বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন দিল্লীতে কর্মরত প্রবাসী বাঙালি কূটনীতিক ছিলেন -
A
হোসেন আলী
B
আবুল হাসান মাহমুদ আলী
C
আবুল মাল আব্দুল মুহিত
D
হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী
উত্তরের বিবরণ
মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালিরা বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তারা কেবল অর্থ ও সামরিক সহায়তাই প্রদান করেননি, বরং আন্তর্জাতিক স্তরে সচেতনতা সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
-
পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করলে প্রবাসী বাঙালিরা তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের সহায়তায় এগিয়ে আসেন।
-
লন্ডন, নিউইয়র্ক, এবং ওয়াশিংটনসহ বিভিন্ন শহরে বাঙালি সম্প্রদায় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন প্রতিবাদ সভা আয়োজন করেন, স্মারকলিপি প্রদান, সংসদ সদস্যদের কাছে ধর্ণা দেন, এবং মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন।
-
লন্ডনে ইউরোপের অন্যান্য প্রবাসী বাঙালিরা মিলিত হয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতেন। লন্ডনে প্রবাসী বাঙালিদের নেতৃত্ব দিতেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী।
-
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিদেশে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকরা পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।
-
উল্লেখযোগ্য কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন:
-
কোলকাতার পাকিস্তানী ডেপুটি হাই কমিশনের হোসেন আলী এবং অন্যান্য বাঙালি স্টাফ (১৮.০৪.৭১)
-
নিউইয়র্কে পাকিস্তান কনসুলেট জেনারেলের ভাইস কনসাল আবুল হাসান মাহমুদ আলী (২৬.০৪.৭১)
-
লন্ডনস্থ পাকিস্তান হাই কমিশনের দ্বিতীয় সেক্রেটারি মহিউদ্দিন আহমদ (১.০৮.৭১)
-
ওয়াশিংটনে পাকিস্তানী দূতাবাসে ইকনমিক কাউন্সেল পদে কর্মরত আবুল মাল আব্দুল মুহিত (১.০৮.৭১)
-
ইরাকে কর্মরত আবুল ফতেহ (২১.০৮.৭১)
-
দিল্লীতে কর্মরত হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী (৪.১০.৭১)
-
আর্জেন্টিনায় কর্মরত আবদুল মোমিন (১১.১০.৭১)
-
সুইজারল্যান্ডে কর্মরত ওয়ালিউর রহমান (০৩.১১.৭১)
-
-
এই সমস্ত কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে যে প্রবাসী বাঙালিরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ও বহুমাত্রিক ভূমিকা পালন করেছেন।
0
Updated: 1 month ago
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে ভেটো দেয় কোন দেশ?
Created: 1 month ago
A
যুক্তরাষ্ট্র
B
যুক্তরাজ্য
C
সোভিয়েত ইউনিয়ন
D
চীন
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের পর সর্বাধিক অবদান রাখে সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) ও তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো।
-
পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক সত্তরের নির্বাচনের পর গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নারী নির্যাতন বন্ধ করার জন্য সোভিয়েত রাষ্ট্রপ্রধান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে আহ্বান জানান।
-
তিনি ইয়াহিয়াকে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার নির্দেশ দেন।
-
সোভিয়েত পত্রপত্রিকা ও প্রচার মাধ্যম মুক্তিযুদ্ধের অগ্রগতি ও পাকিস্তানি বাহিনীর নির্যাতনের তথ্য প্রচার করে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলায় সহায়তা করে।
-
জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব সোভিয়েত ইউনিয়ন ‘ভেটো’ প্রদান করে বাতিল করে।
-
সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে কিউবা, যুগোস্লাভিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, পূর্ব জার্মানি সহ অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে সমর্থন জানায়।
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নৌ কমান্ডোদের অভিযান কী নামে পরিচিত ছিল?
Created: 1 month ago
A
অপারেশন জ্যাকপট
B
অপারেশন টাইগার
C
অপারেশন থান্ডারবোল্ট
D
অপারেশন ব্লু বার্ড
অপারেশন জ্যাকপট
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় নৌ-কমান্ডো বাহিনীর পরিচালিত প্রথম অভিযান ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’।
-
তারিখ ও সময়: ১৯৭১ সালের ১৬ই আগস্ট, প্রথম প্রহরে।
-
অভিযানের স্থান: দেশের দুইটি সমুদ্রবন্দর—চট্টগ্রাম ও মোংলা, এবং দুইটি নদী বন্দর—চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ।
-
প্রকৃতি: অপারেশনটি ছিল একটি আত্মঘাতী অভিযান।
-
কার্যক্রম: নৌ-কমান্ডোরা একযোগে আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তান বাহিনীর ২৬টি পণ্য ও সমরাস্ত্রবাহী জাহাজ এবং গানবোট ডুবিয়ে দেয়।
-
ফলাফল: অভিযানে অংশগ্রহণকারী কোনো গেরিলা শত্রুপক্ষের হাতে ধরা পড়েননি।
উল্লেখ্য:
-
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দেশের যুদ্ধাঞ্চলকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল।
-
অপারেশন জ্যাকপট পরিচালিত নৌ-কমান্ডো বাহিনী ১০নং সেক্টরের অধীনে ছিল।
-
১০নং সেক্টর মূলত সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা, নদী ও সমুদ্র বন্দরসহ বাংলাদেশের সমগ্র জলপথ নিয়ে গঠিত।
0
Updated: 1 month ago
১৯৭১ সালে ঢাকা শহরে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনার মূল দায়িত্বে কে ছিলেন?
Created: 1 month ago
A
জেনারেল ইয়াহিয়া খান
B
জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা
C
জেনারেল টিক্কা খান
D
জেনারেল রাও ফরমান আলী
অপারেশন সার্চলাইট
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনারা পূর্ব পাকিস্তানে যে গণহত্যামূলক অভিযান চালায়, সেটি পরিচিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে।
-
পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত:
-
পাকিস্তান বাহিনীর ১৪ ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা এবং ৫৭ ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খান ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এই সামরিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন।
-
১৭ মার্চ, ১৯৭১ তারিখে চিফ অব স্টাফ জেনারেল আবদুল হামিদ খানের নির্দেশে জেনারেল রাজা ঢাকা সেনানিবাসে অফিসে অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।
-
-
অভিযানে অংশগ্রহণকারী:
-
২৫ মার্চ মধ্যরাতে ৩ ব্যাটেলিয়ান পাকিস্তানি সৈন্য অভিযানে অংশগ্রহণ করে এবং ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা সংঘটিত করে।
-
-
সার্বিক তত্ত্বাবধান:
-
গভর্নর: লে. জে. টিক্কা খান
-
ঢাকা শহরের দায়িত্বে: মেজর রাও ফরমান আলী
-
ঢাকার বাইরে দায়িত্বে: মেজর খাদিম হোসেন রাজা
-
-
পটভূমি:
-
১৯৭১ সালের ১৫ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সমঝোতার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন।
-
১৬ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক চলার পরও পাকিস্তানি সেনারা মধ্যরাতে গণহত্যা চালায়।
-
0
Updated: 1 month ago