ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের নাম-
A
বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
B
বাংলা সাহিত্যের কথা
C
বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস
D
বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত
উত্তরের বিবরণ
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও তাঁর ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থ সম্পর্কে তথ্য
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থ: ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ রচিত বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসগ্রন্থ ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’। এই গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও মধ্যযুগের বিবরণে অনন্য। এটি বিভিন্ন সময়ে একাধিক সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে:
-
প্রথম সংস্করণ: এপ্রিল, ১৯৫৩
-
দ্বিতীয় সংস্করণ (নতুন): এপ্রিল, ১৯৬৩
-
তৃতীয় সংস্করণ (পরিমার্জিত): কার্তিক ১৩৭৩ বঙ্গাব্দ (অক্টোবর, ১৯৬৬)
-
চতুর্থ সংস্করণ (পরিবর্ধিত ও নূতন): শ্রাবণ ১৩৭৫ বঙ্গাব্দ (জুলাই, ১৯৬৮)
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: জীবনী ও অবদান
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অগ্রদূতদের একজন। তিনি ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা ভাষা-সাহিত্য ও গবেষণায় তাঁর অবদানের কারণে তিনি ‘জ্ঞানতাপস’ উপাধিতে পরিচিত হন। তাঁর পাণ্ডিত্য ও স্মরণশক্তির জন্য তাঁকে ‘চলিষ্ণু অভিধান’ বলেও অভিহিত করা হয়।
বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাতিসত্তা নিয়ে তাঁর বিখ্যাত মন্তব্যটি এখনো প্রাসঙ্গিক ও শক্তিশালী—
"আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।"
বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও মধ্যযুগের ইতিহাস লেখার পাশাপাশি ভাষা-সংক্রান্ত বহু জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার তিনি বিশ্লেষণধর্মী সমাধান প্রদান করেছেন।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্-র উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ:
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত
-
দীওয়ানে হাফিজ
-
রুবাইয়াত-ই-ওমর খৈয়াম
-
নবী করিম মুহাম্মাদ
-
ইসলাম প্রসঙ্গ
-
বিদ্যাপতি শতক
-
বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)
-
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ
-
ব্যাকরণ পরিচয়
-
বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান
-
মহররম শরীফ
-
টেইলস ফ্রম দি কুরআন
-
Buddhist Mystic Songs (১৯৬০)
-
Hundred Sayings of the Holy Prophet
তথ্যসূত্র:
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া এবং 'বাংলা সাহিত্যের কথা' (প্রথম খণ্ড)

0
Updated: 1 month ago
কোনটি ইব্রাহিম খাঁর গ্রন্থ নয়?
Created: 3 months ago
A
আনোয়ার পাশা
B
ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র
C
কুচবরণের কন্যে
D
সোনার শিকল
ইব্রাহিম খাঁ
জন্ম ও পটভূমি:
ইব্রাহীম খাঁ ১৮৯৪ সালে টাঙ্গাইল জেলার শাবাজ নগর গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পেশা ও পরিচিতি:
তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজচিন্তক। নাটক, গল্প, উপন্যাস, শিশুসাহিত্য, ভ্রমণকাহিনি এবং স্মৃতিকথা মিলিয়ে তাঁর রচনাসংখ্যা ২১টি।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি:
-
ব্রিটিশ আমলে: ‘খান সাহেব’ ও ‘খান বাহাদুর’ উপাধি
-
পাকিস্তান আমলে: ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’
-
সাহিত্যিক অবদান:
-
বাংলা একাডেমি পুরস্কার (নাটকে) – ১৯৬৩
-
একুশে পদক (সাহিত্যে) – ১৯৭৬
-
মৃত্যু:
তিনি ১৯৭৮ সালের ২৯ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
✍️ সাহিত্যকর্ম:
স্মৃতিকথা:
-
বাতায়ন — যা সমকালীন মুসলিম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে বিবেচিত।
নাটক:
-
আনোয়ার পাশা
গল্প:
-
সোনার শিকল
-
আলু বোখরা
-
ব্যাঘ্র মামা
উপন্যাস:
-
ঋণ পরিশোধ
-
কামাল পাশা
ভ্রমণকাহিনি:
-
ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র
-
বেদুঈনদের দেশে
শিশুসাহিত্য:
-
কুচবরণ কন্যা রচনা করেন বন্দে আলী মিয়া, এটি ইব্রাহীম খাঁর রচনা নয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া ও ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 3 months ago
কোন গ্রন্থটি মহাকাব্য?
Created: 1 month ago
A
অবকাশ রঞ্জিনী
B
বৃত্রসংহার
C
বিরহ বিলাপ
D
বীরাঙ্গনা কাব্য
বৃত্রসংহার
- 'বৃত্রসংহার' হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত মহাকাব্য।
- মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে রচিত হয়েছে এ কাব্যটি এবং এটি তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা।
- এতে মূলত সমসাময়িক সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের জয় ঘোষিত হয়েছে।
- 'বৃত্রসংহার' মহাকাব্যের প্রথম খণ্ড ১৮৭৫ ও দ্বিতীয় খণ্ড ১৮৭৭ সালে প্রকাশিত হয়।
অন্যদিকে,
- নবীনচন্দ্র সেন রচিত কাব্য- অবকাশ রঞ্জিনী।
- 'বিরহ বিলাপ' কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা কায়কোবাদ। এটি তাঁর রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ।
- বাংলা সাহিত্যের প্রথম পত্রকাব্য মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত বীরাঙ্গনা কাব্য। ১৮৬২ সালে এই গ্রন্থ রচিত ও প্রকাশিত হয়।
---------------------
• হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়:
- তিনি হুগলির গুলিটা গ্রামে ১৮৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
- কর্মজীবনে হেমচন্দ্র আইনজীবী হিসেবেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।
- হিন্দু জাতীয়তাবাদের আদর্শে তিনি তাঁর রচনায় দেশপ্রেমকে তুলে ধরেন।
• তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ:
- চিন্তাতরঙ্গিণী (হেমচন্দ্রের প্রথম কাব্যগ্রন্থ যা ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হয়)।
- আশাকানন।
- ছায়াময়ী।
- দশমহাবিদ্যা।
- চিত্তবিকাশ।
- বীরবাহু কাব্য (এটি আখ্যানকাব্য যা ১৮৬৪ সালে প্রকাশিত হয়)।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
কোন গ্রন্থটির রচয়িতা এস ওয়াজেদ আলি?
Created: 2 months ago
A
আশা-আকাঙ্ক্ষার সমর্থনে
B
ভবিষ্যতের বাঙালি
C
উন্নত জীবন
D
সভ্যতা
‘ভবিষ্যতের বাঙালি’ গ্রন্থ ও এস ওয়াজেদ আলি: এক দৃষ্টিপাত
‘ভবিষ্যতের বাঙালি’ শিরোনামের প্রবন্ধগ্রন্থটি রচনা করেছেন বিশিষ্ট বাঙালি চিন্তাবিদ, লেখক ও প্রাবন্ধিক এস ওয়াজেদ আলি। এই গ্রন্থে তিনি হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সেতুবন্ধন গড়ে তুলে একটি সাম্প্রদায়িকতা-বর্জিত, ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের স্বপ্ন তুলে ধরেছেন।
এস ওয়াজেদ আলি: সংক্ষিপ্ত পরিচয়
এস ওয়াজেদ আলির সাহিত্যিক পরিচয় বহুস্তরীয়—তিনি প্রবন্ধকার, গল্পকার এবং ভ্রমণকাহিনী রচয়িতা হিসেবে সমানভাবে খ্যাত। তাঁর জন্ম ১৮৯০ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শণ্ঠীরামপুর মহকুমার বড় তাজপুর গ্রামে। সাহিত্যজগতে তার প্রবেশ ঘটে ‘অতীতের বোঝা’ নামক প্রবন্ধের মাধ্যমে, যা ১৯১৯ সালে প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সবুজপত্রে প্রকাশিত হয়।
১৯৩২ সালে তিনি ‘গুলিস্তাঁ’ নামক একটি সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যচর্চায় নতুন মাত্রা যোগ করেন।
উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম
তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধগ্রন্থ রচনা করেছেন, যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
-
জীবনের শিল্প
-
প্রাচ্য ও প্রতীচ্য
-
ভবিষ্যতের বাঙালী
-
আকবরের রাষ্ট্র সাধনা
-
মুসলিম সংস্কৃতির আদর্শ
উপন্যাস ও ভ্রমণবিষয়ক রচনা
তাঁর একমাত্র উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক উপন্যাস গ্রানাডার শেষ বীর, পাঠকদের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
ভ্রমণ সাহিত্যে তাঁর অবদানও প্রশংসনীয়। এর মধ্যে পশ্চিম ভারত এবং মোটরযোগে রাঁচী সফর উল্লেখযোগ্য।
তথ্যসূত্র:
ড. সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago