কম্বলারম্ভপা ও তার ৮ নং পদ
-
আবিষ্কার: মণীন্দ্রমোহন বসু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কবিতার সঙ্গে কম্বলারম্ভপার ৮ নং পদে সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন।
-
কবি পরিচয়: কম্বলারম্ভপা ছিলেন বৌদ্ধগান রচয়িতা। তিনি ইন্দ্রভূতি ও জালন্ধরীপার গুরু ছিলেন।
-
সমকালীনতা: আনুমানিক ৭৫০ শতকের দিকে, জীবৎকাল ৮৪০ অবধি।
-
উৎস: বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ মনে করেন, তিনি কঙ্কারামের বা কঙ্করের রাজপুত্র। অন্য কেউ মনে করেন উড়িষ্যা বা পূর্ব ভারতের বাসিন্দা।
-
চর্যায় পরিচিতি: ভিক্ষু ও সিদ্ধা হিসেবে পরিচিত।
রচনার বিষয়বস্তু ও শৈলী:
-
কম্বলারম্ভপা সমসাময়িক জীবন, লোকজীবনের ঘটনা, এবং ধর্মীয় নৈতিকতা নিয়ে কাব্য রচনা করেছেন।
-
তার কাব্য অলঙ্কার ও শিল্প সুষমারূপে লোকজীবনের চিত্র ফুটে ওঠে।
৮ নং পদ (সংক্ষিপ্ত অংশ):
সোনে ভরিতী করুণা নাবী। রূপা থোই নাহিক ঠাবী। বাহতু কামলি গঅণ উবেসে। গেলী জাম বাহুড়ই কইসে। ঘুন্টি উপাড়ী মেলিলি কাচ্ছি। বাহতু কামলি সদ্গুরু পুচ্ছি। মাঙ্গত চড়হিলে চউদিস চাহঅ। কেডুআল নাহি কেঁ কি বাহবকে পারঅ। বাম দাহিণ চাপী মিলি মিলি মাঙ্গা। বাচত মিলিল মহাসুহ সাঙ্গা।
আধুনিক বাংলায় অনুবাদ:
"আমার করুণা-নৌকা সোনায় ভর্তি রয়েছে; তাতে রূপা রাখার ঠাঁই নেই। ওরে কম্বলি পা, গগনের (নির্বাণের) উদ্দেশ্যে তুমি বেয়ে চলো; যে জন্ম গেছে সে ফিরবে কি করে? (নৌকা বাইতে গিয়ে) খুঁটি উপড়ে ফেলো, কাছি মেলে দাও। সদগুরুকে জিজ্ঞেস করো, হে কম্বলি পা, তুমি বেয়ে যাও। পথে বেরিয়ে দুনিয়ার পাঠক এক হও! চারদিকে চেয়ে এগিয়ো; কেড়ুয়াল ছাড়া কেউ কি বাইতে পারে? বাম-ডানে চেপে পথ বেয়ে গেলে ঐ পথেই মহাসুখের সঙ্গে মিলে যাবে।"