'উদাসীন পথিকের মনের কথা' কোন জাতীয় রচনা?
A
নাটক
B
কাব্য
C
আত্মজৈবনিক উপন্যাস
D
গীতি কবিতার সংকলন
উত্তরের বিবরণ
উদাসীন পথিকের মনের কথা
• ‘উদাসীন পথিক' এই ছদ্মনামে মীর মশাররফ হোসেন ব্যক্তিগত জীবনের পটভূমিতে স্বীয় পারিবারিক ইতিহাস ও সমসাময়িক বাস্তব ঘটনার চিত্র তুলে ধরেছেন এ গ্রন্থে।
• “উদাসীন পথিকের মনের কথা” (১৮৯০) কে প্রকৃতপক্ষে উপন্যাস বা আত্মজীবনীমূলক রচনা এর কোনোটাই বলা যায় না। বরং বলতে হয়, গ্রন্থটি লেখকের আত্মজীবননির্ভর কতিপয় বাস্তব ও কাল্পনিক ঘটনার মিশেল উপন্যাসসুলভ সাহিত্যিক উপস্থাপনা।
• এতে লেখকের পারিবারিক ইতিবৃত্ত বর্ণনা এবং নিজের মাতা-পিতাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধার সঙ্গে চিত্রিত হতে দেখা যায়। উদাসীন পথিকের মনের কথায় হিন্দু-মুসলমানের যে মিলন-কামনা আছে, তার গভীর তাৎপর্য স্বীকার করতে হয়।
---------------------------
• মীর মশাররফ হোসেন:
- মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক।
- ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় তাঁর জন্ম।
- মশাররফ হোসেন ছাত্রাবস্থায় সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালির গ্রামবার্তা প্রকাশিকা-র মফঃস্বল সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন।
- তিনি আজিজননেহার ও হিতকরী নামে দুটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন।
- মীর মোশাররফ ছিলেন বঙ্কিমযুগের অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ।
তাঁর রচিত সাহিত্যকর্ম:
• নাটক:
- বসন্তকুমারী,
- জমীদার দর্পণ,
- বেহুলা গীতাভিনয়,
- টালা অভিনয়।
• উপন্যাস:
- বিষাদ-সিন্ধু।
• আত্মজীবনীমূলক রচনা:
- উদাসীন পথিকের মনের কথা,
- গাজী মিয়াঁর বস্তানী,
- আমার জীবনী,
- কুলসুম জীবনী ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'আনন্দমঠ' উপন্যাসের লেখক কে?
Created: 2 months ago
A
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
B
তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়
C
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
D
আনন্দমোহন বাগচী
‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস
-
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৮৮২ সালে।
-
এই উপন্যাসের পটভূমি ১৭৭০ সালের ছিয়াত্তরের মন্বন্তর এবং সন্ন্যাসী বিদ্রোহ।
-
মূল বিষয়: দেশভক্তি, জাতিপ্রেম ও হিন্দুধর্মে বিশ্বাস।
-
এখানে ‘স্বদেশ’ বলতে বোঝানো হয়েছে বঙ্গভূমিকে এবং ‘ধর্ম’ বলতে বোঝানো হয়েছে হিন্দু ধর্মকে।
-
উপন্যাসে উল্লেখিত ‘বন্দে মাতরম্’ গানটি ইংরেজবিরোধী আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হয়ে ওঠে।
-
এটি ঐতিহাসিক উপন্যাস নয়, তবে এর ঘটনা কল্পিত হলেও বিশ্বাসযোগ্য এবং চরিত্রগুলো আদর্শায়িত।
-
গ্রামীণ জীবনের চিত্র ও মন্বন্তরের বর্ণনা বাস্তবধর্মী।
-
কাহিনিতে প্রেম ও আদর্শের সংঘাত উপন্যাসকে গভীরতা দিয়েছে।
-
‘বন্দে মাতরম্’ গানটি পরে became একটি উদ্দীপক দেশাত্মবোধক স্লোগান।
-
উপন্যাসটির ইংরেজি অনুবাদ করেন:
-
নরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত (The Abbey of Bliss, 1907)
-
শ্রী অরবিন্দ (Ananda Math, 1910)
-
-
এটি একটি বাস্তবধর্মী রোমান্টিক উপন্যাস।
-
এই রচনায় বঙ্কিমচন্দ্রের স্বসম্প্রদায়প্রীতি বা নিজের ধর্ম ও জাতির প্রতি পক্ষপাত লক্ষ্য করা যায়।
● বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
-
তিনি ছিলেন একজন ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক এবং বাংলার নবজাগরণের পথিকৃৎ।
-
জন্ম: ১৮৩৮ সাল, চব্বিশ পরগনার কাঁঠালপাড়া গ্রামে।
-
তাঁকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়।
-
তাঁর প্রথম উপন্যাস: Rajmohan’s Wife (ইংরেজিতে লেখা)।
-
প্রথম সার্থক বাংলা উপন্যাস: দুর্গেশনন্দিনী (১৮৬৫)।
-
প্রথম কাব্যগ্রন্থ: ললিতা তথা মানস (১৮৫৬)।
-
দ্বিতীয় বাংলা উপন্যাস: কপালকুণ্ডলা (১৮৬৬)।
-
তাঁর রচিত বিখ্যাত ত্রয়ী উপন্যাস: আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী, ও সীতারাম।
● বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসসমূহ
-
দুর্গেশনন্দিনী
-
কপালকুণ্ডলা
-
মৃণালিনী
-
বিষবৃক্ষ
-
ইন্দিরা
-
যুগলাঙ্গুরীয়
-
চন্দ্রশেখর
-
রাধারানী
-
রজনী
-
কৃষ্ণকান্তের উইল
-
রাজসিংহ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস কোনটি?
Created: 1 month ago
A
একটি কালো মেয়ের কথা
B
তেইশ নম্বর তৈলচিত্র
C
আয়নামতির পালা
D
ইছামতী
‘একটি কালো মেয়ের কথা’ উপন্যাস
-
লেখক: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
-
প্রকাশিত: ১৯৭১
-
বিষয়: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
-
উপন্যাসের সারসংক্ষেপ: উপন্যাসের কেন্দ্র চরিত্র নাজমা, একজন কালো মেয়ে, পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর পাঞ্জাবির দ্বারা নির্যাতনের শিকার হন। সীমান্ত অতিক্রমের সময় তিনি ‘স্পাই’ হিসেবে ধরা পড়েন এবং ভারতীয় পুলিশ অফিসার ডেভিড আর্মস্ট্রং-এর সামনে জবানবন্দি দেন।
-
উল্লেখযোগ্য উদ্ধৃতি (ডেভিডের জবানবন্দি থেকে):
"এরই মধ্যে এই দেশটাকে এমন করে ভালবেসে ফেললাম যে এই আমার সব থেকে ভালো দেশ, এর থেকে ভালো দেশ আর নেই। আর এই দেশই আমার দেশ।"
-
গুরুত্ব: নাজমার চরিত্র ১৯৭১-এর বাংলাদেশের সংগ্রাম ও কষ্টের প্রতীক হিসেবে উপন্যাসে ফুটে উঠেছে।
‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ উপন্যাস
-
লেখক: আলাউদ্দিন আল আজাদ
-
ফিল্ম অনুবাদ: ‘বসুন্ধরা’ (পরিচালক: সুভাষ দত্ত, ১৯৭৭)
-
উল্লেখযোগ্য অর্জন: চলচ্চিত্রটি ১৯৭৭ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।
‘ইছামতী’ উপন্যাস
-
লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
-
প্রকাশিত: ১৯৫০
-
বিষয়: ইছামতি নদীর তীরবর্তী গ্রামের মানুষের জীবন
-
প্রধান চরিত্র: ভবানী বাঁড়ুয়া, তার পুত্র তিলু, বিলু, নীলু
-
উল্লেখযোগ্য অর্জন: রবীন্দ্র পুরস্কার
-
গুরুত্ব: লেখকের শেষ উপন্যাস, গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
-
জন্ম: ১৮৯৮, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ
-
পেশা: কথাসাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ
-
প্রথম গল্প: ‘রসকলি’ (কল্লোল পত্রিকায় প্রকাশিত)
-
প্রসিদ্ধ ত্রয়ী উপন্যাস: ধাত্রীদেবতা, গণদেবতা, পঞ্চগ্রাম
-
উল্লেখযোগ্য উপন্যাস:
চৈতালি ঘূর্ণি, ধাত্রীদেবতা, কালিন্দী, কবি, হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, গণদেবতা, আরগ্য, নিকেতন, পঞ্চপুণ্ডলী, রাধা ইত্যাদি -
প্রসিদ্ধ ছোটগল্প: রসকলি, বেদেনী, ডাকহরকরা
উৎস: বাংলাপিডিয়া; বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago
বিধবার প্রেম নিয়ে রচিত উপন্যাস কোনটি?
Created: 1 month ago
A
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শেষ প্রশ্ন’
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চোখের বালি’
C
কাজী নজরুল ইসলামের ‘কুহেলিকা’
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘কপালকুণ্ডলা’
চোখের বালি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চোখের বালি’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস।
-
এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০৩ সালে।
-
এই রচনার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ বাংলা উপন্যাসকে এক নতুন ধারায় নিয়ে আসেন।
-
তিনি এখানে কাহিনির ভার কমিয়ে চরিত্রের মনের দ্বন্দ্ব, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও সংকটকে মূল বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেন।
-
প্রধান চরিত্র বিনোদিনী ছিলেন এক বিধবা; তার প্রেম, দুঃখ, প্রত্যাশা কাহিনিকে সামনে এগিয়ে নেয়।
-
আশালতা ছিলেন মহেন্দ্রর স্ত্রী ও পতিব্রতা নারী। কিন্তু মহেন্দ্র স্ত্রীকে উপেক্ষা করে বিধবা বিনোদিনীর প্রতি আকৃষ্ট হন।
প্রধান চরিত্র: বিনোদিনী, মহেন্দ্র, আশালতা, বিহারী, রাজলক্ষ্মী প্রমুখ।
শেষ প্রশ্ন (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘শেষ প্রশ্ন’ উপন্যাসে তিনি বিশ শতকের প্রথম ভাগের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজকে চিত্রিত করেছেন।
-
মানুষের রূপান্তরশীল জীবন, সমাজ ও মানসিকতার পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনি গড়ে ওঠে।
কুহেলিকা (কাজী নজরুল ইসলাম)
-
কাজী নজরুল ইসলামের রাজনৈতিক উপন্যাস ‘কুহেলিকা’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৪১ বঙ্গাব্দে (১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে) ‘নওরোজ’ পত্রিকায়।
-
এটি একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটভিত্তিক উপন্যাস, যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইঙ্গিত ও সমাজচিত্র এক বৃহৎ ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে।
-
উপন্যাসের নায়ক জাহাঙ্গীর।
-
বিখ্যাত উক্তি: “ইহারা মায়াবিনীর জাত, ইহারা সকল কল্যাণের পথে মায়াজাল পাতিয়া রাখিয়াছে।”
চরিত্র: কুহেলিকা, তাহমিনা, ফিরদৌস বেগম ইত্যাদি।
কপালকুণ্ডলা (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
-
‘কপালকুণ্ডলা’ (১৮৬৬) বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস।
-
এটি একদিকে রোমান্টিক, অন্যদিকে সমাজ ও সংস্কারের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরে।
-
গল্পের কেন্দ্রে আছে বনবাসিনী কপালকুণ্ডলা এবং নবকুমারের বিবাহ ও সমাজসংঘাত।
-
উপন্যাসে প্রকৃতির সৌন্দর্য, রহস্য এবং চরিত্রের ট্র্যাজিক পরিণতি একে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে।
-
নায়িকা কপালকুণ্ডলার সংলাপ “পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ?” – বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক সংলাপ হিসেবে খ্যাত।
-
লেখকের জীবদ্দশায় এর আটটি সংস্করণ প্রকাশিত হয় এবং এটি অনেকের মতে বঙ্কিমচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
চরিত্র: কপালকুণ্ডলা, নবকুমার, কাপালিক ইত্যাদি।
উৎস: বাংলাপিডিয়া এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 1 month ago