নিচের কোন জন যুদ্ধকাব্যের রচয়িতা নন?
A
দৌলত উজির বাহরাম খাঁ
B
সাবিরিদ খাঁ
C
সৈয়দ সুলতান
D
সৈয়দ নূরুদ্দীন
উত্তরের বিবরণ
‘জঙ্গনামা’ মূলত মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে মুসলিম ঐতিহ্যভিত্তিক একধরনের যুদ্ধকাব্য। এ ধরনের কাব্যের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামি ইতিহাসে সংঘটিত যুদ্ধগুলোর ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা। নিচে বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হলো—
-
ফারসি ‘জঙ্গ’ শব্দের অর্থ যুদ্ধ, আর ‘জঙ্গনামা’ শব্দের অর্থ যুদ্ধ বা তদ্বিষয়ক গ্রন্থ। অর্থাৎ ‘জঙ্গনামা’ কাব্যে মূলত যুদ্ধ-বিগ্রহকেই কেন্দ্র করে রচনা করা হয়।
-
বিশেষভাবে হযরত মুহাম্মদ (স.) ও তাঁর স্বজনদের যুদ্ধ এবং এর করুণ পরিণামই এই কাব্যের প্রধান বিষয়।
-
আরবি-ফারসি সাহিত্যের মতোই বাংলায় ‘জঙ্গনামা’ বলতে বিশেষভাবে কারবালার যুদ্ধ ও তার বিষাদময় ঘটনাবলি বোঝানো হয়।
প্রশ্নে উল্লেখিত কবিদের মধ্যে—
১. দৌলত উজির বাহরাম খান – কারবালার কাহিনি অবলম্বনে ‘জঙ্গনাম বা মক্তুল হোসেন’ নামে যুদ্ধকাব্য রচনা করেছেন।
২. সাবিরিদ খাঁ – ‘হানিফা-কয়রাপরী’ নামে জঙ্গনামা ধাঁচের যুদ্ধকাব্য লিখেছেন।
৩. সৈয়দ সুলতান – ‘জয়কুম রাজার লড়াই’ নামে যুদ্ধকাহিনীকাব্য রচনা করেছেন।
অন্যদিকে—
-
সৈয়দ নুরুদ্দিন যুদ্ধকাব্য রচনা করেননি, তিনি মূলত মধ্যযুগীয় ইসলামি ধর্মসাহিত্যের কবি।
-
তাঁর জন্ম চট্টগ্রামের মির্জাপুরে। পূর্বপুরুষ সৈয়দ হাসান ষোলো শতকে গৌড় থেকে চট্টগ্রামে বসতি স্থাপন করেন।
নুরুদ্দিনের চারটি কাব্য হলো—
-
দাকায়েকুল হেকায়েক: ইমাম গাজ্জালির একই নামের আরবি গ্রন্থের ভাবানুবাদ। এতে মৃত্যু, আজরাইল, রুহ, গোর-আজাব, ইস্রাফিল, কাফন, সাদকা প্রভৃতি বিষয়ে ২২টি অধ্যায় রয়েছে।
-
রাহাতুল কুলব বা কেয়ামতনামা: কুরআন, হাদিস ও তাফসিরভিত্তিক রচনা।
-
বুরহানুল আরেফিন: সুফিতত্ত্ব ও হিতোপদেশমূলক কাব্য।
-
মুসার সওয়াল: প্রশ্নোত্তরমূলক ক্ষুদ্র কাব্য।
কারবালা-কেন্দ্রিক সাহিত্যকে মর্সিয়া সাহিত্যও বলা হয়।
-
‘মর্সিয়া’ শব্দটি আরবি, এর অর্থ শোক। তাই মর্সিয়া সাহিত্য হলো শোকবিষয়ক রচনা।
-
জঙ্গনামা ও মর্সিয়া সাহিত্য বিষয়বস্তুর দিক থেকে মিল থাকলেও রস ও আঙ্গিকে পার্থক্য বিদ্যমান।
-
এ সাহিত্যধারা প্রথমে আরবে, পরে পারস্যে বিকাশ লাভ করে এবং মধ্যযুগে মুসলিম শাসনামলে বাংলায় প্রবেশ করে।
-
বাংলায় এ কাব্যধারা মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল।
0
Updated: 1 month ago
কোনটি মুহম্মদ এনামুল হকের রচনা?
