বাংলা ভাষায় ধাতুর সংমিশ্রণে যে সমাস গঠিত হয় তার মধ্যে কর্মধারয় সমাস গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষভাবে, মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস এক ধরনের কর্মধারয় সমাস, যেখানে সমাসের মধ্যপদ লোপিত হয়।

• মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস
  ব্যাসবাক্যের মধ্যপদের লোপ হয়ে যে সমাস গঠিত হয় তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস বলে।
  উদাহরণ:

  • সিংহ চিহ্নিত আসন → সিংহাসন

  • সাহিত্য বিষয়ক সভা → সাহিত্যসভা

  • স্মৃতি রক্ষার্থে সৌধ → স্মৃতিসৌধ

  • নীতি বিষয়ক শাস্ত্র → নীতিশাস্ত্র

• কর্মধারয় সমাস
  যেখানে বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন পদের সাথে বিশেষ্য বা বিশেষ্যভাবাপন্ন পদের সমাস ঘটে এবং পরপদের অর্থ প্রধান রূপে প্রতীয়মান হয়, তাকে কর্মধারয় সমাস বলা হয়।

• কর্মধারয় সমাসের প্রকারভেদ
  কর্মধারয় সমাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়—

  • মধ্যপদলোপী

  • উপমান

  • উপমিত

  • রূপক কর্মধারয় সমাস

উৎস: 

• মনের ভাব প্রকাশের প্রধান বাহন - 'ভাষা'। 

• 'ভাষার সংজ্ঞা: 

- গলনালি, মুখবিবর, কণ্ঠ, জিভ, তালু, দাঁত, নাক প্রভৃতি প্রত্যঙ্গ দিয়ে মানুষ নানা রকম ধ্বনি তৈরি করে।

- এক বা একাধিক ধ্বনি দিয়ে তৈরি হয় শব্দ। শব্দের গুচ্ছ দিয়ে বাক্য গঠিত হয়।

- বাক্য দিয়ে মানুষ মনের ভাব আদান-প্রদান করে।

- মনের ভাব প্রকাশক এসব বাক্যের সমষ্টিকে বলে ভাষা।

‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’ বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ রচনা, যা মানব জীবনের নান্দনিক ও সামাজিক দিকগুলোকে উন্মোচন করেছে। এটি লিখেছেন সেলিনা হোসেন, যিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রভাবশালী নারী লেখক। তাঁর রচনাগুলোতে নারী জীবনের অভিজ্ঞতা, সামাজিক বাস্তবতা এবং মানসিক জটিলতা সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। এই রচনায় সেলিনা হোসেন নারীর অভ্যন্তরীণ সংগ্রাম এবং সমাজের সঙ্গে তার সম্পর্ক কেন্দ্র করে এক সংবেদনশীল চিত্র উপস্থাপন করেছেন।

রচনার মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

• নারীর জীবন ও মানসিকতা: ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’-তে নারী চরিত্রের অভ্যন্তরীণ অনুভূতি ও জীবনের বাস্তবতা প্রাধান্য পেয়েছে। লেখক দেখিয়েছেন কিভাবে নারী সমাজের সীমাবদ্ধতা ও সামাজিক প্রথার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হয়।

• সামাজিক চিত্র: রচনায় সময়কাল ও পরিবেশের প্রভাব স্পষ্ট। এটি শুধু ব্যক্তিগত গল্প নয়, বরং সামাজিক প্রেক্ষাপটকেও তুলে ধরে, যা পাঠককে সমাজ এবং তার পরিবর্তনশীল মানসিকতার দিকে ভাবতে বাধ্য করে।

• সেলিনা হোসেনের সাহিত্যিক স্বকীয়তা: তাঁর ভাষা সহজ, সাবলীল ও প্রাঞ্জল। সংলাপ ও বর্ণনায় সরলতা থাকলেও গভীরতা প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি চরিত্র জীবন্ত মনে হয় এবং পাঠকের সঙ্গে সহজে সংযোগ স্থাপন করে।

• আধুনিক নারীর চেতনা: রচনায় নারী স্বাধীনতা, আত্মপরিচয় ও ব্যক্তিগত মর্যাদার প্রশ্নগুলো স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। এটি পাঠককে নারীর মানসিক ও সামাজিক অবস্থার গভীর ধারণা দেয়।

• সংবেদনশীলতা ও মানবিক মূল্যবোধ: গল্পের মধ্য দিয়ে মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিক দ্বন্দ্ব এবং অনুভূতির জটিলতা ফুটে ওঠে। এটি পাঠককে শুধু গল্পের সঙ্গে যুক্ত রাখে না, বরং জীবন ও সমাজের বিশ্লেষণে উদ্বুদ্ধ করে।

সুতরাং, ‘গায়ত্রী সন্ধ্যা’-র সঠিক রচয়িতা হলো সেলিনা হোসেন, এবং রচনার প্রধান আকর্ষণ হলো নারীর জীবনের মানসিক ও সামাজিক দিকগুলোর সূক্ষ্ম চিত্রায়ন।