'পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল'- পংক্তির রচয়িতা কে?
A
মদনমোহন তর্কালংকার
B
রামনারায়ণ তর্করত্ন
C
বিহারীলাল চক্রবর্তী
D
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
উত্তরের বিবরণ
• 'পাখী সব করে রব রাতি পোহাইল' - পঙ্ক্তিটির রচয়িতা মদনমোহন তর্কালঙ্কার ।
------------------------------
• মদনমোহন তর্কালঙ্কার:
- কবি, সমাজসেবক মদনমোহন তর্কালঙ্কার পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিল্বগ্রামে ১৮১৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পারিবারিক উপাধি ‘চট্টোপাধ্যায়’ হলেও প্রাপ্ত উপাধি ‘তর্কালঙ্কার’ হিসেবেই তিনি সুপরিচিত।
- মদনমোহন বিদ্যাসাগরের সহযোগিতায় ‘সংস্কৃত-যন্ত্র’ (১৮৪৭) নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখান থেকে ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যটি সর্বপ্রথম গ্রন্থাকারে মুদ্রিত হয়।
- বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ ও স্ত্রীশিক্ষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় সহযোগিতা দান করেন।
মদনমোহনের মৌলিক কাব্যগ্রন্থ
- রসতরঙ্গিণী (১৮৩৪) ও
- বাসবদত্তা (১৮৩৬) ।
- তিন খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর শিশু শিক্ষা (১৮৪৯ ও ১৮৫৩) শিশুদের উপযোগী একটি অনন্যসাধারণ গ্রন্থ; ‘পাখী সব করে রব রাতি পোহাইল’ শিশুপাঠ্য এই বিখ্যাত কবিতাটি তাঁরই রচনা।
- মদনমোহন সংস্কৃত ভাষায় রচিত বেশ কয়েকখানি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ সম্পাদনা করেন। সেগুলির মধ্যে সংবাদতত্ত্বকৌমুদী, চিন্তামণিদীধিতি, বেদান্তপরিভাষা, কাদম্বরী, কুমারসম্ভব ও মেঘদূত প্রধান।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'পদাবলী'র প্রথম কবি কে?
Created: 3 months ago
A
শ্রীচৈতন্য
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
জ্ঞানদাস
পুথি সাহিত্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত একটি বিশেষ ধারা, যেখানে আরবি, ফারসি, উর্দু ও হিন্দি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়। এই সাহিত্যের বিকাশ ঘটে মূলত আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এবং এর রচয়িতা ও পাঠকগোষ্ঠী প্রধানত ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
‘পুথি’ শব্দটি এসেছে ‘পুস্তিকা’ থেকে, যা সাধারণভাবে যেকোনো গ্রন্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হলেও, এখানে এটি নির্দিষ্ট একটি সাহিত্যধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলা সাহিত্যের এক নির্দিষ্ট সময়ে, ভিন্ন ভাষার প্রভাব মিশিয়ে রচিত সাহিত্যকেই আমরা পুথি সাহিত্য নামে চিনি।
এই ধারার সূচনা করেন হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনুমানিক ১৬৮০–১৭৭০)। তাঁর রচিত আমীর হামজা কাব্যটি যুদ্ধ ও কাহিনিনির্ভর সাহিত্যের একটি দৃষ্টান্ত, যেখানে আরব বিশ্বের ইতিহাস ও পুরাণের ছাপ রয়েছে।
মধ্যযুগের প্রচলিত বাংলা সাহিত্যের ভাষার তুলনায় পুথি সাহিত্যের ভাষা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এতে বাংলা শব্দের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আরবি, ফারসি ও অন্যান্য বিদেশি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই সাহিত্যধারায় প্রায় ৩২% শব্দ ছিল বিদেশি উৎসের। ধারণা করা হয়, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা ও ২৪ পরগনার মুসলমানদের কথ্যভাষাই এর মূল ভিত্তি ছিল।
গরীবুল্লাহ ও তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এই ভাষারীতিতে আরও কয়েকটি কাব্য রচনা করেন এবং তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করে বহু মুসলমান কবি এই ধারা অনুসরণ করে সাহিত্য রচনা করেন। এসব সাহিত্যকর্মের পাঠক সাধারণত সমাজের সকল স্তরের মুসলমান ছিলেন, তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর প্রচলন ছিল সবচেয়ে বেশি।
এই সাহিত্যের ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। রেভারেন্ড জেমস লং এই ভাষাকে ‘মুসলমানী বাংলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং এই ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
এছাড়া, কলকাতার বটতলার ছাপাখানায় এগুলোর ব্যাপক মুদ্রণ ও প্রচার হওয়ায় এগুলিকে ‘বটতলার পুথি’ নামেও ডাকা হয়। গবেষকদের মতে, ভাষা ও বাক্যগঠনের দিক থেকে এ সাহিত্যকে প্রাথমিকভাবে ‘দোভাষী পুথি’ এবং পরবর্তীতে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'প্রভাতফেরির মিছিল যাবে/ ছড়াও ফুলের বন্যা,/ বিষাদগীতি গাইছে পথে/ তিতুমীরের কন্যা।' - কার লেখা?
Created: 1 month ago
A
শামসুর রাহমান
B
আল মাহমুদ
C
আহসান হাবীব
D
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের একজন প্রথিতযশা কবি, যিনি আধুনিক বাংলা কবিতায় নগর ও গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন উপাদান, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের জীবন এবং নর-নারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহ ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর কবিতা সহজপাঠ্য হলেও গভীর ভাবধারার এবং সামাজিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ।
আল মাহমুদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
-
প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ।
-
জন্ম ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে।
-
স্বাধীনতা উত্তরকালে ছিলেন ‘দৈনিক গণকণ্ঠ’ পত্রিকার সম্পাদক।
-
শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ: ‘সোনালী কাবিন’ (১৯৭৩)।
প্রধান কাব্যগ্রন্থ:
-
লোক লোকান্তর
-
সোনালী কাবিন
-
কালের কলস
-
মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো
-
আরব্য রজনীর রাজহাঁস
-
বখতিয়ারের ঘোড়া
-
প্রেমের কবিতা
রচিত উপন্যাস:
-
কাবিলের বোন
-
উপমহাদেশ
-
ডাহুকী
-
কবি ও কোলাহল
রচিত গল্পগ্রন্থ:
-
পানকৌড়ির রক্ত
-
ময়ূরীর মুখ
-
সৌরভের কাছে পরাজিত
‘একুশের কবিতা’ অংশবিশেষ:
ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
দুপুর বেলার অক্ত
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায়?
বরকতের রক্ত।
হাজার যুগের সূর্যতাপে
জ্বলবে এমন লাল যে,
সেই লোহিতেই লাল হয়েছে
কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে!
প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে
ছড়াও ফুলের বন্যা
বিষাদগীতি গাইছে পথে
তিতুমীরের কন্যা।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক:
শামসুর রাহমান:
-
জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর, পুরান ঢাকা।
-
বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলা সাহিত্যের একজন প্রভাবশালী কবি।
-
১৯৬০ সালে প্রকাশিত প্রথম কাব্য: ‘প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে’।
-
জনপ্রিয় কবিতা: ‘স্বাধীনতা তুমি’, ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা’।
-
মুক্তিযুদ্ধকালীন কবিতাগুচ্ছ: ‘বন্দী শিবির থেকে’।
আহসান হাবীব:
-
জন্ম ১৯১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, পিরোজপুর জেলা।
-
শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ: ‘সারাদুপুর’।
-
১৯৬৪ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত, এতে মোট কবিতার সংখ্যা ২৬।
আবদুল গাফফার চৌধুরী:
-
জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর, বরিশাল।
-
পরিচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানের রচয়িতা হিসেবে।
0
Updated: 1 month ago
বাংলা সাহিত্যে “কালকূট” নামে পরিচিত কোন লেখক?
Created: 1 month ago
A
সমরেশ মজুমদার
B
শওকত ওসমান
C
সমরেশ বসু
D
আলাউদ্দিন আল আজাদ
বাংলা সাহিত্যে অনেক লেখক তাঁদের লেখার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। যেমন –
-
সমরেশ বসু – লিখেছেন ‘কালকূট’ নামে।
-
প্রমথ চৌধুরী – তাঁর ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’।
-
প্যারীচাঁদ মিত্র – পরিচিত ছিলেন ‘টেকচাঁদ ঠাকুর’ নামে।
-
সতীনাথ ভাদুড়ী – লিখতেন ‘চিত্রগুপ্ত’ ছদ্মনামে।
-
মণীশ ঘটক – ব্যবহার করেছেন ‘যুবনাশ্ব’ নামটি।
-
বিমল মিত্র – ছদ্মনাম ছিল ‘জাবালি’।
-
বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় – লিখতেন ‘যাযাবর’ নামে।
-
সৈয়দ মুজতবা আলী – ব্যবহার করতেন ‘প্রিয়দর্শী’ নাম।
-
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় – লিখতেন ‘নীল লোহিত’ নামে।
এভাবে দেখা যায়, অনেক বিখ্যাত লেখক তাঁদের সাহিত্যিক পরিচয়ে ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মনাম গ্রহণ করেছেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago