কোনটি মুহম্মদ এনামুল হকের রচনা?
A
ভাষার ইতিবৃত্ত
B
আধুনিক ভাষাতত্ত্ব
C
মনীষা মঞ্জুষা
D
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান
উত্তরের বিবরণ
‘মনীষা মঞ্জুষা’ হচ্ছে ড. মুহম্মদ এনামুল হকের লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যবিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ।
অন্যদিকে,
-
‘ভাষার ইতিবৃত্ত’ রচনায় অবদান রেখেছেন ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেন।
-
‘আধুনিক ভাষাতত্ত্ব’ গ্রন্থটি ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ রচিত, যেখানে ভাষা ও সাহিত্যের নানা দিক বিশ্লেষিত হয়েছে।
-
‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ একটি ব্যতিক্রমধর্মী গ্রন্থ, যেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপভাষাগুলো সংগ্রহ ও সংকলন করা হয়েছে। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সম্পাদনায়।
মুহম্মদ এনামুল হক ছিলেন একাধারে বিশিষ্ট গবেষক, প্রজ্ঞাবান সাহিত্যিক এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রগামী ও অন্যতম শ্রদ্ধেয় পণ্ডিত।
তিনি ১৯০২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার বখৎপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্যে তাঁর গবেষণা ও সাধনার মূল উপজীব্য ছিল সত্য অনুসন্ধান ও ঐতিহাসিক চেতনার বিকাশ। বিশেষ করে প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের হারিয়ে যাওয়া পাণ্ডুলিপির সন্ধানে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
তাঁর রচনার মূল প্রেরণা ছিল সাহিত্য ও ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অতীত-বর্তমানের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে দেওয়া।
ড. এনামুল হকের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলি হলো:
-
আরাকান রাজসভায় বাঙ্গালা সাহিত্য (গবেষণামূলক; আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদের সঙ্গে যৌথ),
-
বঙ্গে সূফীপ্রভাব (গবেষণামূলক),
-
বাঙলা ভাষার সংস্কার (ভাষাতত্ত্বভিত্তিক),
-
মুসলিম বাঙলা সাহিত্য (গভীর গবেষণাধর্মী) ইত্যাদি।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া ও ‘মনীষা মঞ্জুষা’ গ্রন্থ।
0
Updated: 3 months ago
'আধ্যাত্মিকা' উপন্যাসের লেখক কে?
Created: 2 months ago
A
প্যারীচাঁদ মিত্র
B
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
C
দামোদর বন্দ্যোপাধ্যায়
D
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
‘আধ্যাত্মিকা’ উপন্যাস এবং প্যারীচাঁদ মিত্র
‘আধ্যাত্মিকা’ একটি বাংলা উপন্যাস, যা লিখেছেন প্যারীচাঁদ মিত্র। এই গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৮৮০ সালে।
প্যারীচাঁদ মিত্র
-
প্যারীচাঁদ মিত্র ছিলেন একজন লেখক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিপ্রেমী এবং ব্যবসায়ী।
-
তিনি ১৮১৪ সালের ২২ জুলাই, কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।
-
তাঁর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল ‘টেকচাঁদ ঠাকুর’।
-
১৮২৭ সালে তিনি হিন্দু কলেজে ভর্তি হন এবং বিখ্যাত শিক্ষক হেনরি ডিরোজিওর অধীনে পড়াশোনা করেন।
-
১৮৩৬ সালে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় কলকাতা পাবলিক লাইব্রেরির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান হিসেবে।
সাহিত্যিক অবদান:
-
প্যারীচাঁদ মিত্রকে বাংলা উপন্যাসের পথিকৃৎ বলা হয়।
-
তাঁর সবচেয়ে পরিচিত ও গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস হলো ‘আলালের ঘরের দুলাল’, যা বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত।
-
তিনি বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, বিশেষ করে নারীশিক্ষা ও নারীদের উপযোগী সাহিত্য তৈরিতে।
