গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে অন্যতম ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান কোন সদস্য?
A
শামসুল হক
B
আতাউর রহমান খান
C
শামসুর রাহমান
D
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
উত্তরের বিবরণ
ভাষা আন্দোলনের ঘটনা প্রবাহ ১৯৪৮ সাল থেকেই ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, যখন শিক্ষিত বাঙালি সমাজ রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবিতে সোচ্চার হয়। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা শিক্ষার্থী, বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগায় এবং প্রতিবাদের মাধ্যমে শক্ত ভিত্তি তৈরি করে।
-
১৯৪৮ সালের শুরুতেই শিক্ষিত বাঙালি সমাজ বাংলা ভাষার দাবিতে সরব হয়।
-
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের এক সভায় প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, শিক্ষার প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা গ্রহণ করা উচিত।
-
১৯৪৮ সালের পাকিস্তান গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে ইংরেজির পাশাপাশি উর্দুতে কার্যক্রম শুরু হলে, কুমিল্লার কংগ্রেস সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রতিবাদ করেন এবং বাংলাকেও অধিবেশনের অন্যতম ভাষা করার দাবি জানান।
-
মুসলিম লীগের সকল সদস্য এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে।
-
এ ঘটনার পর পূর্ব বাংলার শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে ব্যাপক প্রতিবাদ করে।
-
২৬ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮ সালে ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়।
-
২ মার্চ ১৯৪৮ সালে শিক্ষার্থী ও বুদ্ধিজীবীদের উপস্থিতিতে দ্বিতীয়বারের মতো ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়।
-
নতুন কমিটির আহ্বানে ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে ধর্মঘট পালন করা হয়।:

0
Updated: 1 day ago
পাকিস্তান শাসনতান্ত্রিক পরিষদের (Constituent Assembly) ধারা বিবরণীতে বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি কে প্রথম করেছিলেন?
Created: 2 months ago
A
আবুল হাশেম
B
শেখ মুজিবুর রহমান
C
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
D
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
গণপরিষদে ভাষা-অধিকার দাবি (২৫ আগস্ট ১৯৪৮)
পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত দাবি উত্থাপন করেন যেন সভার কার্যবিবরণী ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাতেও সংরক্ষিত ও প্রকাশিত হয়। এই প্রস্তাবই পাকিস্তান পর্বে বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে একটি ঐতিহাসিক সূচনা হিসেবে বিবেচিত।
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮৬–১৯৭১)
-
পেশাগত পরিচয়: খ্যাতনামা আইনজীবী; পাশাপাশি সমাজসেবক ও সক্রিয় রাজনীতিবিদ।
-
রাজনৈতিক অবস্থান: দেশভাগ-পরবর্তী পাকিস্তান রাজনীতিতে তিনি অসাম্প্রদায়িক ও নীতিবদ্ধ একজন নেতা হিসেবে কাজ করেন।
-
ভাষা দাবি: ২৫ আগস্ট ১৯৪৮ তারিখে পাকিস্তান গণপরিষদে তিনি কার্যবিবরণীতে বাংলা অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান, যা পরবর্তী ভাষা-আন্দোলনের প্রেরণাদায়ক ঘটনা।
-
শহীদত্ব: ২৯ মার্চ ১৯৭১ গভীর রাতে তাকে ও তাঁর পুত্র দিলীপকুমার দত্তকে গ্রেপ্তার করে ময়নামতি সেনানিবাসে নিয়ে হত্যা করা হয়।
-
স্মৃতি সংরক্ষণ: কুমিল্লা শহরে তাঁর বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া সড়কটি তাঁর স্মরণে “ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সড়ক” নামে পরিচিত।
বাংলার রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি-সংক্রান্ত মাইলফলক
-
১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬: পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন দেওয়া হয়।
-
পাকিস্তান সংবিধান ১৯৫৬: সেই সংবিধানে বাংলার রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সূত্র: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (নবম-দশম শ্রেণী), ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago