ত্রিপুরা বা মগধের রাজা ছিলেন চর্যাপদের কোন কবি?
A
ডোম্বী পা
B
দারিক পা
C
কুকুরী পা
D
মহীধর পা
উত্তরের বিবরণ
ডোম্বী পা সম্পর্কে জানা যায় যে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে তিনি ত্রিপুরা বা মগধের রাজা ছিলেন। তাঁর পূর্বসূরী ছিলেন বিরূপ পা। ডোম্বী পা প্রায় ৭৯০ থেকে ৮৯০ সাল পর্যন্ত রাজত্ব করেছেন। বাংল সংকৃত্যায়নের অনুযায়ী, তাঁর জীবৎকাল শেষ হয় দেবপালের রাজত্বকালে (৮০৬-৮৪৯)। তিনি ছিলেন ক্ষত্রিয় বর্ণের, মগধে বিশ্বাসী এবং চুরাশি সিদ্ধদের একজন।
অন্যদিকে, অন্যান্য সিদ্ধ ও পাদের তথ্য নিম্নরূপ:
-
দারিক পা: কিছু ধারণা অনুযায়ী, তিনি লুই পা’র শিষ্য ছিলেন। তাঁর সময়কাল অষ্টম শতকের শেষ ভাগ ও নবম শতকের প্রথমার্ধ। তাঁর চর্যাপনের ভাষা ছিল প্রাচীন বাংলা। অন্য মতে শালীপুত্রের রাজা ইন্দ্রপালই বারিক পা। তাঁর অনুস্থান ছিল উড়িষ্যা, পরে তিনি সিদ্ধা হন।
-
কুকুরী পা: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, কুকুরী পা ছিলেন বাংলাদেশের লোক এবং ইন্দ্রভূতির গুরু। তিনি আট শতকের প্রথমার্ধে বর্তমান ছিলেন। রাহুল সংকৃচ্যায়নের মতে, তিনি দেবপালের রাজত্বকালে ছিলেন এবং জীবৎকালের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ৮৩০ সাল। তাঁর স্থান কপিলাবস্তু, জন্ম ব্রাহ্মণ বংশে, এবং তিনি ছিলেন অন্যতম সিদ্ধা। তারানাথের মতে, তিনি একটি কুকুরী উঠদন্য সঙ্গে রাখতেন, তাই কুকুরী পা নামে পরিচিতি পান।
-
মহীধর পা: তিনি কাজলার শিষ্য ছিলেন। তাঁর পদের ভাষা প্রাচীন মৈথিলি। জীবৎকাল ৮৭৫ সাল থেকে। তিনি বিগ্রহ পাল-নারায়ণ পালের রাজত্বকালে জীবনধারণ করেছিলেন। জন্মস্থান মগণ, বর্গে শূদ্র, এবং কারও মতে তিনি দারিক পা’র শিষ্য ছিলেন।
0
Updated: 1 month ago
মুনিদত্তের মতে চর্যাপদের পদসংগ্রহের নাম কী?
Created: 2 months ago
A
চর্যাচর্যবিনিশ্চয়
B
চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয়
C
আশ্চর্যচর্যাচয়
D
চর্যাগীতিকোষ
(চর্যাপদ)
-
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের একমাত্র নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক নিদর্শন।
-
আবিষ্কার ও সম্পাদনা:
-
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের তৃতীয় সফরে ১৯০৭ সালে রাজগ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের কতকগুলো পদ আবিষ্কার করেন।
-
তাঁর সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ ১৯১৬ সালে সেই সমস্ত পদ প্রকাশ করে। প্রকাশিত গ্রন্থের শিরোনাম: হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা (চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, কৃষ্ণপাদের দোহা ও ডাকার্ণব-এর চারটি পুঁথি একত্রে)।
-
-
নামকরণ:
-
প্রাপ্ত পুঁথিতে সংস্কৃত টীকাকার মুনিদত্ত অনুসারে পদসংগ্রহের নাম আশ্চর্যচর্যাচয়।
-
নেপালের পুঁথিতে পদগুলোর নাম চর্যাচর্যবিনিশ্চয়।
-
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী উভয় নাম মিলিয়ে চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয় নাম প্রস্তাব করেন।
-
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago
চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন কে?
