"সুশাসন বলতে রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগণের, শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ককে বোঝায়"-কার অভিমত?
A
ম্যাককরনি
B
মিশেল ক্যামডেসাস
C
মারটিন মিনোগ
D
ল্যান্ডেল মিল
উত্তরের বিবরণ
সুশাসন (Good Governance) হলো এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে প্রশাসনের জবাবদিহিতা (Accountability), বৈধতা (Legitimacy) এবং স্বচ্ছতা (Transparency) নিশ্চিত থাকে। এতে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ উন্মুক্ত থাকে, বাকস্বাধীনতা ও সকল রাজনৈতিক স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বজায় থাকে, আইনের শাসন (Rule of Law) কার্যকর হয় এবং শাসন বিভাগের জবাবদিহিতা বা দায়িত্বশীলতার নীতি অনুসৃত হয়। এই সমস্ত বৈশিষ্ট্য পূর্ণ থাকলে শাসনকে সুশাসন বলা হয়।
-
মিশেল ক্যামডেসাস এর মতে, রাষ্ট্রের সব ধরনের উন্নয়নের জন্য সুশাসন অত্যাবশ্যক।
-
ম্যাককরনি বলেন, সুশাসন হলো রাষ্ট্রের সাথে সুশীল সমাজের, সরকারের সাথে শাসিত জনগণের এবং শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্ক বোঝানো।
-
মারটিন মিনোগ (Martin Minogue) এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সুশাসন হলো বিভিন্ন উদ্যোগের সমষ্টি এবং একটি সংস্কার কৌশল, যা সরকারকে আরও গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতামূলক করতে সুশীল সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলিকে কার্যকর করে।
-
ল্যান্ডেল মিল (Landell Mill) মনে করেন, সুশাসন জাতির রাজনেতিক ব্যবস্থা এবং জন প্রশাসন ও আইনী কাঠামোর মধ্যে সরকারের কার্যকারিতা সম্পর্কে দিকনির্দেশ প্রদান করে।
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশের 'নব্য-নৈতিকতার' প্রবর্তক হলেন-
Created: 3 weeks ago
A
মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ
B
জি. সি. দেব
C
আরজ আলী মাতুব্বর
D
আব্দুল মতীন
বাংলাদেশের যুক্তিবাদী দর্শনের ইতিহাসে আরজ আলী মাতুব্বর একটি অনন্য নাম। তিনি ছিলেন এমন এক চিন্তাবিদ যিনি উচ্চশিক্ষা না থাকা সত্ত্বেও স্বশিক্ষিত মননের মাধ্যমে সমাজে নতুন এক দার্শনিক ধারা সৃষ্টি করেন।তাঁর দর্শনের মূল লক্ষ্য ছিল মানুষকে কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও ধর্মীয় গোঁড়ামি থেকে মুক্ত করা এবং যুক্তি, বিজ্ঞান ও মানবিকতার আলোয় সত্যকে উপলব্ধি করানো।
জীবনের অভিজ্ঞতা ও প্রকৃতির বাস্তবতা থেকে তিনি শিখেছেন এবং সেই শিক্ষা থেকেই নির্মাণ করেছেন নিজের ভাবনাজগৎ, যা পরবর্তীতে পরিচিত হয় ‘নব-নৈতিকতা’ নামে।
তিনি বিশ্বাস করতেন, মানুষের মুক্তি আসবে চিন্তার স্বাধীনতা ও যুক্তিনিষ্ঠ মনোভাব থেকে। তাই জীবনের প্রতিটি প্রশ্নে তিনি খুঁজেছেন যুক্তিসঙ্গত উত্তর, ধর্মীয় অনুশাসন বা সমাজের প্রচলিত ধারণার অন্ধ অনুসরণ নয়।
তাঁর চিন্তাধারা মূলত বস্ত্তবাদী দর্শননির্ভর, যেখানে মানবজীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ ও বিশ্বজগতের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ দেখা যায়। আরজ আলী মাতুব্বর কখনো গোঁড়ামির সঙ্গে আপস করেননি; বরং দৃঢ়চিত্তে অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন।
তাঁর লেখায় স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে যুক্তি, বাস্তবতা ও মানবতার আহ্বান। সহজ ভাষায় গভীর ভাব প্রকাশ করার ক্ষমতার কারণে সাধারণ মানুষও তাঁর চিন্তাধারার সঙ্গে একাত্মতা অনুভব করত। জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ ও যুক্তিনিষ্ঠ বিশ্লেষণের সমন্বয়ে তিনি গড়ে তুলেছিলেন এমন এক দর্শন, যা আজও প্রাসঙ্গিক।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
‘সত্যের সন্ধান’ (১৯৭৩) – এখানে তিনি সত্য ও যুক্তির ভিত্তিতে ধর্ম ও সমাজকে বিশ্লেষণ করেছেন।
-
‘সৃষ্টিরহস্য’ (১৯৭৭) – জগৎ ও জীবনের উৎপত্তি নিয়ে তাঁর দার্শনিক অনুসন্ধান প্রকাশ পেয়েছে।
-
‘অনুমান’ (১৯৮৩) – মানবচিন্তা ও অভিজ্ঞতার ভূমিকা সম্পর্কে তাঁর গভীর উপলব্ধি প্রকাশিত হয়েছে।
-
‘মুক্তমন’ (১৯৮৮) – চিন্তার স্বাধীনতা ও যুক্তিনিষ্ঠ মানবতাবাদের দার্শনিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।
আরজ আলী মাতুব্বরের জীবন ও চিন্তা বাংলাদেশের বৌদ্ধিক ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়, যেখানে যুক্তি ও মানবতার পথেই তিনি খুঁজেছেন সমাজের সত্যিকারের মুক্তি।
0
Updated: 3 weeks ago
বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে সুশাসনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী?
Created: 1 month ago
A
দুর্নীতি
B
স্বজনপ্রীতি
C
জবাবদিহিতার অভাব
D
রাজনৈতিক অস্থিরতা
বাংলাদেশে সুশাসনের অন্তরায়সমূহ
-
সুশাসনের সংজ্ঞা:
যে শাসন ব্যবস্থায় আইনের শাসন, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণের অংশগ্রহণ গনতান্ত্রিকভাবে নিশ্চিত হয়, তাকেই সুশাসন বলা হয়। -
বাংলাদেশে অন্তরায়সমূহ:
১. দুর্নীতি:-
বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে সুশাসনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
-
দুর্নীতির কারণে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুশাসনের পথ রুদ্ধ হচ্ছে।
২. জনগণের সুযোগ-সুবিধা হ্রাস:
-
সরকারি সুযোগ-সুবিধা কমে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
৩. বিভিন্ন খাতে দুর্নীতি:
-
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভূমি প্রশাসন, জনপ্রশাসন, ব্যাংকিং, বিদ্যুৎ সেক্টর, স্থানীয় সরকারসহ সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতির সংস্কৃতি লক্ষ্য করা যায়।
-
এমনকি বাজার ব্যবস্থাপনা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণেও দুর্নীতির প্রভাব বিরাজ করছে।
-
-
সুশাসনের প্রয়োজনীয়তা:
-
নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, সরকারের জবাবদিহিতা, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্নীতি দূরীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়ন—সব ক্ষেত্রেই সুশাসন অপরিহার্য।
-
0
Updated: 1 month ago
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের অনুপস্থিতি কোনটির অন্তরায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়?
Created: 1 month ago
A
সুশাসনের
B
মূল্যবোধের
C
ব্যক্তি স্বাধীনতার
D
জনসংযোগের
স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনগণের সঠিক তথ্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করে এবং সুশাসনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এর কার্যকারিতা সঠিকভাবে প্রয়োগ না হলে সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি হতে পারে।
-
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়।
-
সংবাদপত্র বা মিডিয়ার স্বাধীনতা সঠিকভাবে ব্যবহৃত না হলে বা কোনো দূরভিসন্ধি নিয়ে অর্ধসত্য বা অসত্য সংবাদ প্রচার করলে তা দেশ, জাতি ও সমাজের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
-
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম।
-
শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ গণমাধ্যমের অভাবকে সুশাসনের অন্তরায় হিসেবে দেখা হয়।
-
গণমাধ্যম জনমতের মাধ্যমে সুশাসনের নিয়ামকগুলোকে সুসংহত করতে সাহায্য করে।
-
স্বাধীন সংবাদমাধ্যম এবং স্বাধীন বিচার বিভাগ ছাড়া সুশাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার রক্ষা এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
-
বর্তমান সময়ে সুশাসন ও গণমাধ্যমের মধ্যে গভীর সম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা যায়।
-
গণতান্ত্রিক সমাজে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং আইনশৃঙ্খলার অভাবকে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে প্রতিহত করা যায়।
0
Updated: 1 month ago