শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করে জামাকাপড় পরিষ্কার করার সময় শক্তির কোন রূপান্তরটি ঘটে?
A
আলোক শক্তি → শব্দ শক্তি
B
তড়িৎ শক্তি → আলোক শক্তি
C
রাসায়নিক শক্তি → তাপ শক্তি
D
শব্দ শক্তি → যান্ত্রিক শক্তি
উত্তরের বিবরণ
মানুষ তার প্রয়োজন অনুযায়ী শক্তিকে এক রূপ থেকে আরেক রূপে পরিবর্তন করে ব্যবহার করে থাকে। এই রূপান্তরের কারণেই মহাবিশ্বে বিভিন্ন প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম ঘটনা ঘটছে। শক্তি এক রূপ থেকে আরেক রূপে পরিবর্তিত হলেও মহাবিশ্বে মোট শক্তির পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকে। যখন এক ধরনের শক্তি অন্য ধরনের শক্তিতে পরিবর্তিত হয়, তখন তাকে শক্তির রূপান্তর বলা হয়। নিচে শক্তির বিভিন্ন রূপান্তরের উদাহরণ উল্লেখ করা হলো।
১। যান্ত্রিক শক্তির রূপান্তর
-
হাতে হাত ঘষলে যান্ত্রিক শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
-
কলমের খালি মুখে ফুঁ দিলে যান্ত্রিক শক্তি শব্দ শক্তিতে পরিবর্তিত হয়।
-
পানি উপরে অবস্থান করলে বিভব শক্তি সঞ্চিত থাকে এবং নিচে নামলে তা গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
২। বিদ্যুৎ শক্তির রূপান্তর
-
বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি ও হিটারে বিদ্যুৎ শক্তি তাপ শক্তিতে রূপ নেয়।
-
বৈদ্যুতিক বাল্বে বিদ্যুৎ শক্তি আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
-
টেলিফোন ও রেডিওতে বিদ্যুৎ শক্তি শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
-
সঞ্চয়ক কোষে বিদ্যুৎ শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
৩। তাপ শক্তির রূপান্তর
-
স্টীম ইঞ্জিনে তাপ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে ট্রেন ইত্যাদি চালায়।
-
বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্টে তাপ শক্তি উৎপন্ন হয় এবং এর সঙ্গে আলোক শক্তিও সৃষ্টি হয়।
৪। আলোক শক্তির রূপান্তর
-
হারিকেনের আলো থেকে তাপ অনুভূত হওয়ায় বোঝা যায়, আলোক শক্তি তাপ শক্তিতে রূপ নেয়।
-
ফটোগ্রাফিক ফিল্মে আলোক পড়লে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আলোকচিত্র তৈরি হয়।
৫। রাসায়নিক শক্তির রূপান্তর
-
খাদ্য ও জ্বালানি যেমন তেল, গ্যাস, কয়লা ও কাঠ রাসায়নিক শক্তির আধার।
-
দেহে খাদ্য হজমের মাধ্যমে রাসায়নিক শক্তি মুক্ত হয় এবং তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়।
-
ব্যাটারিতে রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
-
সেই বিদ্যুৎ শক্তি বাতিতে আবার তাপ ও আলোক শক্তিতে পরিবর্তিত হয়।
৬। শব্দ শক্তির রূপান্তর
-
কারখানায় জীবাণু ধ্বংস বা জামাকাপড় পরিষ্কার করার জন্য শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করলে শব্দ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপ নেয়।
৭। চৌম্বক শক্তির রূপান্তর
-
লোহার টুকরোকে দ্রুত চুম্বকিত ও বিচুম্বকিত করলে তাপ সৃষ্টি হয়, যা চৌম্বক শক্তির তাপ শক্তিতে রূপান্তরের উদাহরণ।
৮। নিউক্লীয় শক্তির রূপান্তর
-
নিউক্লীয় সাবমেরিনে নিউক্লীয় শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
-
নিউক্লীয় বোমার ধ্বংসযজ্ঞ মূলত নিউক্লীয় শক্তির রূপান্তরের ফল।
-
নিউক্লীয় চুল্লীতে নিউক্লীয় শক্তি বিশেষ করে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে মানুষের শক্তির চাহিদা পূরণ করে।
0
Updated: 1 month ago
বাতাস একটি -
Created: 1 month ago
A
ডায়াচুম্বকীয় পদার্থ
B
প্যারাচুম্বকীয় পদার্থ
C
ফেরোচুম্বকীয় পদার্থ
D
অ্যান্টিফেরোচুম্বকীয় পদার্থ
বায়ু মূলত নাইট্রোজেন (N2), অক্সিজেন (O2), এবং কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) দ্বারা গঠিত, সঙ্গে থাকে জলীয় বাষ্প (H2O) এবং অল্প পরিমাণ অন্যান্য গ্যাস। এই উপাদানগুলোর মধ্যে অক্সিজেন একটি প্যারাম্যাগনেটিক উপাদান,
অর্থাৎ এটি চুম্বকের দিকে আকৃষ্ট হয়, যখন নাইট্রোজেন, আর্গন, এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ডায়াম্যাগনেটিক, অর্থাৎ তারা চুম্বক ক্ষেত্র থেকে হটতে চায়। তবে, অক্সিজেনের প্যারাম্যাগনেটিক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য ডায়াম্যাগনেটিক গ্যাসের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী, তাই বায়ুকে সামগ্রিকভাবে প্যারাম্যাগনেটিক পদার্থ হিসেবে ধরা হয়।
• Magnetic Susceptibility (χm) দিয়ে ডায়াচৌম্বক এবং প্যারাচৌম্বক পদার্থ পৃথক করা যায়।
-
ডায়াচৌম্বক পদার্থের χm ক্ষুদ্র কিন্তু ঋণাত্মক (χm < 0)।
-
প্যারাচৌম্বক পদার্থের χm ক্ষুদ্র কিন্তু ধণাত্মক (χm > 0)।
-
বায়ুর χair = 3.6 × 10^-7, ধণাত্মক হওয়ায় χm > 0, অর্থাৎ এটি প্যারাম্যাগনেটিক।
• Relative Magnetic Permeability (μr) দ্বারা ও তাদের পার্থক্য বোঝা যায়।
-
ডায়াচৌম্বক পদার্থের μr < 1।
-
প্যারাচৌম্বক পদার্থের μr > 1।
-
বায়ুর μair = 1.00000036, যা সামান্য 1 এর বেশি, তাই μr > 1।
• অক্সিজেনের χ0 = 1.8 × 10^-6, ধনাত্মক মানের কারণে এটি প্যারাচৌম্বক।
• নাইট্রোজেনের χn = -6.7 × 10^-9, ঋণাত্মক মানের কারণে এটি ডায়াচৌম্বক।
• বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেন 78.02% এবং অক্সিজেন 20.71% থাকায় χ0 × 20.71% > χn × 78.02%, অর্থাৎ অক্সিজেনের প্যারাম্যাগনেটিক প্রভাব প্রাধান্য পায়।
• ডায়াচৌম্বক পদার্থ: চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে দুর্বল চুম্বকত্ব সৃষ্টি হয় এবং পদার্থ চুম্বক ক্ষেত্র থেকে সরে যায়। উদাহরণ: হাইড্রোজেন, পানি, সোনা, রূপা, তামা, বিসমাথ।
• প্যারাচৌম্বক পদার্থ: চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে পদার্থ চুম্বকের দিকে মুখ করে। উদাহরণ: অক্সিজেন, সোডিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, প্লাটিনাম, টিন।
• ফেরো চৌম্বক পদার্থ: চৌম্বক ক্ষেত্রে রাখলে শক্তিশালী চুম্বকত্ব আবিষ্ট হয় এবং চুম্বকের অভিমুখ অনুযায়ী অক্ষকে সাজায়। উদাহরণ: লোহা, নিকেল, কোবাল্ট।
সারসংক্ষেপে, বায়ুতে উপস্থিত অক্সিজেনের প্যারাম্যাগনেটিক বৈশিষ্ট্য নাইট্রোজেনসহ অন্যান্য গ্যাসের ডায়াম্যাগনেটিক বৈশিষ্ট্যের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী, তাই বায়ু একটি প্যারাম্যাগনেটিক পদার্থ হিসেবে বিবেচিত হয়।
0
Updated: 1 month ago
দুটি লম্বালম্বি শক্তির পরিমাণ ৮ N এবং ১৫ N, তাদের লব্ধি পরিমাণ কত?
