চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের ধারা প্রবর্তন করেছিলেন কোন কবি?
A
মাণিক দত্ত
B
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
C
ময়ূরভট্ট
D
ঘনরাম চক্রবর্তী
উত্তরের বিবরণ
মাণিক দত্ত চণ্ডীমঙ্গলের আদিকবি হিসেবে খ্যাত।
-
মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর কবিবন্দনায় মাণিক দত্তের নাম উল্লেখ আছে, যা থেকে ধারণা করা হয় যে তিনি চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের ধারা প্রবর্তন করেছিলেন।
-
মাণিক দত্তের নামে কিছু পুঁথি প্রচলিত আছে, তবে সেগুলি প্রাচীন নয়; সম্ভবত তাঁর কাব্য অনুসরণে অন্য কেউ এই পুঁথি তৈরি করেছেন।
-
কবির রচনা থেকে মনে হয় তিনি গৌড় বা মালদহ অঞ্চলের লোক, এবং তাঁর কাব্যে উল্লেখিত নদী ও গ্রামগুলো মালদহ অঞ্চলে অবস্থিত। তিনি ফুলুয়া নগরে বসবাস করতেন, যা বর্তমানে ফুলবাড়ি নামে পরিচিত।
-
কবি সম্ভবত ষোল শতকের বহু পূর্বে আবির্ভূত। চণ্ডীর উৎপত্তি ব্যাখ্যা দিতে যে সৃষ্টিতত্ত্ব বর্ণনা করেছেন, তাতে অভিনবত্ব লক্ষ্য করা যায় এবং ধর্মমঙ্গলের কাহিনির সঙ্গে মিল দেখা যায়।
-
আত্মবিবরণী অনুযায়ী, তিনি ছিলেন কানা ও খোঁড়া, দেবীর দয়ায় সুস্থ হন এবং দেবীর স্বপ্নাদেশে কাব্য রচনা করেন। কথিত আছে, কলিঙ্গরাজের উল্লেখের কারণে তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়, কিন্তু চণ্ডীদেবীর কৃপায় মুক্তি পান; পরবর্তীতে কলিঙ্গরাজও দেবীর অনুগত হন এবং রাজ্যে দেবীর পূজা প্রচলিত হয়।
অন্য উল্লেখযোগ্য ধর্মমঙ্গল কবি:
-
ময়ূরভট্ট: ধর্মমঙ্গল কাব্যের আদিকবি; কোনো পুঁথি পাওয়া যায়নি; পরবর্তীকালের কবিদের রচনায় উল্লেখিত।
-
ঘনরাম চক্রবর্তী: আঠার শতকের ধর্মমঙ্গল ধারার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি।
0
Updated: 1 month ago
সাহিত্যের রূপ ও রীতির বিচারে কোন গ্রন্থটি ব্যতিক্রম?
Created: 1 month ago
A
বাংলা কাব্য
B
দিবারাত্রির কাব্য
C
শেষের কবিতা
D
নদী ও নারী
সাহিত্যের রূপ ও রীতির বিচারে ব্যতিক্রমী গ্রন্থটি হলো বাংলা কাব্য। কারণ, দিবারাত্রির কাব্য, শেষের কবিতা এবং নদী ও নারী — এই তিনটি গদ্যসাহিত্য তথা উপন্যাস, যেখানে বাংলা কাব্য পদ্যে রচিত।
• দিবারাত্রির কাব্য উপন্যাস
-
লেখক: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
-
প্রকাশকাল: ১৯৩৫ সাল
-
প্রধান চরিত্র: হেরম্ব ও আনন্দ প্রমুখ
• শেষের কবিতা উপন্যাস
-
এটি একটি রোমান্টিক-মনস্তাত্ত্বিক কাব্যিক উপন্যাস
-
প্রকাশকাল: ১৯২৯ সাল
-
একে কাব্যোপন্যাস বলা হয়
-
এতে বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা চিত্রিত হয়েছে
• নদী ও নারী উপন্যাস
-
লেখক: হুমায়ুন কবির
-
এটি তাঁর একমাত্র উপন্যাস, প্রথমে ইংরেজিতে Men and Rivers নামে রচিত হয় (১৯৪৫ সালে)
-
বাংলা সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৯৫২ সালে
-
উপন্যাসে পূর্ববঙ্গ তথা বর্তমান বাংলাদেশের পদ্মাবিধৌত ফরিদপুর অঞ্চলের ভূমিহীন কৃষিশ্রমজীবী বাঙালি মুসলমানের জীবনচিত্র ফুটে উঠেছে
-
এটি বাংলাদেশের সমাজ-ইতিহাসে এক মাইলফলক হিসেবে গণ্য
-
উপন্যাসে নদী ও নারীর প্রভাব মানুষের জীবনে কেমন গভীরভাবে আলোড়ন তোলে তা স্পষ্টভাবে চিত্রিত হয়েছে
-
চরিত্রগুলোর মাধ্যমে লেখক বাঙালি মুসলমানের সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবনের ভেতর-বাহিরকে নিপুণভাবে তুলে ধরেছেন
-
মানুষের জীবন আসলে এক অবিরাম সংগ্রাম, পদ্মার চরাঞ্চলের মানুষের জীবনের মধ্য দিয়ে এ সত্য উপন্যাসে প্রকাশ পেয়েছে
