'পরমতসহিষ্ণুতা' কোন ধরনের মূল্যবোধ?
A
নৈতিক মূল্যবোধ
B
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ
C
আধুনিক মূল্যবোধ
D
কোনটি নয়
উত্তরের বিবরণ
পরমতসহিষ্ণুতা (Tolerance) নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
-
সংজ্ঞা ও অর্থ:
-
পরমতসহিষ্ণুতা বলতে বোঝায় অন্যের মতাদর্শ, বিশ্বাস, ধর্ম, মত বা রাজনৈতিক অবস্থানকে সম্মান এবং গ্রহণ করার ক্ষমতা।
-
এটি শুধুমাত্র সহনশীলতা নয়, বরং অন্যের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ।
-
-
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে গুরুত্ব:
-
গণতান্ত্রিক সমাজে মানুষ বিভিন্ন মত, ধর্ম, ও সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসে।
-
এসব ভিন্নতার মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহঅবস্থান নিশ্চিত করতে পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য।
-
এটি সমাজে দূর্বলতা, সংঘাত ও হিংসা প্রতিরোধ করে।
-
-
গণতান্ত্রিক আচরণ ও সামাজিক সম্পর্ক:
-
পরমতসহিষ্ণু ব্যক্তি নিরপেক্ষভাবে, সহমর্মিতার সাথে অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে।
-
এতে সমঝোতা, সহযোগিতা ও সামাজিক ঐক্য বৃদ্ধি পায়।
-
-
শিক্ষা ও সামাজিকীকরণে ভূমিকা:
-
পরিবার, স্কুল ও সমাজে সহিষ্ণুতার শিক্ষা দিলে মানুষ ন্যায়পরায়ণ, সংবেদনশীল এবং গণতান্ত্রিক নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে।
-
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে বৈচিত্র্যকে মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।
-
-
আধুনিক সমাজে প্রয়োগ:
-
রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ভিন্নতার ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা।
-
সামাজিক মিডিয়া, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন জনসভায় ভিন্ন মতামতকে সম্মান করা।
-
আন্তর্জাতিক স্তরে মানুষের অধিকার ও মানবিক নীতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন।
-
উপসংহার:
পরমতসহিষ্ণুতা কেবল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের এক উপাদান নয়, এটি সুশাসন, সামাজিক শান্তি ও সাম্য প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। এটি ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সুশৃঙ্খল ও সমন্বিত সম্পর্ক নিশ্চিত করে।
0
Updated: 1 month ago
আদর্শ আমলাতন্ত্রের উদ্ভাবক-
Created: 1 month ago
A
কার্ল মার্কস
B
ম্যাক্স ওয়েবার
C
উইলিয়াম হেগেল
D
টমাস হবস
আমলাতন্ত্র (ইংরেজিতে Bureaucracy) হলো একটি সংস্থা, যা সরকারী বা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বিভিন্ন নীতিনির্ধারক বিভাগ বা ইউনিট নিয়ে গঠিত। এটি প্রতিষ্ঠানকে সুশৃঙ্খল ও কার্যকরভাবে পরিচালিত করতে সহায়ক।
-
জার্মান সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবার প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে আমলাতন্ত্র অধ্যয়ন করেছেন।
-
তাই ম্যাক্স ওয়েবারকে আদর্শ আমলাতন্ত্রের উদ্ভাবক বলা হয়।
আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য:
-
টাস্ক স্পেশালাইজেশন (কাজের বিশেষীকরণ)
-
নিয়ম এবং প্রয়োজনীয়তা
-
অনুক্রমিক কর্তৃপক্ষ
-
কর্মজীবন অভিযোজন
0
Updated: 1 month ago
'Animal Liberation' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
Created: 3 weeks ago
A
হেগেল
B
কান্ট
C
বেন্থাম
D
পিটার সিঙ্গার
পিটার সিঙ্গার আধুনিক নৈতিক দর্শনের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, যিনি প্রাণী অধিকার ও জৈব-নৈতিকতার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেছেন। তাঁর রচিত ‘Animal Liberation’ বইটি মানব ও অমানব প্রাণীর সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার একটি বিপ্লবী প্রচেষ্টা হিসেবে গণ্য হয়।
