ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কখন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে?
A
১৬৯০ সালে
B
১৭৬৫ সালে
C
১৭৯৩ সালে
D
১৮২৯ সালে
উত্তরের বিবরণ
• ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি — ১৭৬৫ সালে — বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে
--------------------
• কোম্পানির দেওয়ানি লাভ:
- ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর প্রকৃতপক্ষে ইংরেজরাই বাংলার সত্যিকার শাসকরূপে আত্মপ্রকাশ করে।
- এ সময়ে ইংরেজ কোম্পানি মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে বাংলার রাজস্ব আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব লাভে সক্ষম হয়।
- বক্সারের যুদ্ধে বাংলার নবাব, অযোধ্যার নবাব এবং দিল্লীর সম্রাটের পরাজয় ইংরেজ শক্তিকে এই ক্ষমতা লাভের সুযোগ করে দেয়।
- বক্সারের যুদ্ধের পর — ক্লাইভ দ্বিতীয়বার (১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ) ভারতবর্ষে এলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
- ক্লাইভ দেশ থেকে ফিরে অযোধ্যার পরাজিত নবাবের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করেন।
- তার বিনিময়ে আদায় করে নেন — কারা ও এলাহাবাদ জেলা দুটি।
- যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করেন পঞ্চাশ লক্ষ টাকা।
- ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দে — কোম্পানিকে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানি দান করা হয়।
- মোগল সম্রাট — দ্বিতীয় শাহ্ আলম একটি ফরমানের মাধ্যমে — বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি ইংরেজ কোম্পানির হাতে তুলে দেন।
- ইংরেজরা এর বিনিময়ে শাহ্ আলমকে বছরে ২৬ লক্ষ টাকা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
- এই টাকা নিয়মিত পাঠাবার জামিনদার হবে কোম্পানি।
- ইতিহাসে এটি — এলাহাবাদ চুক্তি নামে পরিচিত।
- ১৭৬৫ সালের ১২ই অগাস্ট এলাহাবাদ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উল্লেখ্য,
- ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে জয়ী হয়ে 'ব্রিটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি' বাংলা তথা ভারতবর্ষে তাদের কর্তৃত্বের ভিত্তি রচনা করেন।
- ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে বাংলা, বিহার, অযোধ্যা ও দিল্লির সম্রাটের সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করলে, ইংরেজদের সেই ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হয়।
উৎস: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, SSC প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়; বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা : নবম-দশম শ্রেণী।

0
Updated: 1 month ago
কার নেতৃত্বে কৈবর্ত বিদ্রোহ সংঘটিত হয়?
Created: 4 weeks ago
A
রুদ্র
B
মহীপাল
C
দিব্যক
D
হর্ষ
কৈবর্ত বিদ্রোহ
-
নেতৃত্বে: দিব্যক (দিব্য)
-
অন্য নাম: বরেন্দ্র বিদ্রোহ
-
ঘটনার সময়: প্রায় ১০৭৫–১০৮০ খ্রিষ্টাব্দ
-
সময়কালীন পাল রাজা: দ্বিতীয় মহীপাল
বিদ্রোহের কারণ ও সূত্রপাত
-
দিব্য প্রথমে পালদের একজন রাজকর্মচারী বা সামন্ত ছিলেন।
-
তিনি জেলে সম্প্রদায় (কৈবর্ত) থেকে শক্তিশালী বাহিনী গঠন করেন।
-
উদ্দেশ্য: বরেন্দ্র অঞ্চলে নিজেদের স্বতন্ত্র সার্বভৌমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
ফলাফল
-
কৈবর্তরা স্বল্প সময়ের জন্য বরেন্দ্র ভূমিতে রাজত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়।
-
১০৮২ খ্রিষ্টাব্দে:
-
মহীপালের ভাই রামপাল
-
সামন্তদের সাহায্য নিয়ে
-
কৈবর্ত শাসক ভীমকে পরাজিত ও হত্যা করেন
-
বরেন্দ্র অঞ্চলে পাল শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা
-
উল্লেখযোগ্য তথ্য
-
পাল শাসকদের সমসাময়িক সমতট অঞ্চলে (কুমিল্লা ও বিক্রমপুর)
-
স্বাধীনভাবে শাসনকারী রাজবংশ: খড়গ, দেব, চন্দ্র, বর্ম
-

