চন্দ্র বংশের রাজা শ্রীচন্দ্রের রাজধানী কোথায় ছিল?
A
নদীয়া
B
বিক্রমপুর
C
গৌড়
D
রোহিতগিরি
উত্তরের বিবরণ
চন্দ্র বংশ ছিল দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার একটি স্বাধীন রাজবংশ, যারা প্রায় দেড় শতাব্দী ধরে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দশম শতকের শুরু থেকে একাদশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত তারা এ অঞ্চলে শাসন বিস্তার ও প্রতিষ্ঠা করে।
-
এই বংশের প্রথম শাসক ছিলেন পূর্ণচন্দ্র।
-
পূর্ণচন্দ্রের পুত্র সুবর্ণচন্দ্র রোহিতগিরির ভূস্বামী ছিলেন।
-
সুবর্ণচন্দ্রের পুত্র ত্রৈলোক্যচন্দ্র এই বংশের সার্বভৌম ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেন এবং ‘মহারাজাধিরাজ’ উপাধি গ্রহণ করেন।
-
ত্রৈলোক্যচন্দ্র তার শাসন বিস্তার করেন হরিকেল, চন্দ্রদ্বীপ, বঙ্গ ও সমতট অঞ্চলে।
-
তাদের শাসনকেন্দ্র ছিল লালমাই পাহাড়, যা প্রাচীনকালে রোহিতগিরি নামে পরিচিত ছিল।
-
আনুমানিক ৯০০–৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ত্রৈলোক্যচন্দ্র রাজত্ব করেন।
-
তার পুত্র শ্রীচন্দ্র ছিলেন চন্দ্র বংশের সবচেয়ে প্রতাপশালী শাসক।
-
শ্রীচন্দ্র ‘পরমেশ্বর পরম ভট্টারক মহারাজাধিরাজ’ উপাধি ধারণ করেন।
-
তাঁর রাজ্য দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা ছাড়িয়ে উত্তর-পূর্ব কামরূপ এবং গৌড় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
-
তিনি রাজধানী স্থাপন করেন বর্তমান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।
-
আনুমানিক ৯৩০–৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছর তিনি শাসন করেন।
0
Updated: 1 month ago
কে বাংলার সাল গণনা শুরু করেন?
Created: 3 months ago
A
লক্ষ্মণ সেন
B
ইলিয়াস শাহ্
C
বিজয় সেন
D
আকবর
সম্রাট আকবর
তৃতীয় মোগল সম্রাটের নাম ছিল আবুল ফতেহ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর। তাঁর বাবা হুমায়ুন মারা যাওয়ার পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর রাজসিংহাসনে বসেন।
আকবরের শাসনামলে মোগল সাম্রাজ্য রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তিনি ছিলেন সঙ্গীতপ্রিয় এবং সঙ্গীত ভালোবাসতেন। তাঁর দরবারে অনেক জ্ঞানী ও গুণী মানুষদের কদর করা হতো। ভারতীয়, ইরানী, তুরানী ও কাশ্মীরি গায়কদের তিনি তার দরবারে স্থান দিয়েছিলেন।
বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আবুল ফজল লিখেছেন, আকবরের দরবারে ৩৬ জন গায়ক ছিলেন। তাঁর লেখা "আকবরনামা" বইয়ের তৃতীয় খণ্ড "আইন-ই-আকবরী" নামে পরিচিত, যেখানে আকবরের শাসন ও দরবার সম্পর্কে অনেক তথ্য রয়েছে।
আকবরের সময়েই বাংলায় বারো ভুঁইয়ার বিদ্রোহ ঘটে। এছাড়া, ভারতের অন্যতম সেরা সঙ্গীতজ্ঞ তানসেন ছিলেন আকবরের দরবারের সবচেয়ে বিখ্যাত শিল্পী ও বিদ্বান।
আকবর ছিলেন সহনশীল ও সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানো এক সমন্বয়বাদী চিন্তার মানুষ। তিনি কৃষকদের সুবিধার জন্য নতুন বাংলা সন চালু করেন, যা প্রথমে “ফসলি সন” নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে একে বঙ্গাব্দ বলা হয়। এই সন চালু হয় তাঁর সিংহাসনে বসার সময় থেকেই।
১৫৮২ সালে আকবর একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তন করেন যার নাম ছিল দীন-ই-ইলাহি। তিনি জিজিয়া কর (অমুসলিমদের উপর ধার্য করা কর) বাতিল করেন, যা তাঁর ধর্মীয় সহনশীলতার প্রমাণ।
উৎস: ইতিহাস ১ম পত্র, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
0
Updated: 3 months ago
কার নেতৃত্বে কৈবর্ত বিদ্রোহ সংঘটিত হয়?
