'উত্তম পুরুষ' উপন্যাসের রচয়িতা কে?
A
শওকত ওসমান
B
জহির রায়হান
C
শহীদুল্লাহ কায়সার
D
রশীদ করীম
উত্তরের বিবরণ
▣ উত্তম পুরুষ (উপন্যাস পরিচিতি)
রশীদ করীম প্রণীত ‘উত্তম পুরুষ’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। এই সাহিত্যকর্মে লেখক আধুনিক মনন ও সংবেদনশীলতার এক অনন্য চিত্র উপস্থাপন করেছেন।
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র শাকেরকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে এক জটিল সম্পর্কজালের, যেখানে অণিমা, সেলিনা, মুশতাক, শেখর, সলিল, চন্দ্রা, শিশির, নিহার ভাবি প্রমুখ চরিত্র যুক্ত হয়ে তৈরি করেছে এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক আবহ। লেখক যে পরিশীলিত ভাষা ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে উপন্যাসকে নির্মাণ করেছেন, তা পাঠকের সাহিত্যপিপাসা মেটাতে সক্ষম।
চরিত্রগুলোর মধ্যে জটিল মানসিক দ্বন্দ্ব এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন অনেক সময় পাঠকের মনে এক শ্বাসরুদ্ধকর অনুভূতির সৃষ্টি করে।
▣ রশীদ করীম: সংক্ষিপ্ত জীবনী
রশীদ করীম জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৫ সালের ১৪ আগস্ট, কলকাতায়। বাংলা কথাসাহিত্যে অনন্য অবদান রাখার জন্য তিনি বহু সম্মানে ভূষিত হন। তাঁর প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭২), একুশে পদক (১৯৮৪), লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯১) এবং জনকণ্ঠ পুরস্কার (২০০১)। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনের অবসান ঘটে ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর, তাঁর প্রয়াণের মাধ্যমে।
▣ রচনাসম্ভার
উপন্যাস:
-
উত্তম পুরুষ
-
প্রসন্ন পাষাণ
-
আমার যত গ্লানি
-
সোনার পাথরবাটি
-
বড়ই নিঃসঙ্গ
-
লান্সবাক্স
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
আর এক দৃষ্টিকোণ
-
মনের গহীনে তোমার মূর্তিখানি
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
'আবোল-তাবোল' কার লেখা?
Created: 2 months ago
A
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী
B
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
C
সুকুমার রায়
D
সত্যজিৎ রায়
'আবোল-তাবোল'-এর রচয়িতা সুকুমার রায়
বাংলা শিশুসাহিত্যের এক অনন্য নাম সুকুমার রায়। তিনি ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ ও প্রযুক্তিনিপুণ ব্যক্তিত্ব। এই বিশিষ্ট রায় পরিবারের আদি নিবাস ছিল ময়মনসিংহ জেলার মসুয়া গ্রামে।
সুকুমার রায় শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন ব্যঙ্গ-রসিকতার এক নিপুণ কারিগর। তাঁর পুত্র সত্যজিৎ রায় পরবর্তীতে বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার হিসেবে অস্কার লাভ করেন।
সাহিত্যকর্মসমূহ:
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্ম মূলত কিশোর ও শিশু পাঠকদের জন্য হলেও প্রাপ্তবয়স্করাও তাঁর রচনায় বিমোহিত হন।
কবিতা সংকলন:
-
আবোল-তাবোল (ব্যঙ্গ ও কল্পনাপ্রবণ ছড়ার এক অমর সংকলন)
-
খাই খাই (খাবার নিয়ে মজার ছড়াসমূহ)
গল্প ও সংকলন:
-
হযবরল – এক স্বপ্নময় ও রহস্যঘেরা গল্প
-
পাগলা দাশু – কৌতুক ও ব্যঙ্গ-রসের সংমিশ্রণে ভরপুর একটি গল্প সংকলন
নাট্যকর্ম:
-
চলচিত্তচঞ্চরী – সমাজ ও মনস্তত্ত্বভিত্তিক নাটক
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা:
-
অবাক জলপান
-
লক্ষণের শক্তিশেল
-
হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি
-
ঝালাপালা ও অন্যান্য নাটক
-
বহুরূপী
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্মে রস, ছন্দ, ব্যঙ্গ ও কল্পনার এক অপরূপ মিশ্রণ রয়েছে যা বাংলা সাহিত্যে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও প্রিয়।
উৎস:
ড. সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা গ্রন্থ এবং ‘হ-য-ব-র-ল’ গ্রন্থের ভূমিকা।

0
Updated: 2 months ago
'বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত' কার রচনা?
Created: 2 months ago
A
মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
B
মুহাম্মদ আবদুল হাই
C
মুনীর চৌধুরী
D
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্: একজন জ্ঞানতাপস ভাষাবিদ ও সাহিত্যসাধক
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৮৮৫–১৯৬৯) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের এক অসামান্য বাঙালি মনীষী—একাধারে ভাষাবিদ, শিক্ষক, দার্শনিক এবং বহুভাষা-জ্ঞানসম্পন্ন বিদ্বান।
১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই প্রতিভাধর ব্যক্তি, যিনি পরবর্তীতে 'জ্ঞানতাপস' উপাধিতে সমাদৃত হন। তাঁকে অনেকে 'চলিষ্ণু অভিধান' নামেও আখ্যায়িত করেন, তাঁর বিস্তৃত জ্ঞান ও পাণ্ডিত্যের কারণে।
ড. শহীদুল্লাহ্ ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে ‘প্রফেসর ইমেরিটাস’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি—এই তিনটি ক্ষেত্রেই তাঁর প্রভাব ছিল অসামান্য। তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা করেছেন এবং সম্পাদনার কাজেও রেখেছেন অবদান। ‘আল-ইসলাম’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এবং ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনি তার সাহিত্যিক বিচক্ষণতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় মুসলিম বাংলার প্রথম শিশুপত্রিকা ‘আঙুর’, যা ছিল একটি নতুন দিগন্তের সূচনা। পাশাপাশি তিনি সম্পাদনা করেন ‘দি পীস’ (ইংরেজি মাসিক), ‘বঙ্গভূমি’ (বাংলা মাসিক) এবং ‘তকবীর’ (পাক্ষিক) পত্রিকা।
বাংলা ভাষা ও জাতিসত্তা নিয়ে তাঁর চিন্তা ছিল গভীর এবং মানবিক। ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তাঁর এক বিখ্যাত উক্তি:
“আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।”
এই বক্তব্য তাঁর অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল মননচর্চার প্রতিফলন।
তাঁর রচনার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’, যা ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত হয়। এটি বাংলা ভাষার উৎস ও বিকাশ নিয়ে গবেষণালব্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
সিন্দবাদ সওদাগরের গল্প
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
দীওয়ান-ই-হাফিজ
-
শিকওয়াহ ও জওয়াব-ই-শিকওয়াহ
-
রুবাইয়াত-ই-উমর খয়্যাম
-
Essays on Islam
-
আমাদের সমস্যা
-
পদ্মাবতী
-
বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)
-
বিদ্যাপতি শতক
-
বাংলা আদব কী তারিখ
-
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত
-
কুরআন শরীফ
-
অমরকাব্য
-
সেকালের রূপকথা
তাঁর সম্পাদিত আঞ্চলিক ভাষার অভিধান এবং ড. মুহম্মদ আবদুল হাই-এর সঙ্গে যৌথভাবে রচিত “Traditional Culture in East Pakistan” (১৯৬১) গ্রন্থ দুটি গবেষণাক্ষেত্রে অনন্য অবদান হিসেবে বিবেচিত।
উৎস: বাংলাপিডিয়া এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 months ago
'হপ্তপয়কর' কার রচনা?
Created: 3 weeks ago
A
সৈয়দ আলাওল
B
জৈনুদ্দিন
C
দীনবন্ধু মিত্র
D
অমিয় দেব
হপ্তপয়কর কাব্য
-
রচনা কাল: ‘হপ্তপয়কর’ কাব্যটি সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে রচিত।
-
রচনা স্থান: এটি আরাকান রাজসভায় সৈয়দ আলাওল রচনা করেন।
-
বিষয়বস্তু: কাব্যটি মূলত রাজপুত্র বাহরামের সাতটি রাতের কাহিনী নিয়ে গঠিত। রাজপুত্র বাহরাম সাতরাত্রি ধরে সাতজন পরির কাছে সাতটি গল্প শুনেন।
-
সাহিত্যিক গুরুত্ব: পারসি ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ‘হপ্তপয়কর’ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে।
সৈয়দ আলাওলের অন্যান্য বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম
-
পদ্মাবতী
-
হপ্তপয়কর
-
সিকান্দারনামা
-
তোহ্ফা
-
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল ইত্যাদি
উৎস: ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা; বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 3 weeks ago