বাংলায় মুসলমানদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা প্রচলনের জন্য কে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন?
A
সৈয়দ আমীর আলী
B
নওয়াব আবদুল লতিফ
C
নওয়াব স্যার সলিমুল্লাহ
D
স্যার সৈয়দ আহমেদ খান
উত্তরের বিবরণ
বাংলার মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগতিতে নওয়াব আবদুল লতিফের উল্লেখযোগ্য অবদান
বাংলার মুসলমান সমাজে আধুনিক ও পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার এবং জাগরণে যাঁদের ভূমিকা স্মরণীয়, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন নওয়াব আবদুল লতিফ। তিনি ১৮২৮ সালে ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন এবং কলকাতা মাদ্রাসায় ইংরেজি শিক্ষালাভের মধ্য দিয়ে তাঁর শিক্ষাজীবনের সূচনা ঘটে।
শিক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনি প্রথমে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল এবং পরবর্তীতে কলকাতা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। এরপর ১৮৪৯ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে ডিপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজ শুরু করেন।
দীর্ঘ কর্মজীবনের সফলতার ধারাবাহিকতায় তিনি ১৮৭৭ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সির ম্যাজিস্ট্রেট পদে উন্নীত হন এবং ১৮৮৪ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
সরকার তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘খান বাহাদুর’, ‘নওয়াব’, ও পরে ‘নওয়াব বাহাদুর’ উপাধিতে সম্মানিত করে। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, মুসলিম সমাজের উন্নয়নে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি ইংরেজি ও আধুনিক জ্ঞানচর্চা জরুরি।
এই উপলব্ধি থেকেই তিনি এমন কিছু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি পাশ্চাত্য শিক্ষার সুযোগও রাখা হয়।
১৮৬৩ সালে তিনি কলকাতায় গঠন করেন 'মোহামেডান লিটারারি সোসাইটি' বা ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’। এই প্রতিষ্ঠান মুসলমানদের মধ্যে আধুনিক চিন্তাধারা ও সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
উল্লেখ্য, এই সাহিত্য সমিতির প্রতিষ্ঠা ছিল বাংলার মুসলমানদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক জাগরণ এবং পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে আবদুল লতিফের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
উৎস: পৌরনীতি ও সুশাসন (এইচএসসি), বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়; বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা (নবম-দশম শ্রেণি)।

0
Updated: 1 month ago
কার নেতৃত্বে কৈবর্ত বিদ্রোহ সংঘটিত হয়?
Created: 4 weeks ago
A
রুদ্র
B
মহীপাল
C
দিব্যক
D
হর্ষ
কৈবর্ত বিদ্রোহ
-
নেতৃত্বে: দিব্যক (দিব্য)
-
অন্য নাম: বরেন্দ্র বিদ্রোহ
-
ঘটনার সময়: প্রায় ১০৭৫–১০৮০ খ্রিষ্টাব্দ
-
সময়কালীন পাল রাজা: দ্বিতীয় মহীপাল
বিদ্রোহের কারণ ও সূত্রপাত
-
দিব্য প্রথমে পালদের একজন রাজকর্মচারী বা সামন্ত ছিলেন।
-
তিনি জেলে সম্প্রদায় (কৈবর্ত) থেকে শক্তিশালী বাহিনী গঠন করেন।
-
উদ্দেশ্য: বরেন্দ্র অঞ্চলে নিজেদের স্বতন্ত্র সার্বভৌমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
ফলাফল
-
কৈবর্তরা স্বল্প সময়ের জন্য বরেন্দ্র ভূমিতে রাজত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়।
-
১০৮২ খ্রিষ্টাব্দে:
-
মহীপালের ভাই রামপাল
-
সামন্তদের সাহায্য নিয়ে
-
কৈবর্ত শাসক ভীমকে পরাজিত ও হত্যা করেন
-
বরেন্দ্র অঞ্চলে পাল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা
-
উল্লেখযোগ্য তথ্য
-
পাল শাসকদের সমসাময়িক সমতট অঞ্চলে (কুমিল্লা ও বিক্রমপুর)
-
স্বাধীনভাবে শাসনকারী রাজবংশ: খড়গ, দেব, চন্দ্র, বর্ম
-