Created: 2 months ago
A
রুদ্র
B
মহীপাল
C
দিব্যক
D
হর্ষ
কৈবর্ত বিদ্রোহ
-
নেতৃত্বে: দিব্যক (দিব্য)
-
অন্য নাম: বরেন্দ্র বিদ্রোহ
-
ঘটনার সময়: প্রায় ১০৭৫–১০৮০ খ্রিষ্টাব্দ
-
সময়কালীন পাল রাজা: দ্বিতীয় মহীপাল
বিদ্রোহের কারণ ও সূত্রপাত
-
দিব্য প্রথমে পালদের একজন রাজকর্মচারী বা সামন্ত ছিলেন।
-
তিনি জেলে সম্প্রদায় (কৈবর্ত) থেকে শক্তিশালী বাহিনী গঠন করেন।
-
উদ্দেশ্য: বরেন্দ্র অঞ্চলে নিজেদের স্বতন্ত্র সার্বভৌমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
ফলাফল
-
কৈবর্তরা স্বল্প সময়ের জন্য বরেন্দ্র ভূমিতে রাজত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়।
-
১০৮২ খ্রিষ্টাব্দে:
-
মহীপালের ভাই রামপাল
-
সামন্তদের সাহায্য নিয়ে
-
কৈবর্ত শাসক ভীমকে পরাজিত ও হত্যা করেন
-
বরেন্দ্র অঞ্চলে পাল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা
-
উল্লেখযোগ্য তথ্য
-
পাল শাসকদের সমসাময়িক সমতট অঞ্চলে (কুমিল্লা ও বিক্রমপুর)
-
স্বাধীনভাবে শাসনকারী রাজবংশ: খড়গ, দেব, চন্দ্র, বর্ম
-
0
Updated: 2 months ago
ব্রিটিশ বণিকদের বিরুদ্ধে একজন চাকমা জুমিয়া নেতা বিদ্রোহের পতাকা উড়িয়েছিলেন, তার নাম-
Created: 4 months ago
A
রাজা ত্রিদিব রায়
B
রাজা ত্রিভুবন চাকমা
C
জুম্মা খান
D
জান বখশ খাঁ
১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে চাকমা জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ইংরেজরা ১৭৭২-১৭৭৩ সালের মধ্যে চাকমা রাজ্য থেকে মুদ্রার মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করে এবং সেখানে মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতি চালুর নানা পদক্ষেপ নেয়।
এর ফলে চাকমাদের দীর্ঘদিনের সমাজব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও রাজনৈতিক কাঠামো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
চাকমা জনগণ ধীরে ধীরে ইংরেজ শাসনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে। অসন্তোষের পারদ চরমে পৌঁছায় ১৭৮২ সালে, যখন চাকমা নেতা জান বকস খাঁ (বা জুয়ান বক্স খাঁ/জোয়ান বখশ খাঁ) ব্রিটিশদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে মহাপ্রু এলাকায় একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। এই ঘটনাই ছিল কোম্পানির সঙ্গে চাকমা রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের সূত্রপাত।
এই প্রতিরোধ যুদ্ধ প্রায় পাঁচ বছর স্থায়ী হয় (১৭৮২–১৭৮৭)। যদিও কোম্পানি পূর্বে আরও তিনবার (১৭৭০, ১৭৮০ এবং ১৭৮২ সালে) চাকমা রাজ্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়, ১৭৮৫ সালের যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজা জান বকস খাঁ এবং শের দৌলত খাঁর পুত্র এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
চাকমা রাজ্যের বিরুদ্ধে পরিচালিত চারটি যুদ্ধে কোম্পানি কোনো উল্লেখযোগ্য সুবিধা অর্জন করতে পারেনি। উপরন্তু, চাকমা রাজ্যে কোম্পানির আরোপিত বাণিজ্য অবরোধের কারণে দুই পক্ষই চাপে পড়ে এবং ১৭৮৫ সালে একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছায়।
চুক্তির মূল শর্তাবলি ছিল:
-
চাকমা রাজা কোম্পানির সার্বভৌম আধিপত্য স্বীকার করেন।
-
বছরে ৫০০ মণ তুলা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন চাকমারা।
-
কোম্পানি চাকমা রাজ্যের আঞ্চলিক শাসন ও নেতৃত্ব স্বীকার করে।
-
বাণিজ্যিক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এই প্রতিরোধ ইতিহাসে প্রমাণ করে, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে উপমহাদেশের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় আপসহীন ছিল।
তথ্যসূত্র:
বাংলাপিডিয়া (চাকমা), কালের কণ্ঠ কলাম, জুমজার্নাল, Government of Bangladesh - District Gazetteer of Chittagong Hill Tracts, এবং James Minahan’s Encyclopedia of the Stateless Nations: Ethnic and National Groups Around the World।
0
Updated: 4 months ago