বাংলা ছন্দ কত রকমের?
A
এক রকমের
B
দু রকমের
C
তিন রকমের
D
চার রকমের
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ছন্দ তিন রকমের।
যথা:
- অক্ষরবৃত্ত,
- মাত্রাবৃত্ত এবং
- স্বরবৃত্ত।
• অক্ষরবৃত্ত ছন্দ:
- উৎপত্তির বিচারে যে ছন্দটিকে খাঁটি বাংলা অর্থাৎ 'তদ্ভব ছন্দ' নামে আখ্যায়িত করা হয়, তাকেই প্রচলিত ভাষায় বলা হয় অক্ষরবৃত্ত ছন্দ।
- অক্ষরবৃত্ত ছন্দ বাংলা কাব্যের প্রধান ছন্দ।
- অক্ষরবৃত্ত ছন্দকে তানপ্রধান ছন্দও বলে।
- পয়ার হচ্ছে অক্ষরবৃত্ত ছন্দের ৮/৬ মাত্রার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ একটি শ্রেণীবিভাগ।
-------------------
• মাত্রাবৃত্ত ছন্দ:
- উৎপত্তির বিচারে এ ছন্দ 'তৎসম' বা 'অর্ধতৎসম ছন্দ'।
- যে ছন্দে প্রাচীন সংস্কৃত ও প্রাকৃত ছন্দের অনেক লক্ষণ অথবা অন্তত কিছুটা লক্ষণও বর্তমান আছে তাকেই বলা হয় 'মাত্রাবৃত্ত ছন্দ'।
- বাংলা সাহিত্যে এ ছন্দকে ধ্বনিপ্রধান, বিস্তারপ্রধান, সরল কলামাত্রিক ইত্যাদি নামেও অভিহিত করা হয়।
---------------------
• স্বরবৃত্ত ছন্দ:
বাংলা ভাষা ও বাঙালির ধ্বনি উচ্চারণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছন্দ হচ্ছে স্বরবৃত্ত ছন্দ। এর কারণ, বাংলা শব্দ স্বভাবগতভাবেই হলন্ত বা ব্যঞ্জনান্ত উচ্চারণ প্রক্রিয়াবিশিষ্ট, যাকে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন ‘হসন্তের ছাঁচ’।
এ বৈশিষ্ট্য স্বরবৃত্ত ছন্দে রক্ষিত হয়েছে। চলিত বা প্রাকৃত বাংলার স্বভাব রক্ষা করে এ ছন্দের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে। ফলে এ ছন্দকে সাধু বাংলার বাইরে বাউল গানে, লোককথায় ও ছড়ায় খুঁজে পাওয়া যায়।
উচ্চারণে দ্রুততা ও সবলতা স্বরবৃত্ত ছন্দের প্রধান বৈশিষ্ট্য। প্রতি পর্বের প্রথমে প্রবল শ্বাসাঘাত যেমন এ ছন্দের দ্রুততার প্রধান কারণ, তেমনি শ্বাসাঘাতের শক্তিই একে করে তুলেছে সবল ও প্রাণবান।
আবার স্বরবৃত্ত ছন্দের প্রধান পর্ব যেহেতু চার মাত্রার এবং তার পরেই থাকে একটি ক্ষুদ্র পর্ব, সেজন্যও এ ছন্দ দ্রুত উচ্চারিত হয়।
স্বরবৃত্ত ছন্দের বহুল প্রচলিত নাম ছড়ার ছন্দ, লৌকিক ছন্দ, লোকছন্দ, মেয়েলি ছন্দ। এটাকে প্রাকৃত বাংলা ছন্দও বলা হয়। প্রাচীন ছড়গুলো স্বরবৃত্তে রচিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একে ছড়া ছন্দ বা লোকছন্দ বলেছেন। এর ভাব লঘু ও চপল।
স্বরবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য
- দ্রুত লয়ের ছন্দ।
- এই ছন্দের মূল পর্ব বা পূর্ণ পর্ব চার মাত্রাবিশিষ্ট।
- মুক্তাক্ষর এবং বদ্ধাক্ষর উভয়ই একমাত্র বিশিষ্ট,পর্বগুলো ছোট ৪ মাত্রা বিশিষ্ট।
উৎস: ভাষা-শিক্ষা, ড হায়াৎ মামুদ এবং বাংলাপিডিয়া; বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 1 month ago
বাংলা ভাষায় ছন্দ প্রধানত কত প্রকার?
Created: 1 month ago
A
২
B
৪
C
৩
D
৫
বাংলা ছন্দের প্রকারভেদ
বাংলা ভাষায় ছন্দ সাধারণত তিন রকম হয়:
-
অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
-
মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
-
স্বরবৃত্ত ছন্দ
১. অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
-
এটি বাংলা ভাষার নিজস্ব ছন্দ, যাকে **‘তদ্ভব ছন্দ’**ও বলা হয়।
-
এটি বাংলা কবিতায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ছন্দ।
-
একে তানপ্রধান ছন্দও বলা হয়, কারণ এতে স্বরের ওঠানামার তাল (তান) গুরুত্বপূর্ণ।
-
পয়ার নামক ছন্দটি এর একটি উদাহরণ, যেখানে ৮ ও ৬ মাত্রার বিন্যাস থাকে।
২. মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
-
এই ছন্দের মূল এসেছে সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষা থেকে।
-
তাই একে ‘তৎসম ছন্দ’ বা ‘অর্ধতৎসম ছন্দ’ বলা হয়।
-
এতে ধ্বনির বিস্তার ও ছন্দের গঠন একটু সোজাসাপটা হয়।
-
একে কখনো কখনো ধ্বনিপ্রধান ছন্দ বা কলামাত্রিক ছন্দও বলা হয়।
৩. স্বরবৃত্ত ছন্দ
-
এই ছন্দ বাংলা ভাষার স্বাভাবিক উচ্চারণের সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে যায়।
-
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এটিকে ‘হসন্তের ছাঁচ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
-
এটি সাধারণত লোককথা, ছড়া, গান ও বাউল সঙ্গীতে পাওয়া যায়।
-
এই ছন্দে দ্রুত ও জোরালো উচ্চারণ লক্ষ করা যায়।
-
মূল পর্ব চার মাত্রার হয়, এরপর একটুখানি ছোট পর্ব থাকে – এ জন্য এটি দ্রুত পড়া যায়।
স্বরবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য
-
দ্রুত ও ছন্দময় লয়ে গঠিত।
-
মূল পর্বে চার মাত্রা থাকে।
-
মুক্ত ও বদ্ধ উভয় ধরনের একমাত্রিক অক্ষর ব্যবহৃত হয়।
-
একে ছড়ার ছন্দ, লোকছন্দ, মেয়েলি ছন্দ নামেও চেনে।
-
প্রাচীন বাংলা ছড়াগুলোর অধিকাংশই এই ছন্দে লেখা হয়েছে।
তথ্যসূত্র:ভাষা-শিক্ষা (ড. হায়াৎ মামুদ)

0
Updated: 1 month ago