এই বইয়ে তিনি দেখিয়েছেন, নৈতিকতার আলোচনায় প্রাণীদের কষ্টও বিবেচনার দাবিদার। মানবকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে এসে সকল জীবের কল্যাণে সমান গুরুত্ব দেওয়ার কথা তিনি তুলে ধরেন।
-
পিটার সিঙ্গারের পূর্ণ নাম Peter Albert David Singer, এবং তিনি একজন অস্ট্রেলিয়ান নৈতিক ও রাজনৈতিক দার্শনিক।
-
তিনি জৈব-নৈতিকতা (Bioethics) ও Animal Rights আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত। তাঁর গবেষণায় নৈতিক দর্শনকে বাস্তব জীবনের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত করার প্রয়াস দেখা যায়।
-
সিঙ্গারের ব্যবহারিক নীতিবিদ্যার বৈশিষ্ট্য হলো বাস্তব তথ্যের ব্যবহার, যা তাঁর তত্ত্বগুলোকে জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত করে। তিনি মনে করেন, “তথ্য যেখানে থেমে যায়, দর্শন সেখান থেকে শুরু হয়”, অর্থাৎ দর্শন মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতার পরিসরকে বিস্তৃত করে।
-
তাঁর ‘Animal Liberation’ বইটি প্রাণীদের প্রতি মানুষের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণ দেয়। বইটির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অংশে প্রাণীদের প্রতি নৈতিক দায়বদ্ধতার ব্যবহারিক দিক তুলে ধরা হয়েছে।
-
যদিও তিনি উপযোগবাদ (Utilitarianism) পুরোপুরি অনুসরণ করেন না, তবুও তাঁর দর্শন মানবিক বোধ ও যুক্তির উপর ভিত্তি করে। এই কারণেই বইটি আধুনিক দর্শনে এক অনন্য স্থান দখল করেছে।
-
তিনি বিশ্বাস করেন, নৈতিক দর্শন কেবল চিন্তাগত নয়, বাস্তব জীবনের পরিবর্তনের জন্যও প্রয়োজনীয়।
তাঁর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘The Life You Can Save’, ‘The Most Good You Can Do’, ‘Ethics in the Real World’, এবং অবশ্যই ‘Animal Liberation’। এইসব রচনায় সিঙ্গার মানুষের দায়িত্ব, নৈতিক সিদ্ধান্ত ও সামাজিক পরিবর্তনের সম্পর্ক নিয়ে বাস্তবভিত্তিক আলোচনা করেছেন। তাঁর চিন্তা আমাদের শেখায়—নৈতিকতা কেবল মানুষের জন্য নয়, সমস্ত জীবের মঙ্গলের জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য।
0
Updated: 3 weeks ago
"সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগণের, শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ককে বোঝায়"-কার অভিমত?
Created: 1 month ago
A
ম্যাককরনি
B
মিশেল ক্যামডেসাস
C
মারটিন মিনোগ
D
ল্যান্ডেল মিল
সুশাসন (Good Governance) হলো এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে প্রশাসনের জবাবদিহিতা (Accountability), বৈধতা (Legitimacy) এবং স্বচ্ছতা (Transparency) নিশ্চিত থাকে। এতে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ উন্মুক্ত থাকে, বাকস্বাধীনতা ও সকল রাজনৈতিক স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় থাকে, আইনের শাসন (Rule of Law) কার্যকর হয় এবং শাসন বিভাগের জবাবদিহিতা বা দায়িত্বশীলতার নীতি অনুসৃত হয়। এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য পূর্ণ থাকলে শাসনকে সুশাসন বলা হয়।
-
মিশেল ক্যামডেসাস এর মতে, রাষ্ট্রের সব ধরনের উন্নয়নের জন্য সুশাসন অত্যাবশ্যক।
-
ম্যাককরনি বলেন, সুশাসন হলো রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগণের এবং শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ক বোঝানো।
-
মারটিন মিনোগ (Martin Minogue) এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সুশাসন হলো বিভিন্ন উদ্যোগের সমষ্টি এবং একটি সংস্কার কৌশল, যা সরকারকে আরও গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক করতে সুশীল সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলিকে কার্যকর করে।
-
ল্যান্ডেল মিল (Landell Mill) মনে করেন, সুশাসন জাতির রাজনেতিক ব্যবস্থা এবং জন প্রশাসন ও আইনী কাঠামোর মধ্যে সরকারের কার্যকারিতা সম্পর্কে দিকনির্দেশ প্রদান করে।
0
Updated: 1 month ago