'তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি'- রবীন্দ্রনাথের কোন কাব্যের কবিতা?
A
পূরবী
B
শেষলেখা
C
আকাশ প্রদীপ
D
সেজূঁতি
উত্তরের বিবরণ
'শেষলেখা' কাব্যগ্রন্থ
- 'তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি' কবিতাটি রবীন্দ্রনাথের 'শেষ লেখা'(১৯৪১) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।
- 'শেষলেখা' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সর্বশেষ কাব্যগ্রন্থ।
- কাব্যগ্রন্থটি তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়।
- এ গ্রন্থের নামকরণ রবীন্দ্রনাথ নিজে করে যেতে পারেননি।
- অধিকাংশ কবিতা জীবনের শেষ কয়েকদিনের রচনা।
কবিতার অংশবিশেষ:
"তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে,
হে ছলনাময়ী।
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে।"
-----------------------------
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর:
- তিনি ছিলেন কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ-সংস্কারক।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১ সালের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর অভিজাত ঠাকুর পরিবারে।
- তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।
- এশিয়ার বরেণ্য ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই প্রথম ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘কবি-কাহিনী’ (প্রকাশ:১৮৭৮)।
- আট বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা লেখা শুরু করেন।
- প্রথম প্রকাশিত কবিতা - হিন্দুমেলার উপহার।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রথম নাটক - বাল্মীকি প্রতিভা।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রথম প্রকাশিত ছোটগল্পের নাম- ভিখারিনী।
- ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮) জোড়াসাঁকোর নিজ বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠকুরের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ:
- মানসী,
- সোনার তরী,
- চিত্রা,
- কল্পনা,
- ক্ষণিকা,
- গীতাঞ্জলি,
- বলাকা,
- পূরবী,
- পুনশ্চ,
- পত্রপূট,
- সেঁজুতি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 3 months ago
কোনটি মহাকাব্য?
Created: 2 days ago
A
মহাশ্মশান
B
নীল দর্পণ
C
দুর্গেশ নন্দিনী
D
সারদামঙ্গল
মহাকাব্য সাধারণত এমন এক বিশাল আখ্যানমূলক কাব্য যেখানে বীরত্ব, মানবিক মূল্যবোধ, ধর্ম, সমাজ ও জাতীয় চেতনার প্রতিফলন ঘটে। বাংলা সাহিত্যে ‘মহাশ্মশান’ একটি বিশিষ্ট মহাকাব্য হিসেবে স্বীকৃত। এই কাব্যের মাধ্যমে কবি ইতিহাস, জাতীয়তা এবং ধর্মীয় ভাবধারাকে একত্রিত করে গভীর মানবতাবোধ প্রকাশ করেছেন। নিচে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো।
• ‘মহাশ্মশান’ রচয়িতা মধুসূদন দত্ত। এটি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা। মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩) বাংলা সাহিত্যে আধুনিক মহাকাব্যের প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত।
• এই কাব্যের বিষয়বস্তু ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ, যেখানে বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস এক করুণ পরিণতি লাভ করে। কবি যুদ্ধ, বিশ্বাসঘাতকতা ও জাতীয় বেদনার কাব্যিক চিত্র অঙ্কন করেছেন।
• ‘মহাশ্মশান’ শব্দটি প্রতীকী—এটি বাংলার স্বাধীনতার মৃত্যুক্ষেত্র নির্দেশ করে। কবি এখানে পলাশীর প্রান্তরকে এক মহাশ্মশান হিসেবে চিত্রিত করেছেন যেখানে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা চিরনিদ্রায় শায়িত।
• এই কাব্যটি ইংরেজ শাসন, মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের ইতিহাস কাব্যিক রূপে উপস্থাপন করেছে। ইতিহাস ও কল্পনার মিশ্রণে এটি এক অনন্য কাব্যরূপ পেয়েছে।
• মধুসূদন দত্ত ‘মহাশ্মশান’-এ ইংরেজি মহাকাব্যিক রীতি ও বাংলা ছন্দের সমন্বয় ঘটিয়েছেন। তিনি ব্ল্যাঙ্ক ভার্স বা অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেছেন যা বাংলা কাব্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
• কাব্যের মূল বৈশিষ্ট্য হলো বীরত্ব, ট্র্যাজিক আবহ, ভাষার জৌলুস ও মানবিক আবেগের গভীরতা। এটি কেবল ইতিহাসের পুনর্লিখন নয়, বরং জাতীয় চেতনার জাগরণ ঘটানোর এক শিল্পসম্মত প্রচেষ্টা।
• ‘মহাশ্মশান’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র সিরাজউদ্দৌলা, যিনি বাংলার স্বাধীনতার শেষ প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হন। কবি তাঁকে একজন বীর, দেশপ্রেমিক এবং ট্র্যাজিক নায়ক হিসেবে চিত্রিত করেছেন।
• কাব্যের ভাষা আলঙ্কারিক ও গম্ভীর, যেখানে সংস্কৃতনির্ভর শব্দ ও কাব্যিক রূপকের সমাহার রয়েছে। এটি পাঠকের মনে এক মহত্ত্বের অনুভূতি জাগায়।
• মধুসূদন দত্তের অন্যান্য মহাকাব্য যেমন ‘বীরাঙ্গনা’, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ ইত্যাদির মতোই ‘মহাশ্মশান’-এও তাঁর দার্শনিক চিন্তা ও সাহিত্যিক কুশলতার প্রমাণ মেলে।
• তুলনামূলকভাবে, ‘নীল দর্পণ’ (দীনবন্ধু মিত্র) একটি সামাজিক নাটক, ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং ‘সারদামঙ্গল’ একটি মঙ্গলকাব্য—তাই এগুলো মহাকাব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতএব, প্রশ্নে প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে ‘মহাশ্মশান’ই একমাত্র মহাকাব্য, যা বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস, বীরত্ব ও জাতীয় চেতনাকে কাব্যরূপে মহিমান্বিত করেছে।
0
Updated: 2 days ago
'অনল প্রবাহ' কোন ধরনের সাহিত্য রচনা?