Created: 3 months ago
A
ভাষার ইতিবৃত্ত
B
আধুনিক ভাষাতত্ত্ব
C
মনীষা মঞ্জুষা
D
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান
‘মনীষা মঞ্জুষা’ হচ্ছে ড. মুহম্মদ এনামুল হকের লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যবিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ।
অন্যদিকে,
-
‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ রচনায় অবদান রেখেছেন ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেন।
-
‘আধুনিক ভাষাতত্ত্ব’ গ্রন্থটি ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ রচিত, যেখানে ভাষা ও সাহিত্যের নানা দিক বিশ্লেষিত হয়েছে।
-
‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ একটি ব্যতিক্রমধর্মী গ্রন্থ, যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপভাষাগুলো সংগ্রহ ও সংকলন করা হয়েছে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সম্পাদনায়।
মুহম্মদ এনামুল হক ছিলেন একাধারে বিশিষ্ট গবেষক, প্রজ্ঞাবান সাহিত্যিক এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রগামী ও অন্যতম শ্রদ্ধেয় পণ্ডিত।
তিনি ১৯০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার বখৎপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে তাঁর গবেষণা ও সাধনার মূল উপজীব্য ছিল সত্য অনুসন্ধান ও ঐতিহাসিক চেতনার বিকাশ। বিশেষ করে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের হারিয়ে যাওয়া পাণ্ডুলিপির সন্ধানে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
তাঁর রচনার মূল প্রেরণা ছিল সাহিত্য ও ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অতীত-বর্তমানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে দেওয়া।
ড. এনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি হলো:
-
আরাকান রাজসভায় বাঙ্গালা সাহিত্য (গবেষণামূলক; আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদের সঙ্গে যৌথ),
-
বঙ্গে সূফীপ্রভাব (গবেষণামূলক),
-
বাঙলা ভাষার সংস্কার (ভাষাতত্ত্বভিত্তিক),
-
মুসলিম বাঙলা সাহিত্য (গভীর গবেষণাধর্মী) ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া ও ‘মনীষা মঞ্জুষা’ গ্রন্থ।
0
Updated: 3 months ago
’গোরক্ষবিজয়’ কাব্যগ্রন্থের লেখক কে?
Created: 2 months ago
A
সৈয়দ হামজা
B
গোঁজলা গুই
C
আলাওল
D
শেখ ফয়জুল্লাহ
শেখ ফয়জুল্লাহ
-
মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের কবি (১৬শ শতক)
-
জন্মস্থান: বিভিন্ন মতানুসারে পশ্চিমবঙ্গের বারাসত, দক্ষিণ রাঢ় বা কুমিল্লা
-
প্রধান কাব্যগ্রন্থ:
-
সত্যপীরবিজয়
-
গোরক্ষবিজয়
-
গাজীবিজয়
-
-
অন্যান্য রচনা: জয়নবের চৌতিশা, সুলতান জমজমা, রাগমালা, পদাবলী
0
Updated: 2 months ago
'বটতলার উপন্যাস' গ্রন্থের লেখকের নাম কী?
Created: 3 months ago
A
দিলারা হাশেম
B
রাজিয়া খান
C
রিজিয়া রহমান
D
সেলিনা হোসেন
রাজিয়া খান
- রাজিয়া খান আমিন মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপক ছিলেন।
- অধ্যাপনা করলেও সাহিত্যের অঙ্গনেও তাঁর সমান পদচারণা ছিল।
- সাহিত্যকর্মে তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৮ সালে।
- তাঁর সাড়া জাগানো বই ‘বটতলার উপন্যাস’।

উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; 'বটতলার উপন্যাস' এবং বিবিসি নিউজ বাংলা।
0
Updated: 3 months ago