-
তাঁর উদ্যোগেই প্রথম বাংলা মাসিক পত্রিকা — ‘মাসিক পত্রিকা’ প্রকাশিত হয়, যা অল্পশিক্ষিতা নারীদের জন্য লেখা হতো। প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৬ আগস্ট ১৮৫৪ সালে।
তাঁর রচিত গুরুত্বপূর্ণ বাংলা বইগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
আলালের ঘরের দুলাল
-
মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়
-
রামারঞ্জিকা
-
কৃষি পাঠ
-
গীতাঙ্কু
-
যৎকিঞ্চিৎ
-
অভেদী
-
ডেভিড হেয়ারের জীবন চরিত
-
এতদ্দেশীয় স্ত্রীলোকদিগের পূর্ব্বাবস্থা
-
বামাতোষিণী
উৎস: আলালের ঘরের দুলাল উপন্যাসের লেখক পরিচিতি ও বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রাচীনতম মুসলমান কবি-
Created: 5 months ago
A
শাহ মুহম্মদ সগীর
B
সাবিরিদ খান
C
শেখ ফয়জুল্লাহ
D
মুহাম্মদ কবীর
শাহ মুহম্মদ সগীর
-
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম মুসলিম কবি হিসেবে শাহ মুহম্মদ সগীর সুপরিচিত।
-
তিনি পঞ্চদশ শতকের কবি ছিলেন।
-
গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের শাসনামলে তিনি সাহিত্যচর্চা করেন।
-
বাংলা সাহিত্যে অনুবাদ কাব্য এবং রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার পথিকৃৎ ছিলেন তিনি।
-
তাঁর শ্রেষ্ঠ অনুবাদ রচনা “ইউসুফ-জোলেখা”।
🔹 ইউসুফ-জোলেখা কাব্য:
-
“ইউসুফ-জোলেখা” একটি রোমান্টিক কাহিনিনির্ভর কাব্য, যা শাহ মুহম্মদ সগীর রচনা করেন।
-
এই কাব্য রচনার সময়কাল হিসেবে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
-
ইউসুফ ও জোলেখার প্রেমকাহিনী বাইবেল ও কোরআনে বর্ণিত। ইরানী কবি ফেরদৌসিও এ বিষয়ে কাব্য রচনা করেছেন।
-
তবে শাহ মুহম্মদ সগীর মূলত কোরআন ও ফেরদৌসির কাব্য থেকেই কাহিনির উপাদান সংগ্রহ করেন; বাইবেলের প্রভাব এখানে অনুপস্থিত।
-
তাঁর রচনাটি বাংলা সাহিত্যে এই বিষয়কে প্রথমবার উপস্থাপন করে এবং পরবর্তী অনেক কবির অনুপ্রেরণার উৎস হয়। যেমন— আব্দুল হাকিম ও শাহ মুহম্মদ গরীবুল্লাহ পরবর্তীতে একই নামে কাব্য রচনা করেন, কিন্তু পথিকৃৎ ছিলেন শাহ মুহম্মদ সগীরই।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর/বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 5 months ago
'সংস্কৃতির ভাঙা সেতু' গ্রন্থ কে রচনা করেছেন?
Created: 3 months ago
A
মোতাহের হোসেন চৌধুরী
B
বিনয় ঘোষ
C
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
D
রাধারমণ মিত্র
‘সংস্কৃতির ভাঙা সেতু’
রচয়িতা: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
পূর্ণনাম: আখতারুজ্জামান মুহম্মদ ইলিয়াস
জন্ম: ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩, গোটিয়া গ্রাম, গাইবান্ধা (মাতুলালয়)
পৈতৃক নিবাস: চেলোপাড়া, বগুড়া
বাংলা কথাসাহিত্যে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস এক শক্তিশালী ও প্রভাবশালী নাম। তাঁর লেখালেখিতে যেমন সমাজবাস্তবতা গভীরভাবে চিত্রিত হয়েছে, তেমনি কালচেতনার ধারাবাহিকতায় ফুটে উঠেছে সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্ব।
তাঁর বর্ণনাশৈলী এবং সংলাপভাষায় যে স্বতন্ত্রতা ও কথ্যরীতির মুন্সিয়ানা দেখা যায়, তা বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে নতুন মাত্রা ও গতি।
বিশিষ্ট রচনাসমূহ:
-
অন্যঘরে অন্যস্বর
-
দোজখের ওম
-
খোয়াবনামা
-
সংস্কৃতির ভাঙা সেতু
এই গ্রন্থগুলোর প্রতিটিতেই রয়েছে সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতির অন্তর্নিহিত টানাপোড়েনের সূক্ষ্ম বর্ণনা।
প্রাসঙ্গিক আরও কিছু গ্রন্থ ও লেখক
-
‘সংস্কৃতি কথা’ – মোতাহের হোসেন চৌধুরী
-
‘সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই’ – শওকত ওসমান
-
‘সভ্যতার সংকট’ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 3 months ago