'গীতগোবিন্দ' কাব্যের রচয়িতা জয়দেব কার সভাকবি ছিলেন?
A
শশাঙ্কদেবের
B
লক্ষ্মণ সেনের
C
যশোবর্মনের
D
হর্ষবর্ধনের
উত্তরের বিবরণ
জয়দেব ছিলেন বার’শ শতকের এক খ্যাতনামা সংস্কৃত ভাষার কবি। তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন মত থাকলেও তাঁর সাহিত্যকীর্তি ও অবদান ভারতীয় সাহিত্যে বিশেষভাবে স্মরণীয়।
-
তাঁর জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক আছে। অধিকাংশের মতে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার অজয়নদের তীরবর্তী কেন্দুবিল্ব বা কেঁদুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তবে কেউ কেউ তাঁকে মিথিলা বা উড়িষ্যার অধিবাসী বলেও মনে করেন।
-
তিনি বাংলার শেষ হিন্দু রাজা লক্ষ্মণ সেনের রাজসভার পঞ্চরত্নের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
-
পঞ্চরত্নের অন্য চারজন কবি হলেন—
১. গোবর্ধন আচার্য
২. শরণ
৩. নধোয়ী
৪. উমাপতিধর -
অনেকের মতে, তিনি কিছু সময় উৎকলরাজের সভাপণ্ডিত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
-
বাংলার সাহিত্য ইতিহাসে তাঁকে বৈষ্ণব পদাবলির প্রথম পদকর্তা বলা হয়।
-
তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘গীতগোবিন্দম্’, যেখানে রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলা অবলম্বনে পদ রচনা করা হয়েছে। এটি আদি বৈষ্ণব পদাবলির নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত।
-
এই কাব্যে মোট ১২ সর্গ, ২৮৬টি শ্লোক এবং ২৪টি গীত রয়েছে।
0
Updated: 1 month ago
বাংলা সাহিত্যের প্রথম ইতিহাস গ্রন্থ কে রচনা করেন?
Created: 3 months ago
A
সুকুমার সেন
B
দীনেশচন্দ্র সেন
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
১৮৯৬ সালে কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে বিশেষ মর্যাদা পায়। দীনেশচন্দ্র সেনের দীর্ঘ গবেষণার ফসল এই বইটি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ইতিহাসকে সুশৃঙ্খলভাবে তুলে ধরে।
তথ্য ও বিশ্লেষণের গুণে এটি এক যুগান্তকারী কাজ হিসেবে সমকালীন বিদ্বজ্জন মহলে, এমনকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকেও, বিশেষ স্বীকৃতি অর্জন করে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস চর্চায় এই গ্রন্থের মাধ্যমে দীনেশচন্দ্র সেন পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন এবং একাধারে পান্ডিত্যের স্বীকৃতি লাভ করেন।
দীনেশচন্দ্র সেন
দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬–১৯৩৯) ছিলেন বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, খ্যাতনামা লোকসাহিত্য বিশারদ ও শিক্ষাবিদ। তাঁর জন্ম হয় ১৮৬৬ সালের ৩ নভেম্বর, মানিকগঞ্জ জেলার বগজুরি গ্রামে মাতুলালয়ে।
১৮৯৬ সাল তাঁর কর্মজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়ে আসে; পুথি সংগ্রহ ও পাঠচর্চার মধ্য দিয়ে তাঁর গবেষণার নবদিগন্ত সূচিত হয়। এই সময় তিনি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হন।
১৯২০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনিই প্রথম বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং টানা বারো বছর অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করে ১৯৩২ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
গবেষক হিসেবে যেমন তিনি গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একজন সৃজনশীল লেখক হিসেবেও তাঁর অবস্থান অগ্রগণ্য। সাহিত্যের ইতিহাস, পৌরাণিক কাহিনি, লোকসাহিত্য সম্পাদনা ও বাঙালির সাংস্কৃতিক ধারার ওপর তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
পাশাপাশি তিনি লিখেছেন কবিতা, উপন্যাস ও গল্পও। সব মিলিয়ে তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা ৬০টিরও অধিক। গবেষণা ও সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯২১ সালে তিনি 'রায়বাহাদুর' উপাধিতে ভূষিত হন।
দীনেশচন্দ্র সেনের উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ:
-
History of Bengali Language and Literature
-
বাংলার পুরনারী
-
প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান
-
হিন্দু সমাজ ও বৈষ্ণব ধর্ম
-
বীর কথা ও যুগসাহিত্য
-
রামায়ণী কথা
-
কৃত্তিবাসী রামায়ণ
তাছাড়া তিনি সম্পাদনা করেন বিখ্যাত লোকসাহিত্য সংকলন মৈমনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা, যা বাংলার লোকঐতিহ্যের ধারক হিসেবে সমাদৃত।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'কেউ মালা, কেউ তসবি গলায়, তাইতো জাত ভিন্ন বলায়' এই পংক্তিটি নিচের একজনের লেখা-
Created: 5 months ago
A
লালন শাহ
B
সিরাজ সাঁই
C
মদন বাউল
D
পাগলা কানাই
‘কেউ মালা, কেউ তসবি গলায়, তাইতো জাত ভিন্ন বলায়’ — এই প্রসিদ্ধ গানটির রচয়িতা ছিলেন বাউল সম্রাট খ্যাত লালন শাহ্।
লালন শাহ্ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
-
লালন শাহ্ (১৭৭২-১৮৯০) বাউল সাধনার অন্যতম প্রধান গুরু এবং বাউল সঙ্গীতের শ্রেষ্ঠ রচয়িতা ও গায়ক হিসেবে পরিচিত।
-
তিনি ১১৭৯ বঙ্গাব্দের ১লা কার্তিকে (১৭৭২ খ্রিস্টাব্দ) ঝিনাইদহ জেলার হরিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
মতান্তরে, কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীর ভাঁড়রা গ্রামে এক কায়স্থ পরিবারে তাঁর জন্মসূত্র।
-
লালন শাহ্ জাতিভেদের ধার্মিক ও সামাজিক বিভাজনকে কখনো মানতেন না। তিনি একথা স্পষ্ট করেছিলেন তাঁর গানে:
‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে,
লালন কয় জাতির কি রূপ দেখলাম না এ নজরে।’
অর্থাৎ, মানবজাতির মধ্যে জাতপাতের কোনো প্রকৃত বৈষম্য নেই।
লালন শাহ্ এর জনপ্রিয় অন্যান্য গানসমূহ:
-
‘বাড়ির কাছে আরশী নগর’
-
‘আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে’
-
‘মিলন হবে কত দিনে’
-
‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়’
-
‘তিন পাগলের মেলা’
-
‘সময় গেলে সাধন হবে না’
উৎস: বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 5 months ago
”মোদের গরব, মোদের আশা আমরি বাংলা ভাষা” চরণটি কার লিখা?
Created: 1 week ago
A
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
কাজী নজরুল ইসলাম
C
বেগম সুফিয়া কামাল
D
কোনোটি নয়
বাংলা সাহিত্যে বিভিন্ন গানের মাধ্যমে জাতীয় অনুভূতি প্রকাশ করা হয়েছে। “মোদের গরব, মোদের আশা আমরি বাংলা ভাষা” চরণের লেখক নির্দিষ্টভাবে পরিচিত নয়।
• এটি মূলত বাংলার সংস্কৃতি ও মাতৃভাষার প্রতি প্রেম উদ্ভাসিত করে।
• এই ধরণের চরণ সাধারণত জনসাধারণের মধ্য থেকে উদ্ভূত গীত বা লোকগানের অংশ হিসেবে পরিচিত।
• লেখক পরিচয় না থাকায়, কোনো ব্যক্তির নামে এই চরণকে চিহ্নিত করা যায় না।
• এটি ভাষা ও জাতীয় চেতনার সঙ্গে জড়িত, বিশেষভাবে মাতৃভাষা রক্ষার আবেগকে ফুটিয়ে তোলে।
অতএব, সঠিক উত্তর হলো “কোনোটি নয়”, কারণ নির্দিষ্ট লেখক নেই এবং এটি সাধারণ জনগণের সৃষ্টিশীল চেতনাকে প্রকাশ করে।
0
Updated: 1 week ago