A
ময়নামতি
B
পাহাড়পুর
C
মহাস্থান গড়
D
সোনারগাঁও
উত্তরের বিবরণ
মহাস্থানগড়
বাংলাদেশের ইতিহাসে মহাস্থানগড় একটি প্রাচীনতম নগর কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছে। এটি এক সময় পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামে পরিচিত ছিল এবং দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ব বাংলার রাজধানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
এখানে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন বংশের শাসনামলের অসংখ্য নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। ১৯৬০ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে জানা যায় যে, খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতক থেকেই এই এলাকায় নগর সভ্যতার অস্তিত্ব ছিল। মহাস্থানগড়কে বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সোনারগাঁও
সোনারগাঁও ছিল বাংলার অন্যতম প্রাচীন রাজধানী। ধারণা করা হয়, ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ দিকে হিন্দু শাসকদের রাজধানী এখানে গড়ে উঠেছিল। পরে এটি মুসলিম শাসকদের পূর্ববঙ্গীয় প্রাদেশিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। ‘সোনারগাঁও’ নামটি কোথা থেকে এসেছে—তা নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে; কেউ বলেন এটি 'সুবর্ণগ্রাম' নাম থেকে উদ্ভূত, আবার অনেকে মনে করেন ঈশা খাঁর স্ত্রী ‘সোনাবিবি’র নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে। আনুমানিক ১২৮১ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম শাসনের সূচনা ঘটে এ অঞ্চলে। ১৬১০ সালে ঢাকা রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হওয়ার আগে সোনারগাঁও পূর্ববঙ্গের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল।
ময়নামতি
কুমিল্লা জেলার ময়নামতি অঞ্চলটি বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। লালমাই পাহাড়ঘেঁষা এই এলাকায় প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে বহু ধ্বংসপ্রাপ্ত বৌদ্ধ বিহার ও স্থাপনার খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে ধারণা করা হয়, এটি জয়কর্মান্তবসাক নামে একটি প্রাচীন নগরীর ধ্বংসাবশেষ। এ অঞ্চলের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বিহার হলো শালবন বিহার, যা সপ্তম শতাব্দীর শেষাংশে দেববংশের রাজা শ্রীভবদেব নির্মাণ করেন বলে ধারণা করা হয়।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার
পাহাড়পুরের সোমপুর মহাবিহার বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ প্রত্নস্থল। পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল নবম শতাব্দীতে এই বিশাল বৌদ্ধবিহারটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭৯ সালে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই প্রত্নস্থলটি আবিষ্কার করেন।
ইউনেস্কো ১৯৮৫ সালে এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আয়তনের দিক থেকে পাহাড়পুরকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধবিহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার তুলনা করা চলে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের সঙ্গে। প্রায় তিন শতাব্দী ধরে এটি বৌদ্ধদের ধর্মচর্চার একটি কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, জাতীয় তথ্য বাতায়ন এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 week ago
বাংলার প্রাচীনতম জায়গা কোনটি?
Created: 4 weeks ago
A
সোনারগাঁও
B
বিক্রমপুর
C
পুণ্ড্র
D
গোপালগঞ্জ
বাংলার প্রাচীন ইতিহাসে যেসব জনপদ সভ্যতা, সংস্কৃতি ও রাজনীতির দিক থেকে বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছে, পুণ্ড্র তার অন্যতম। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও ইতিহাস বিশ্লেষণে বোঝা যায়, পুণ্ড্র ছিল বাংলার প্রাচীনতম ও অন্যতম সমৃদ্ধ জনপদ। এই জনপদটি গঠিত হয়েছিল ‘পুণ্ড্র’ নামে একটি জাতিগোষ্ঠীর দ্বারা, যারা সমসাময়িক বঙ্গ ও অন্যান্য জাতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিল।
পুণ্ড্রদের রাজধানী ছিল ‘পুণ্ড্রনগর’, যা আজকের বগুড়া শহরের নিকটবর্তী করতোয়া নদীর তীরে অবস্থিত। পরে এই প্রাচীন নগরী ‘মহাস্থানগড়’ নামে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে স্বীকৃত।
পুণ্ড্র রাজ্যের বিস্তৃতি বর্তমান বগুড়া, রাজশাহী, রংপুর এবং দিনাজপুর অঞ্চলজুড়ে ছিল। এ জনপদের উত্তরাঞ্চল বরেন্দ্র বা বরেন্দ্রভূমি নামে পরিচিত ছিল, যার নাম এখনো রাজশাহী অঞ্চলে প্রচলিত আছে।
৫ম ও ৬ষ্ঠ শতকের দিকে পুণ্ড্র জনপদ ‘পুণ্ড্রবর্ধন’ নামে পরিচিত হতে থাকে। গুপ্ত সাম্রাজ্যের শাসনামলে পুণ্ড্রনগর ছিল তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাদেশিক রাজধানী। নগর পরিকল্পনা, প্রত্নতত্ত্ব এবং নির্মাণশৈলীতে উন্নতির ছাপ দেখা যায়, যা প্রমাণ করে পুণ্ড্র জনপদে একটি সমৃদ্ধ নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।
তথ্যসূত্র:
-
বাংলাদেশ স্টাডিজ, বিবিএস প্রোগ্রাম,
-
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (নবম-দশম শ্রেণি),
-
বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 4 weeks ago