মুক্তিযুদ্ধের সময় 'বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল' কত নং সেক্টরে অবস্থিত ছিল?
A
২ নং
B
৪ নং
C
১০ নং
D
১১ নং
উত্তরের বিবরণ
মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে বিশেষভাবে ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়, যা 'বাংলাদেশ হাসপাতাল' নামে পরিচিত ছিল। এটি মূলত ২ নং সেক্টরে অবস্থিত ছিল এবং সেখান থেকে ঢাকার গেরিলাযুদ্ধের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করা হতো।
-
মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১টি সেক্টরের প্রতিটি হেডকোয়ার্টারের সঙ্গে একটি করে মেডিকেল ইউনিট যুক্ত ছিল।
-
২ নম্বর সেক্টর অন্তর্ভুক্ত ছিল বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা জেলার আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন পর্যন্ত এলাকা, ঢাকা শহর ও ফরিদপুর জেলার পূর্বাংশ।
-
২ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ভারতের আগরতলা, প্রথমে মতিনগর, পরে মেলাঘর। নেতৃত্বে ছিলেন মেজর খালেদ মোশাররফ।
-
মূল চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হত স্বতন্ত্রভাবে সম্পূর্ণ বাংলাদেশি জনবল ও অর্থায়নে, যা মুক্তিযুদ্ধের মেডিকেল যুদ্ধের আইকন হিসেবে পরিচিত।
-
হাসপাতালের নেপথ্যের প্রধান চিকিৎসকরা ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডা. এম এ মোবিন, প্রয়াত ডা. আখতার আহমেদ, ডা. নাজিমুদ্দীন আহমেদ এবং ডা. সিতারা বেগম।
-
ক্যাপ্টেন আখতার মেজর খালেদের সঙ্গে পরামর্শ করে কুমিল্লা সীমান্তের কাছে আগরতলার শ্রীমন্তপুর এলাকায় হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেন। তিনি কমান্ডিং অফিসার হলেও মূল কার্যক্রম পরিচালনা করতেন ডা. নাজিমুদ্দীন আহমেদ।
-
১৯৭১ সালের মে মাসে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও ডা. এম এ মোবিন ইংল্যান্ড থেকে এসে মেলাঘর হাসপাতালে যোগ দেন। সেপ্টেম্বর মাসে যোগ দেন ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম।
-
১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় অর্জন পর্যন্ত ডা. আখতার, ডা. নাজিম, ডা. সিতারা এবং পরামর্শক ডা. মোবিন হাসপাতালের কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন।
-
২ নম্বর সেক্টরের অধীন সাবসেক্টরগুলোতে ফার্স্ট এইডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যোদ্ধারা থাকতেন, যারা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করতেন।
0
Updated: 1 month ago
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা শহর কোন্ সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল?
Created: 1 month ago
A
২ (দুই) নম্বর
B
৩ (তিন) নম্বর
C
৪ (চার) নম্বর
D
৫ (পাঁচ) নম্বর
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সামরিক কৌশলকে কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পুরো ভূখণ্ডকে ১১টি সেক্টর বা রণাঙ্গনে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি সেক্টরের দায়িত্বে একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এবং সুবিধাজনক যুদ্ধ পরিকল্পনার জন্য প্রতিটি সেক্টরকে আবার কয়েকটি সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছিল। সাব-সেক্টরের দায়িত্বে থাকতেন একজন করে কমান্ডার। নিচে সেক্টরভিত্তিক তথ্য তুলে ধরা হলো।
-
২ নং সেক্টর: ঢাকা, কুমিল্লা, ফরিদপুর ও নোয়াখালি জেলার অংশ নিয়ে গঠিত। বাহিনী গঠিত হয় ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল, কুমিল্লা ও নোয়াখালির ইপিআর সদস্যদের দ্বারা। সদরদপ্তর ছিল আগরতলার মেলাঘরে। এখানে ৬টি সাব-সেক্টর ছিল। কমান্ডার ছিলেন প্রথমে মেজর খালেদ মোশাররফ এবং পরে মেজর এ.টি.এম হায়দার।
-
১ নং সেক্টর: ফেনী নদী থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও ফেনী পর্যন্ত বিস্তৃত। এপ্রিল–জুন পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান এবং জুন–ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর রফিকুল ইসলাম। এই সেক্টর ৫টি সাব-সেক্টরে বিভক্ত ছিল।
-
৩ নং সেক্টর: হবিগঞ্জ, আখাউড়া–ভৈরব রেললাইন থেকে পূর্বদিকে কুমিল্লার কিছু অংশ, কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার কিছু এলাকা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এপ্রিল–সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর কেএম শফিউল্লাহ এবং সেপ্টেম্বর–ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এএনএম নুরুজ্জামান। এখানে ৭টি সাব-সেক্টর ছিল।
-
৪ নং সেক্টর: সিলেট জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত, যেখানে ৬টি সাব-সেক্টর ছিল। মে–ডিসেম্বর পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর সিআর দত্ত এবং পরে ক্যাপ্টেন এ রব।
-
৫ নং সেক্টর: বৃহত্তর ময়মনসিংহ সীমান্ত ও সিলেটের কিছু অঞ্চল নিয়ে গঠিত। কমান্ডার ছিলেন মেজর মীর শওকত আলী। এখানে ৬টি সাব-সেক্টর ছিল।
-
৬ নং সেক্টর: দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও মহকুমা এবং ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী অঞ্চল বাদে সমগ্র রংপুর অন্তর্ভুক্ত ছিল। কমান্ডার ছিলেন উইং কমান্ডার এমকে বাশার। এখানে ৫টি সাব-সেক্টর ছিল।
-
৭ নং সেক্টর: রাজশাহী, পাবনা, সমগ্র বগুড়া, দিনাজপুরের দক্ষিণাংশ এবং রংপুরের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত। কমান্ডার ছিলেন মেজর নাজমুল হক, সুবেদার মেজর এ রব ও মেজর কাজী নুরুজ্জামান (পরে লে. কর্নেল)। এখানে ৯টি সাব-সেক্টর ছিল।
-
৮ নং সেক্টর: কুষ্টিয়া, যশোর, সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত খুলনা ও ফরিদপুরের কিছু অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এপ্রিল–আগস্ট পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং আগস্ট–ডিসেম্বর পর্যন্ত মেজর এম এ মঞ্জুর। এখানে ৭টি সাব-সেক্টর ছিল।
-
৯ নং সেক্টর: পটুয়াখালী, বরিশাল ও খুলনার কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত। ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর এম এ জলিল, তারপর মেজর জয়নাল আবেদীন। অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন মেজর এম এ মঞ্জুর। এখানে ৩টি সাব-সেক্টর ছিল।
-
১০ নং সেক্টর: সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল ও নৌ কমান্ডো অপারেশনের দায়িত্বে ছিল। এখানে কোনো নিয়মিত সাব-সেক্টর বা সেক্টর কমান্ডার ছিল না। এটি সরাসরি প্রধান সেনাপতির নিয়ন্ত্রণাধীন বিশেষ বাহিনী হিসেবে কাজ করত।
-
১১ নং সেক্টর: ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা (কিশোরগঞ্জ ছাড়া) অন্তর্ভুক্ত ছিল। এপ্রিল–জুন পর্যন্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান, পরে মেজর আবু তাহের, এবং এরপর ফ্লাইট লেফট্যান্যান্ট এম হামিদুল্লাহ খান। এখানে ৭টি সাব-সেক্টর ছিল।
0
Updated: 1 month ago
মুক্তিযুদ্ধের সময় বরিশাল কোন সেক্টরের অধীনে ছিল?
Created: 2 weeks ago
A
১নং সেক্টর
B
৬নং সেক্টর
C
৮নং সেক্টর
D
৯নং সেক্টর
উত্তর: ঘ) ৯নং সেক্টর
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দেশটি ১১টি সেক্টরে বিভক্ত ছিল, যার প্রতিটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডারের অধীনে পরিচালিত হয়। বরিশাল অঞ্চলটি মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯নং সেক্টরের অধীনে ছিল।
এই সেক্টরটি ছিল দক্ষিণাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র, যা বর্তমান বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলাসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। এর মূল দায়িত্ব ছিল শত্রু বাহিনীর নৌ-যোগাযোগ ব্যাহত করা এবং দক্ষিণাঞ্চলকে মুক্তাঞ্চলে পরিণত করা।
৯নং সেক্টরের মূল তথ্যসমূহ:
-
সেক্টর সদর দপ্তর: কালাইয়া (পরে পটুয়াখালী অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়)
-
সেক্টর কমান্ডার: মেজর জিয়াউদ্দিন (Major Ziauddin)
-
অঞ্চল: বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি ইত্যাদি এলাকা এই সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
-
যুদ্ধ কৌশল: এই অঞ্চলে মুক্তিবাহিনী নৌপথের মাধ্যমে গেরিলা আক্রমণ ও নদীপথের কৌশল ব্যবহার করেছিল। কারণ দক্ষিণাঞ্চল নদীবেষ্টিত হওয়ায় নৌ-যুদ্ধ এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
-
গুরুত্ব: বরিশাল ও তার আশেপাশের অঞ্চল ছিল শত্রু বাহিনীর জন্য অত্যন্ত কৌশলগত স্থান। মুক্তিযোদ্ধারা এই এলাকায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করে শত্রুদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
অন্যদিকে—
-
১নং সেক্টর ছিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা।
-
৬নং সেক্টর অন্তর্ভুক্ত করেছিল রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চল।
-
৮নং সেক্টর ছিল খুলনা ও যশোর অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত।
অতএব, বরিশাল অঞ্চল মুক্তিযুদ্ধের সময় ৯নং সেক্টরের অধীনে ছিল এবং সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে মুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
0
Updated: 2 weeks ago
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী যৌথ কমান্ড গঠন করে—
Created: 2 months ago
A
১ ডিসেম্বর, ১৯৭১
B
২১ নভেম্বর, ১৯৭১
C
৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১
D
২৬ মার্চ, ১৯৭১
যৌথ কমান্ড গঠন (২১ নভেম্বর ১৯৭১)
-
ঘটনা: মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী মিলে যৌথ কমান্ড গঠন করে ১৯৭১ সালের ২১শে নভেম্বর
-
উল্লেখযোগ্য বিষয়:
-
বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
-
বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের প্রথম দেশ, যে দেশ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে
-
মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই ভারত নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে
-
যৌথ কমান্ড গঠন ২১শে নভেম্বর বিশেষ গুরুত্ব বহন করে
-
-
যুদ্ধের প্রেক্ষাপট:
-
পাকিস্তান ৩রা ডিসেম্বর ভারত আক্রমণ করলে যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়
-
৬–১৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করে
-
সূত্র: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ৯ম–১০ম শ্রেণি
0
Updated: 2 months ago