0
Updated: 4 weeks ago
কে বাংলার সাল গণনা শুরু করেন?
Created: 1 month ago
A
লক্ষ্মণ সেন
B
ইলিয়াস শাহ্
C
বিজয় সেন
D
আকবর
সম্রাট আকবর
তৃতীয় মোগল সম্রাটের নাম ছিল আবুল ফতেহ জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবর। তাঁর বাবা হুমায়ুন মারা যাওয়ার পর ১৫৫৬ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে আকবর রাজসিংহাসনে বসেন।
আকবরের শাসনামলে মোগল সাম্রাজ্য রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তিনি ছিলেন সঙ্গীতপ্রিয় এবং সঙ্গীত ভালোবাসতেন। তাঁর দরবারে অনেক জ্ঞানী ও গুণী মানুষদের কদর করা হতো। ভারতীয়, ইরানী, তুরানী ও কাশ্মীরি গায়কদের তিনি তার দরবারে স্থান দিয়েছিলেন।
বিখ্যাত ইতিহাসবিদ আবুল ফজল লিখেছেন, আকবরের দরবারে ৩৬ জন গায়ক ছিলেন। তাঁর লেখা "আকবরনামা" বইয়ের তৃতীয় খণ্ড "আইন-ই-আকবরী" নামে পরিচিত, যেখানে আকবরের শাসন ও দরবার সম্পর্কে অনেক তথ্য রয়েছে।
আকবরের সময়েই বাংলায় বারো ভুঁইয়ার বিদ্রোহ ঘটে। এছাড়া, ভারতের অন্যতম সেরা সঙ্গীতজ্ঞ তানসেন ছিলেন আকবরের দরবারের সবচেয়ে বিখ্যাত শিল্পী ও বিদ্বান।
আকবর ছিলেন সহনশীল ও সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখানো এক সমন্বয়বাদী চিন্তার মানুষ। তিনি কৃষকদের সুবিধার জন্য নতুন বাংলা সন চালু করেন, যা প্রথমে “ফসলি সন” নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে একে বঙ্গাব্দ বলা হয়। এই সন চালু হয় তাঁর সিংহাসনে বসার সময় থেকেই।
১৫৮২ সালে আকবর একটি নতুন ধর্ম প্রবর্তন করেন যার নাম ছিল দীন-ই-ইলাহি। তিনি জিজিয়া কর (অমুসলিমদের উপর ধার্য করা কর) বাতিল করেন, যা তাঁর ধর্মীয় সহনশীলতার প্রমাণ।
উৎস: ইতিহাস ১ম পত্র, এইচএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

0
Updated: 1 month ago
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কখন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে?
Created: 1 month ago
A
১৬৯০ সালে
B
১৭৬৫ সালে
C
১৭৯৩ সালে
D
১৮২৯ সালে
• ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি — ১৭৬৫ সালে — বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে
--------------------
• কোম্পানির দেওয়ানি লাভ:
- ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর প্রকৃতপক্ষে ইংরেজরাই বাংলার সত্যিকার শাসকরূপে আত্মপ্রকাশ করে।
- এ সময়ে ইংরেজ কোম্পানি মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে বাংলার রাজস্ব আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব লাভে সক্ষম হয়।
- বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাব, অযোধ্যার নবাব এবং দিল্লীর সম্রাটের পরাজয় ইংরেজ শক্তিকে এই ক্ষমতা লাভের সুযোগ করে দেয়।
- বক্সারের যুদ্ধের পর — ক্লাইভ দ্বিতীয়বার (১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ) ভারতবর্ষে এলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
- ক্লাইভ দেশ থেকে ফিরে অযোধ্যার পরাজিত নবাবের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করেন।
- তার বিনিময়ে আদায় করে নেন — কারা ও এলাহাবাদ জেলা দুটি।
- যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করেন পঞ্চাশ লক্ষ টাকা।
- ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে — কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি দান করা হয়।
- মোগল সম্রাট — দ্বিতীয় শাহ্ আলম একটি ফরমানের মাধ্যমে — বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি ইংরেজ কোম্পানির হাতে তুলে দেন।
- ইংরেজরা এর বিনিময়ে শাহ্ আলমকে বছরে ২৬ লক্ষ টাকা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
- এই টাকা নিয়মিত পাঠাবার জামিনদার হবে কোম্পানি।
- ইতিহাসে এটি — এলাহাবাদ চুক্তি নামে পরিচিত।
- ১৭৬৫ সালের ১২ই অগাস্ট এলাহাবাদ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উল্লেখ্য,
- ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে জয়ী হয়ে 'ব্রিটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি' বাংলা তথা ভারতবর্ষে তাদের কর্তৃত্বের ভিত্তি রচনা করেন।
- ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে বাংলা, বিহার, অযোধ্যা ও দিল্লির সম্রাটের সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করলে, ইংরেজদের সেই ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হয়।
উৎস: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, SSC প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়; বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা : নবম-দশম শ্রেণী।

0
Updated: 1 month ago