Created: 1 month ago
A
প্রবন্ধ
B
উপন্যাস
C
কাব্যগ্রন্থ
D
নাটক
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর ‘অনল প্রবাহ’ একটি মুসলিম জাগরণমূলক কাব্যগ্রন্থ, যা ১৯০০ সালে প্রকাশিত হয়। এটি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ এবং প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথেই ব্রিটিশ সরকার তা বাজেয়াপ্ত করেছিল। প্রথম সংস্করণে কবিতা ছিল মাত্র নয়টি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: অনল প্রবাহ, তুর্যধ্বনি, মূর্ছনা, বীর-পূজা, অভিভাষণ এবং মরক্কো সংকটে।
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ:
অনল প্রবাহ, আকাঙ্ক্ষা, উচ্ছ্বাস, উদ্বোধন, নব উদ্দীপনা, স্পেন বিজয় কাব্য, সঙ্গীত সঞ্জীবনী, প্রেমাঞ্জলি
তাঁর রচিত উপন্যাস:
রায়নন্দিনী, তারাবাঈ, ফিরোজা বেগম, নূরুদ্দীন
তাঁর রচিত প্রবন্ধ:
স্বজাতি প্রেম, তুর্কি নারী জীবন, স্পেনীয় মুসলান সভ্যতা
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
'নিরালোকে দিব্যরথ' কাব্যগ্রন্থটি কার লেখা ?
Created: 1 week ago
A
সিকান্দার আবু জাফর
B
আল মাহমুদ
C
শামসুর রহমান
D
সৈয়দ শামসুল হক
‘নিরালোকে দিব্যরথ’ বাংলা আধুনিক কবিতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থ। এটি বিখ্যাত কবি শামসুর রহমানের লেখা। তাঁর কবিতায় মানবতাবাদ, স্বাধীনতা, প্রেম, সমাজচেতনা ও জাতীয় চেতনার এক অসাধারণ প্রকাশ দেখা যায়। ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ কাব্যগ্রন্থেও সেই গভীর চিন্তা ও জীবনবোধ প্রতিফলিত হয়েছে।
এই কাব্যগ্রন্থে কবি মানুষের আত্মার জাগরণ, জীবনের আলোক-অন্ধকারের দ্বন্দ্ব ও সত্য-সৌন্দর্যের অনুসন্ধানকে তুলে ধরেছেন। নিচে কাব্যগ্রন্থটির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
-
লেখক পরিচিতি: শামসুর রহমান বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধুনিক কবি। তিনি বাংলা কবিতায় নতুন ধারা এনেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ, শহুরে জীবন, মানবপ্রেম এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয় তাঁর কবিতায় বারবার উঠে এসেছে।
-
প্রকাশকাল ও প্রেক্ষাপট: ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ প্রকাশিত হয় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, যখন সমাজে নানা রাজনৈতিক ও মানসিক টানাপোড়েন চলছিল। কবি সেই সময়ের বাস্তবতা ও মানবজীবনের অন্তর্লোককে তাঁর কবিতায় প্রকাশ করেছেন।
-
কবিতার ধারা ও ভাব: এই কাব্যগ্রন্থে কবির অস্তিত্বচেতনা ও আত্মজিজ্ঞাসা গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি জীবনের আলো-অন্ধকার, দুঃখ-আনন্দ ও বিশ্বাস-সন্দেহের সংঘাতকে কাব্যের ভাষায় রূপ দিয়েছেন।
-
ভাষা ও শৈলী: শামসুর রহমানের ভাষা সহজ, প্রাঞ্জল ও আধুনিক। তিনি কাব্যে এমন ছন্দ ও চিত্রকল্প ব্যবহার করেছেন যা পাঠককে গভীর চিন্তার ভেতর নিয়ে যায়।
-
বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য: ‘নিরালোকে দিব্যরথ’-এ প্রেম, মানবতা, স্বাধীনতা, মৃত্যুচেতনা ও জীবনদর্শন মিলেমিশে এক অনন্য কাব্যিক রূপ পেয়েছে।
-
প্রভাব ও গুরুত্ব: এই গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যে এক নতুন কাব্যভাষা প্রতিষ্ঠা করে। শামসুর রহমানের কবিতার মাধ্যমে আধুনিক নগরজীবন ও মানুষের মানসিক দ্বন্দ্ব প্রথমবারের মতো গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়।
সর্বোপরি, ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ শামসুর রহমানের এক সৃষ্টিশীল ও চিন্তাশীল কাব্যগ্রন্থ, যা বাংলা আধুনিক কবিতাকে নতুন দিশা দিয়েছে এবং কবির সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
0
Updated: 1 week ago