0
Updated: 1 month ago
মধ্যযুগের কোন কবির কাব্যকে 'রাজকণ্ঠের মণিমালা' বলে অভিহিত করা হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
চণ্ডীদাস
B
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
C
গোবিন্দদাস
D
বিদ্যাপতি
বিদ্যাপতি
-
পরিচয়: বিদ্যাপতি ছিলেন বৈষ্ণব কবি এবং পদসঙ্গীত ধারার রূপকার। বাঙালী না হলেও বাংলা সাহিত্যে তার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
-
ভাষা ও রচনা:
-
মাতৃভাষা মৈথিলি ছাড়াও সংস্কৃত, অবহট ও ব্রজবুলিতে পদাবলি রচনা করেছেন।
-
শৈব বংশের হওয়ায় তিনি বহু শৈবসঙ্গীতও রচনা করেছেন।
-
-
উপাধি: মৈথিল কোকিল, অভিনব জয়দেব, নব কবিশেখর, কবিরঞ্জন, কবিকণ্ঠহার, পণ্ডিত ঠাকুর, সদুপাধ্যায়, রাজপণ্ডিত ইত্যাদি।
-
সৃজনশীল অবদান:
-
ব্রজবুলিতে রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদাবলি তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি।
-
বিদ্যাপতি সহস্রাধিক পদাবলি রচনা করেছেন। রাধাকৃষ্ণের উল্লেখ রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পদে।
-
অন্যান্য পদগুলিও প্রেমলীলা বিষয়ক হিসাবে গ্রহণযোগ্য।
-
-
কাব্য ও কাব্যসমালোচকের মন্তব্য:
-
মিথিলার রাজসভায় বিদ্যাপতি সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষার ভাব, শব্দ, ছন্দ ও অলঙ্কারের রত্নরাজি ব্যবহার করে রাধার প্রেম বর্ণনা করেছেন।
-
বঙ্কিমচট্টোপাধ্যায়: “বিদ্যাপতির কবিতা স্বর্ণহার, বিদ্যাপতির গান মুরজবীণাসঙ্গিনী স্ত্রীকণ্ঠগীতি।”
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: বিদ্যাপতির কাব্যকে “রাজকণ্ঠের মণিমালা” বলে অভিহিত করেছেন।
-
0
Updated: 1 month ago
ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য কোন কাব্যের উপজীব্য?
Created: 5 months ago
A
জিঞ্জির-কাজী নজরুল ইসলাম
B
সাত সাগরের মাঝি-ফররুখ আহমদ
C
দিলরুবা-আবদুল কাদির
D
নূরনামা-আবদুল হাকিম
কাব্যগ্রন্থ: সাত সাগরের মাঝি
-
রচয়িতা: ফররুখ আহমদ
-
প্রকাশকাল: ১৯৪৪
-
প্রকৃতি: মুসলিম জাগরণমূলক কাব্যগ্রন্থ
-
মূল উপজীব্য: ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুসলিম উম্মাহর জাগরণ
-
কবিতার সংখ্যা: ১৯টি
-
অন্তর্ভুক্ত উল্লেখযোগ্য কবিতা:
-
সাত সাগরের মাঝি (গ্রন্থের শেষ কবিতা)
-
সিন্দাবাদ
-
পাঞ্জেরি
-
লাশ
-
আউলাদ
-
দরিয়ার শেষরাত্রি
-
-
বৈশিষ্ট্য:
-
আরব্য উপন্যাস, ইরান-আরবের সংস্কৃতি ও পুরাণকথা ব্যবহৃত হয়েছে।
-
বঙ্গীয় শব্দ ও অনুষঙ্গ পরিহার করে মুসলিম চেতনার রূপায়ণ ঘটানো হয়েছে।
-
কবি পরিচিতি: ফররুখ আহমদ
-
জন্ম: ১০ জুন ১৯১৮, মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মাঝাইল গ্রামে।
-
পরিচিতি: মুসলিম পুনর্জাগরণবাদী কবি
-
খ্যাতি অর্জন:
-
লাশ কবিতার মাধ্যমে (১৯৪৪ সালের কলকাতার দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে রচিত)
-
-
পুরস্কার:
-
আদমজী পুরস্কার (১৯৬৬) – কাহিনী কাব্য হাতেমতায়ী এর জন্য
-
ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৬) – শিশুতোষ কাব্য পাখির বাসা এর জন্য
-
ফররুখ আহমদের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ:
-
সাত সাগরের মাঝি
-
সিরাজাম মুনীরা
-
নৌফেল ও হাতেম
-
মুহূর্তের কবিতা
-
সিন্দাবাদ
-
হাতেমতায়ী
-
নতুন লেখা
-
হাবেদা মরুরকাহিনী
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা — ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 5 months ago