0
Updated: 4 weeks ago
ব্রিটিশ বণিকদের বিরুদ্ধে একজন চাকমা জুমিয়া নেতা বিদ্রোহের পতাকা উড়িয়েছিলেন, তার নাম-
Created: 2 months ago
A
রাজা ত্রিদিব রায়
B
রাজা ত্রিভুবন চাকমা
C
জুম্মা খান
D
জান বখশ খাঁ
১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্রিটিশ শাসনের প্রভাব বিস্তারের বিরুদ্ধে চাকমা জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ইংরেজরা ১৭৭২-১৭৭৩ সালের মধ্যে চাকমা রাজ্য থেকে মুদ্রার মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করে এবং সেখানে মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতি চালুর নানা পদক্ষেপ নেয়।
এর ফলে চাকমাদের দীর্ঘদিনের সমাজব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও রাজনৈতিক কাঠামো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় এবং অঞ্চলজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
চাকমা জনগণ ধীরে ধীরে ইংরেজ শাসনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে। অসন্তোষের পারদ চরমে পৌঁছায় ১৭৮২ সালে, যখন চাকমা নেতা জান বকস খাঁ (বা জুয়ান বক্স খাঁ/জোয়ান বখশ খাঁ) ব্রিটিশদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে মহাপ্রু এলাকায় একটি দুর্গ নির্মাণ করেন। এই ঘটনাই ছিল কোম্পানির সঙ্গে চাকমা রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের সূত্রপাত।
এই প্রতিরোধ যুদ্ধ প্রায় পাঁচ বছর স্থায়ী হয় (১৭৮২–১৭৮৭)। যদিও কোম্পানি পূর্বে আরও তিনবার (১৭৭০, ১৭৮০ এবং ১৭৮২ সালে) চাকমা রাজ্যের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়, ১৭৮৫ সালের যুদ্ধ ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজা জান বকস খাঁ এবং শের দৌলত খাঁর পুত্র এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন।
চাকমা রাজ্যের বিরুদ্ধে পরিচালিত চারটি যুদ্ধে কোম্পানি কোনো উল্লেখযোগ্য সুবিধা অর্জন করতে পারেনি। উপরন্তু, চাকমা রাজ্যে কোম্পানির আরোপিত বাণিজ্য অবরোধের কারণে দুই পক্ষই চাপে পড়ে এবং ১৭৮৫ সালে একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছায়।
চুক্তির মূল শর্তাবলি ছিল:
-
চাকমা রাজা কোম্পানির সার্বভৌম আধিপত্য স্বীকার করেন।
-
বছরে ৫০০ মণ তুলা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন চাকমারা।
-
কোম্পানি চাকমা রাজ্যের আঞ্চলিক শাসন ও নেতৃত্ব স্বীকার করে।
-
বাণিজ্যিক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
এই প্রতিরোধ ইতিহাসে প্রমাণ করে, ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে উপমহাদেশের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীও দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল এবং নিজেদের সংস্কৃতি ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় আপসহীন ছিল।
তথ্যসূত্র:
বাংলাপিডিয়া (চাকমা), কালের কণ্ঠ কলাম, জুমজার্নাল, Government of Bangladesh - District Gazetteer of Chittagong Hill Tracts, এবং James Minahan’s Encyclopedia of the Stateless Nations: Ethnic and National Groups Around the World।

0
Updated: 2 months ago
কোন মুঘল সুবাদার চট্টগ্রাম দখল করে এর নাম রাখেন ইসলামাবাদ?
Created: 1 month ago
A
ইসলাম খান
B
রাজা মানসিংহ
C
মীর জুমলা
D
শায়েস্তা খান
• বাংলার মুঘল সুবাদার — শায়েস্তা খান চট্টগ্রাম দখল করে এর নাম রাখেন — ইসলামাবাদ।
• শায়েস্তা খান:
- শায়েস্তা খান ছিলেন বাংলার মুঘল সুবাদার।
- ১৬৭৮-৭৯ খ্রিস্টাব্দে এক বছরের সামান্য বেশি সময়ের বিরতিসহ দীর্ঘ ২৪ বছর তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
- তিনি ছিলেন মুঘল সম্রাট — আওরঙ্গজেবের মামা।
- তিনি যখন ঢাকায় পৌঁছেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৬৩ বছর।
- ১৬৬৩ খ্রিস্টাব্দে মীরজুমলার মৃত্যুর পর শায়েস্তা খান বাংলার সুবাদার নিযুক্ত হন।
- প্রধানত চট্টগ্রাম জয়ের জন্যই বাংলায় শায়েস্তা খানের বিশাল খ্যাতি।
- ১৬৬৬ সালে বাংলার মোঘল শাসক শায়েস্তা খান তাঁর পুত্র বুজুর্গ — ওমেদখানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিজয় সম্পন্ন করেন।
- তিনি চট্টগ্রাম অঞ্চলের নাম রাখেন — ইসলামাবাদ।
উৎস:
i) বাংলাপিডিয়া।
ii) জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
iii) ইতিহাস - চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ccc.gov.bd.

0
Updated: 1 month ago