Created: 1 month ago
A
৭ N
B
২২ N
C
১৩ N
D
১৭ N
প্রশ্ন: দুটি লম্বালম্বি শক্তির পরিমাণ ৮ N এবং ১৫ N, তাদের লব্ধি পরিমাণ কত?
সমাধান:
দেওয়া আছে,
প্রথম শক্তি, F1 = ৮ N
দ্বিতীয় শক্তি, F2 = ১৫ N
দুটি শক্তি পরস্পর লম্বালম্বি।
যেহেতু বল দুটি লম্বালম্বিভাবে (অর্থাৎ ৯০° কোণে) কাজ করছে, তাদের লব্ধি (R) নির্ণয়ের জন্য পিথাগোরাসের উপপাদ্য (Pythagorean theorem) ব্যবহার করা হয়।
লব্ধি, R = √(F12 + F22)
= √(৮২ + ১৫২)
= √(৬৪ + ২২৫)
= √২৮৯ N
= ১৭ N
সুতরাং, লব্ধি পরিমাণ হলো ১৭ N।
0
Updated: 1 month ago
কোনটি জারক পদার্থ নয়?
Created: 3 weeks ago
A
হাইড্রোজেন
B
অক্সিজেন
C
ক্লোরিন
D
ব্রোমিন
প্রশ্নে বলা হয়েছে, “কোনটি জারক পদার্থ নয়?” — এখানে ‘জারক পদার্থ’ বলতে বোঝায় এমন একটি পদার্থ, যা অন্য পদার্থকে জারিত (oxidize) করে, অর্থাৎ ইলেকট্রন গ্রহণ করে নিজে হ্রাসপ্রাপ্ত (reduced) হয়।
বিষয়টি বোঝার জন্য নিচের দিকগুলো বিবেচনা করা যায়—
অক্সিজেন, ক্লোরিন, এবং ব্রোমিন— এরা সবাই শক্তিশালী জারক পদার্থ, কারণ তারা সহজেই ইলেকট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম। যেমন, অক্সিজেন জারণ বিক্রিয়ায় অংশ নিয়ে অন্য পদার্থ থেকে ইলেকট্রন গ্রহণ করে, ক্লোরিন ও ব্রোমিনও একইভাবে অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।
অন্যদিকে, হাইড্রোজেন জারণ ঘটায় না বরং নিজে সহজেই ইলেকট্রন দান করে। সে কারণে হাইড্রোজেন একটি হ্রাসকারী পদার্থ (reducing agent)। যখন হাইড্রোজেন কোনো যৌগের সঙ্গে বিক্রিয়া করে, তখন তা অন্য পদার্থকে ইলেকট্রন দেয়— অর্থাৎ অন্য পদার্থকে হ্রাস করে, নিজে জারিত হয়।
উদাহরণস্বরূপ, ধাতু অক্সাইডের সঙ্গে হাইড্রোজেনের বিক্রিয়ায় দেখা যায় হাইড্রোজেন নিজে জল তৈরি করে অক্সিজেনকে ইলেকট্রন দেয়, ফলে ধাতু পুনরায় মুক্ত হয়—
CuO + H₂ → Cu + H₂O
এখানে হাইড্রোজেন জারক নয়, বরং হ্রাসকারী হিসেবে কাজ করছে।
অন্যদিকে, অক্সিজেন, ক্লোরিন ও ব্রোমিন—সবাই ইলেকট্রন গ্রহণ করে নতুন যৌগ তৈরি করে, যা তাদের জারক পদার্থ হিসেবে প্রমাণ করে।
অতএব, প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে হাইড্রোজেনই একমাত্র পদার্থ যা জারক নয়, কারণ এটি অন্যকে জারিত না করে বরং নিজে ইলেকট্রন দান করে হ্রাস ঘটায়।
সুতরাং সঠিক উত্তর হলো ক) হাইড্রোজেন।
0
Updated: 3 weeks ago