updated: 1 month ago
বাংলা ভাষার নিজস্ব বাগ্ধারা ও ধ্বনি সহযোগে নতুন ছন্দসৃষ্টি করেছিলেন কোন কবি?
Created: 1 month ago
A
সুকুমার রায়
B
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
C
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
D
অমিয় চক্রবর্তী
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
-
জন্ম: ১৮৮২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, নিমতা গ্রাম, কলকাতা নিকটবর্তী
-
পেশা: কবি ও ছান্দসিক
-
তিনি ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম বিশিষ্ট কবি ছিলেন
-
বাংলা ভাষার নিজস্ব বাগধারা ও ধ্বনি ব্যবহার করে নতুন ছন্দসৃষ্টি তাঁর প্রধান কীর্তি; এজন্য তিনি ‘ছন্দের জাদুকর’ এবং ‘ছন্দোরাজ’ নামে পরিচিত
-
১৯১৮ সালে ভারতী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় তাঁর ছন্দ সম্পর্কিত প্রসিদ্ধ রচনা ‘ছন্দ-সরস্বতী’ প্রকাশিত হয়
-
তিনি একাধিক ছদ্মনামে কাব্যচর্চা করতেন, যেমন: নবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর
-
মৃত্যু: ১৯২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি; মৃত্যুর পর ‘সত্যেন-প্রয়াণ’ কবিতা রচনা করেন কাজী নজরুল ইসলাম
বিখ্যাত কাব্যসমূহ:
-
সবিতা
-
সন্ধিক্ষণ
-
বেণু ও বীণা
-
কুহু ও কেকা
-
অভ্র আবীর
-
হসন্তিকা
-
বেলা শেষের গান
-
বিদায় আরতি
-
কাব্যসঞ্চয়ন
0
Updated: 1 month ago