Created: 1 month ago
A
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
যতীন্দ্র মোহন বাগচী
C
প্রফুল্ল মোহন বাগচী
D
প্রণয়ভূষণ বাগচী
চর্যাপদকে ঘিরে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইতিহাসে পাওয়া যায়। ১৯৩৮ সালে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতী ভাষার অনুবাদ আবিষ্কার করেন এবং তা প্রকাশ করে দীর্ঘদিনের রহস্য বা চর্যার জট উন্মোচন করেন। উল্লেখযোগ্য যে, চর্যাপদকে তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন কীর্তিচন্দ্র।
-
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রথম কাব্যগ্রন্থ/কবিতা সংকলন/গানের সংকলন হিসেবে স্বীকৃত।
-
এটি বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।
-
ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
-
চর্যাগুলো রচনা করেছিলেন বৌদ্ধ সহজিয়াগণ, যেখানে বৌদ্ধধর্মের আধ্যাত্মিক দিক উঠে এসেছে।
-
সুকুমার সেন তাঁর বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রথম খন্ড) গ্রন্থে চর্যাপদের ২৪ জন পদকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন।
-
অপরদিকে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পাদিত Buddhist Mystic Songs গ্রন্থে চর্যাপদের ২৩ জন কবির নাম পাওয়া যায়।
-
পদসংখ্যা নিয়ে মতভেদ আছে। সুকুমার সেন মনে করেন চর্যাপদের পদ সংখ্যা ৫১টি; তবে তাঁর চর্যাগীতি পদাবলী গ্রন্থে তিনি ৫০টি পদের উল্লেখ করেছেন। মুনিদত্তও ৫০টি পদ ব্যাখ্যা করেছিলেন।
-
ড. শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের পদ সংখ্যা ৫০টি।
0
Updated: 1 month ago
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সম্পাদিত চর্যাপদ বিষয়ক গ্রন্থের নাম কী?
Created: 2 months ago
A
Buddhist Mystic Songs
B
চর্যাগীতিকা
C
চর্যাগীতিকোষ
D
হাজার বছরের পুরাণ বাংলা ভাষার বৌদ্ধগান ও দোহা
চর্যাপদ
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর পর্যবেক্ষণ:
-
চর্যাপদ নিয়ে তার রচিত গ্রন্থের নাম “Buddhist Mystic Songs”।
-
তার মতে, চর্যাপদ ৬৫০-১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত।
-
এই গ্রন্থে চর্যাপদের ২৩ জন কবির নাম পাওয়া যায়।
-
এছাড়া চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব এবং বৌদ্ধধর্মের প্রভাবও আলোচিত হয়েছে।
অন্য গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ও গবেষকরা:
-
“চর্যাগীতিকা” গ্রন্থের রচয়িতা: মুহম্মদ আবদুল হাই।
-
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী রচিত গ্রন্থ: “হাজার বছরের পুরান বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা”।
চর্যাপদ
-
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম গ্রন্থ এবং বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।
-
সুকুমার সেনের “বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস” (প্রথম খন্ড) অনুযায়ী চর্যাপদের ২৪ জন পদকর্তার নাম পাওয়া যায়।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর Buddhist Mystic Songs গ্রন্থে ২৩ জন কবির নাম উল্লেখ আছে।
-
চর্যাপদের প্রথম পদটির রচয়িতা হলেন লুইপা।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের মোট পদ সংখ্যা ৫০, তবে সুকুমার সেনের মতে ৫১টি।
-
চর্যাপদের পদগুলো বৌদ্ধ সহজিয়াগণ রচনা করেছেন।
-
বিষয়বস্তু প্রধানত বৌদ্ধধর্ম সংক্রান্ত।
-
প্রধান কবিরা: সরহপা, শবরপা, লুইপা, ডোম্বীপা, ভুসুকুপা, কাহ্নপা, কুক্কুরীপা, মীনপা, আর্যদেব, ঢেণ্ঢনপা ইত্যাদি।
-
কাহ্নপা সর্বোচ্চ ১৩টি পদ রচনা করেছেন।
-
ভুসুকুপা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, ৮টি পদ রচনা করেছেন।
-
চর্যাপদে রচিত পদগুলো সন্ধ্যা বা সান্ধ্যাভাষায় লেখা।
-
২৩ নং পদটি খণ্ডিত আকারে পাওয়া যায়।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago